
জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি) এর যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদিন শিশির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে বিএনপির জনপ্রিয়তা দাবি নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “বিএনপি যদি এতটাই জনপ্রিয় হয়, তবে ছাত্র সংসদ, স্থানীয় সরকার ও গণপরিষদ নির্বাচনের নাম শুনলেই ভয়ে ক্ষেপছে কেন?”
জয়নাল শিশির বলেন, বিএনপি প্রতিদিন নিজেদের ‘দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক শক্তি’ বলে প্রচার করে। অথচ ছাত্র সংসদ, স্থানীয় সরকার কিংবা গণপরিষদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠলেই তারা সরে দাঁড়ায়। তাঁর প্রশ্ন—জনপ্রিয়তা থাকলে তা তো সব স্তরের নির্বাচনে প্রতিফলিত হওয়ার কথা। তাহলে এতো ভয় কেন?
তিনি অভিযোগ করেন, “বিএনপি জানে, এসব নির্বাচনে তারা মুখ থুবড়ে পড়বে। কারণ এদের জনপ্রিয়তা গায়েবি—ভোটের মাঠে তা প্রমাণ করতে পারবে না।”
তিনি আরও বলেন, “যে ভোটাররা জাতীয় সংসদে বিএনপিকে ভোট দেবে বলে ভাবছে, তারা কি ছাত্র সংসদ বা স্থানীয় সরকারে বিএনপিকে ভোট দেবে না? যদি সত্যিই আত্মবিশ্বাস থাকে, তাহলে বারবার এই নির্বাচনগুলো থেকে পিছু হটা কেন?”
জয়নাল শিশির বলেন, জুলাই বিপ্লবের রক্তে রচিত ছাত্রদের আন্দোলনের প্রথম দাবিই ছিল ছাত্র সংসদ নির্বাচন। অথচ সেই শহীদের রক্ত শুকানোর আগেই বিএনপি সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ‘আগে সংসদ নির্বাচন দরকার’।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসেই বিএনপি ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে দেয়। ২০০১ সালে আবার ক্ষমতায় গিয়েও তা চালু করেনি। কেন? কোন গণতান্ত্রিক যুক্তিতে তরুণ নেতৃত্বের প্ল্যাটফর্ম ধ্বংস করা যায়?”
এনসিপি নেতা মনে করেন, বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ না নিয়ে গণতান্ত্রিক ধারা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে। এর পেছনে কারণ হতে পারে—দলীয় দুর্নীতি, দখলবাজি, চাঁদাবাজি জনসম্মুখে প্রকাশ পাওয়ার ভয়।
এছাড়াও, উদীয়মান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর উত্থানেও আতঙ্কিত বিএনপি। “জনগণের কাছাকাছি পৌঁছে গেলে বিএনপির দখলদারিত্বের জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়বে—এটাই হয়তো তাদের ভয়,”—বলেন শিশির।
ফেসবুক পোস্টে জয়নাল শিশির বিএনপিকে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বলেন, “আপনারা যদি জনগণের শক্তি হয়ে উঠতে চান, তবে জাতীয় সংসদ ও গণপরিষদ নির্বাচন একসাথে করার প্রস্তাবে এগিয়ে আসুন।”
তিনি আরও বলেন, “দেশে গণহত্যা ও শিশু হত্যায় লিপ্ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রকৃত রাজনৈতিক সংস্কারের পথে সাহসিকতার সঙ্গে হাঁটুন।”
তিনি বলেন, “৫৪ বছর পর রাষ্ট্র সংস্কারের এমন বিরল সুযোগ এসেছে। তরুণ প্রজন্ম ও ছাত্র সমাজ আর প্রতারণার শিকার হতে চায় না—তারা চায় টেকসই, বাস্তব পরিবর্তন। এখন বিএনপির সিদ্ধান্তই বলে দেবে—তারা ইতিহাসের সঠিক পথে হাঁটবে, নাকি আবারও জনগণের প্রত্যাশাকে উপেক্ষা করবে।”
আফরোজা