ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১

ডিবির জালে ধরা পড়ল বগুড়ার পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা পিতা-পুত্র

মাহফুজ মন্ডল, বগুড়া

প্রকাশিত: ১৫:৪৮, ১২ এপ্রিল ২০২৫

ডিবির জালে ধরা পড়ল বগুড়ার পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা পিতা-পুত্র

ছবি: হেলাল উদ্দিন ও সুরুজ উদ্দিন (বাম দিক থেকে)

রাজধানীর আদাবর থানা এলাকায় আত্মগোপনে থাকা বগুড়ার কাহালু উপজেলার আলোচিত দুই আওয়ামী লীগ নেতা পিতা মোঃ হেলাল উদ্দিন কবিরাজ (৬০) ও পুত্র মোঃ সুরুজ উদ্দিন কবিরাজকে (৪০) বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার করেছে বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

গ্রেফতারকৃত হেলাল উদ্দিন কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং কাহালু পৌরসভার দুইবারের সাবেক মেয়র। তার পুত্র সুরুজ উদ্দিন কবিরাজ একই উপজেলার আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং দুই মেয়াদে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে সারা দেশের মতো বগুড়াতেও যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, তখন আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাব খাটিয়ে দমন-পীড়নের অভিযোগ ওঠে এই পিতা-পুত্র জুটির বিরুদ্ধে।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই আন্দোলনকে তারা ‘সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়ে, বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও তদন্তকারী সংস্থার তথ্যমতে, কাহালু ও আশেপাশের এলাকায় সংঘটিত বেশ কিছু সহিংস ঘটনার পেছনে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তারা।

হেলাল উদ্দিন কবিরাজের নামে রয়েছে ৫টি মামলা, যার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ, সরকারি কাজে বাধা ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগ।

সুরুজ উদ্দিন কবিরাজের নামে রয়েছে ৪টি মামলা, যার মধ্যে রয়েছে দাঙ্গা সৃষ্টি, ভাঙচুর, এবং প্রশাসনকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ।

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর তারা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। দীর্ঘদিন ঢাকায় পালিয়ে থাকার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ডিবির একটি বিশেষ দল রাজধানীর আদাবর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।

বগুড়ার আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা পিতা-পুত্রকে গ্রেফতার বিষয়ে বগুড়া জেলা পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ‘এই পিতা-পুত্র দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে জনগণের অধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে রক্তাক্ত করতে চেয়েছিল। তাদের গ্রেফতারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

গ্রেফতারকৃতদের বর্তমানে বগুড়ায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে এবং শিগগিরই তাদের আদালতে তোলা হবে। তদন্তের স্বার্থে আরও কিছু তথ্য আপাতত প্রকাশ করা হয়নি।

মাহফুজ মন্ডল/রাকিব

×