
বাকেরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতার অবৈধ সম্পত্তি, মৎস্য খামার, হাঁস মুরগির ফার্ম, গরুর খামার। ছবি: জনকণ্ঠ
অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়া আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলে আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠায়। এরপর জামিনে মুক্তি পেলে আবারো আত্মগোপনে চলে যান তিনি। আত্মগোপনে থাকলেও লোকমান হোসেন ডাকুয়ার ব্যক্তিগত বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মালামাল অবৈধ সম্পত্তি রক্ষা করে সুবিধা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে বিএনপি'র কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন ডাকুয়া বাকেরগঞ্জ পৌরসভার একটানা তিনবারের মেয়র থাকায় আওয়ামী লীগের ক্ষমতার অপব্যবহার করে নামে বেনামে ভূমিহীনদের কার্ডের জমি ও ভরপাশা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মুসলিম পাড়া তুলাতলি নদীর চর দখল করে মৎস্য খামার, গরুর ছাগলের ফার্ম, হাঁসের খামার গড়ে তুলেন। যেখানে প্রায় দুই কোটি টাকার সম্পদ ছিল। ৫ আগস্টের পর উপজেলা যুবদলের সদস্য মামুন হাওলাদার পলাশ, ও ভরপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য মোঃ খোকন হাওলাদার আওয়ামী লীগ নেতার ওই অবৈধ সম্পত্তি রক্ষায় দায়িত্ব নেয়। সাবেক পৌর মেয়রের ওই অবৈধ সম্পত্তি এখন বিএনপি'র এই দুই নেতার তত্ত্বাবধানে। আওয়ামী লীগ নেতার এই সম্পত্তি বিএনপি নেতাদের তত্ত্বাবধানে থাকায় এলাকায় সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি'র এই দুই নেতার বিতর্কিত কর্মকান্ডে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা দাবি জানিয়েছেন বিএনপি'র এই দুই নেতাকে সাংগঠনিক পদ থেকে অপসারণের।
স্থানীয়রা বলেন, আওয়ামী লীগ নেতার মৎস্য ঘের গরুর ফার্ম হাঁসের খামার রক্ষা ও ভোগে যুবদল নেতা মামুন হাওলাদার পলাশ ও মোঃ খোকন হাওলাদারকে দেখা যায়। বিএনপি'র নেতাদের এমন কাজ করা উচিত নয়। এতে বিএনপির ইমেজ নষ্ট হচ্ছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, উপজেলা যুবদলের সদস্য মামুন হাওলাদার পলাশ দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করে আসছিলেন। ৫ই আগস্টের অভ্যুত্থানে পরিবর্তনের পর বাকেরগঞ্জে এসে নিজ ইউনিয়নে শুরু করেছেন নানান রকম বিতর্কিত কর্মকাণ্ড।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে মামুন হাওলাদার পলাশকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, সাবেক পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়ার থেকে তিনি মৎস্য খামার ও গরু ছাগলের ফার্ম, হাঁসের খামারের ওই সম্পত্তি লিজ নিয়েছেন। লিজ নেয়ার বিষয় বৈধ কোন কাগজপত্র রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা লোকমান হোসেন ডাকুয়ার সাথে কথা বলতে বলেন।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোঃ এনায়েত হোসেন খান বিপু জনকণ্ঠকে বলেন, দলের হাই কমান্ট থেকে নির্দেশ রয়েছে আওয়ামী লীগের কোন নেতার সম্পদ রক্ষণ বিক্ষণে বিএনপি'র কোন নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। যুবদল নেতা মামুন হাওলাদার পলাশ ও মোঃ খোকন হাওলাদারের বিষয়ে জেলা ও কেন্দ্রের নেতাদের সাথে আলোচনা করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়াকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আসিফ