
ছবি: সংগৃহীত।
“৫৪ বছরে কী করেছেন?”—এ ধরনের প্রশ্নকে ‘অত্যন্ত ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক আব্দুন নূর তুষার। সম্প্রতি একটি টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে আলোচনার একপর্যায়ে ‘অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা দেশের ভাল চান, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা চান না’—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা যারা বলেন, তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বলেন। আসলে রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক—উভয় ধরণের মানুষই দেশের কল্যাণ চাইতে পারেন। তবে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কেউ সম্পূর্ণভাবে অরাজনৈতিক হতে পারেন না।”
তিনি আরও বলেন, “যদি রাজনৈতিক ব্যক্তিরা দেশের মঙ্গল না চান, তাহলে জনগণের হাতে তাদের প্রত্যাখ্যান করার অধিকার রয়েছে। কারণ তারা তো ভোট নিয়ে এসেছেন।”
“৫৪ বছরে কী করেছেন—এ প্রশ্নটি অত্যন্ত ঔদ্ধত্যপূর্ণ। বরং বলা উচিত, রাজনৈতিক ব্যক্তিরাই কিছু না কিছু করেছেন বলেই নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচারের পতন ঘটেছে। পরে যখন আবার স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চেয়েছে, তখনই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা এসেছিল,” বলেন তুষার।
তিনি উল্লেখ করেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে তিন মাসের জন্য হলেও এই দেশের সুশীল সমাজ রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু যখন আবার সেই ব্যবস্থাটি বাতিল করে স্বৈরাচারী প্রবণতা ফিরে আনার চেষ্টা হয়, তখন প্রথম প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোই।”
আব্দুন নূর তুষার প্রশ্ন রাখেন, “৫৪ বছরে কতজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি গুম হয়েছেন? কতজন জেল খেটেছেন? যদি রাজনীতিবিদরা এসব প্রশ্ন করেন, সুশীল সমাজের সবাই কি এর জবাব দিতে পারবেন?”
তিনি বলেন, “সুশীল সমাজ ও রাজনীতিবিদদের মধ্যে পার্থক্য টেনে যে রাজনৈতিক প্রচারণা চালানো হয়, তা বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ার অংশ। সুশীল সমাজ সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও তারা সরাসরি রাজনীতিতে অংশ নেন না। রাজনীতিবিদরা সরাসরি মাঠে কাজ করেন এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনা করেই মত ও পথ নির্ধারণ করেন।”
তুষার আরও বলেন, “সুশীল সমাজকে বুঝতে হবে—তারা কোনও নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ নন। একইভাবে রাজনীতিবিদদেরও তাদের অবদান স্মরণে রাখা উচিত। পারস্পরিক সম্মান এবং সহযোগিতার ভিত্তিতেই গণতন্ত্র টিকে থাকে।”
সায়মা ইসলাম