ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

বিপ্লবের একক দাবিদার মানবো না: জয়নুল আবদিন ফারুক

প্রকাশিত: ১৩:১৫, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

বিপ্লবের একক দাবিদার মানবো না: জয়নুল আবদিন ফারুক

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, কোনো একটি দল যদি সাম্প্রতিক গণআন্দোলনের একক দাবিদার হতে চায়, তা তিনি মেনে নেবেন না।

সম্প্রতি একটি টেলিভিশন টকশোতে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেন, “নির্বাচনের জন্য লড়াই করতে করতে আন্দোলনে গিয়ে সকল রাজনৈতিক দল যে বিপ্লব ঘটালো, সে বিপ্লবের যদি একক কেউ দাবিদার হয়ে থাকে, সেটা আমি মানবো না।”

বর্তমান দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “আট মাস অতিবাহিত করলেন, নয় মাসে পদার্পণ করলেন। নয় মাসে এখন বলছেন যে সরকার আরো পাঁচ বছর থাকতে চায়।”

একই আলোচনায় তিনি সহযোদ্ধা উপদেষ্টা জাহাঙ্গীরকে সম্মান জানিয়ে বলেন, “আমি মন্তব্য না করে শুধু এটুকু বলতে চাই, শত মানুষ রক্ত দিয়েছে, হাজারো মানুষ আন্দোলন করেছে, হাত পা হারিয়েছে, সংসার হারিয়েছে, বাবা-মা হারিয়েছে।” তিনি বলেন, “১৬ বছর আমরা এই ভাইসহ আন্দোলনে ছিলাম। অসংখ্য নেতাকর্মীর রক্তের বিনিময়ে আজকের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেয়েছি।”

তিনি বলেন, “২০১৪ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা রাজপথে থেকেই বলেছি, এমন একটি নির্বাচন চাই, যেটা হাসিনার অধীনে হলেও হবে দিনের ভোট দিনে এবং সুষ্ঠু ও সকলের অংশগ্রহণমূলক।”


ছাত্র বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ছাত্র বৈষম্য কোটা বিরোধী আন্দোলনে গিয়ে সকল রাজনৈতিক দলের সহযোগিতায় যে বিপ্লব ঘটেছে, তার একক দাবিদার কেউ হতে পারে না।”

স্বাধীনতা সংগ্রাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি দেশ স্বাধীন করেছি, আমাকে কথা বলতে দেয় নাই বলে। আমি দেশ স্বাধীন করেছি আমার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।” তিনি বলেন, “৫৪ বছর পরও যদি কেউ বলেন আমরা অধিকার পেয়েছি, তবে অনেকটা পাইনি।”

এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “এই লড়াইয়ের ফল যদি হয়, ড. ইউনূস পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন, তাহলে এটা আমি গ্রহণ করি না। এবং এটা রাজনৈতিক অঙ্গনে গ্রহণযোগ্য কথাও না।”

তিনি মন্তব্য করেন, “আপনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকার, বিএনপির আন্দোলনের সরকার, ভাইয়ের আন্দোলনের সরকার — সব মানি। কিন্তু আওয়ামী লীগের মতো বইলেন না, ‘বিচার মানি, তালগাছ আমার’।”

তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “যারা এখন বলে ৫৪ বছরে কিছুই করতে পারিনি, তারা কি কখনো বেগম খালেদা জিয়াকে পুলিশ পিটাতে দেখেছে? তারা কি কখনো ইলিয়াস আলী, মির্জা ফখরুল বা খোকন মুগ্ধদের নিখোঁজ হওয়া দেখেছে?”

তিনি বলেন, “রোজার মাসে শান্তিতে কাটাতে দিয়েছিলেন, এজন্য আমরা প্রশংসা করেছি। কিন্তু পেঁয়াজের দাম কমালেই তো সব উন্নতি হয় না। ১১টা সাবজেক্টে পরীক্ষা দিয়ে যদি একটাতে ফেল করি, সেটাই ফেল।”

তিনি বলেন, “ড. ইউনূস একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। কিন্তু উপদেষ্টারা যদি বলেন তিনি পাঁচ বছর থাকবেন, তা হলে বাংলাদেশের মানুষ প্রশ্ন তুলবেই।”

ব্যক্তিগত আবেগ উজাড় করে দিয়ে তিনি বলেন, “আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যক্তি। শহীদ জিয়ার আদর্শ, বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্ব এবং তারেক রহমানের দূর থেকে সাহসী ভূমিকা আমাকে রাজনীতিতে এনেছে।”

শেষে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যদি আবার কেউ মইন আহমেদের মতো শুরু করতে চায়, তবে বাংলার দামাল ছেলেরা এখনো জীবিত আছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এখনো বেঁচে আছে।”

 


সূত্র:https://tinyurl.com/33ud49rb

আফরোজা

×