
ছবি: সংগৃহীত
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার রাজার বাজার-বাসুল্লা রাস্তার খোয়াই নদীর ওপর নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের দিয়ে ভারী বালুবাহী ট্রাক বন্ধের দাবীতে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় জনতা। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে রাজার বাজার পয়েন্টে এসে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে করে সড়কে ঘন্টাব্যাপী উভয় পাশে যানবাহন আটকা পড়ে।
উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সদস্য মোঃ অলিউর রহমানের পরিচালনায় মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার।
বক্তব্যে তিনি বলেন- অবৈধ বালু উত্তোলন ও ব্রিজে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ না করলে ডিসি অফিস ঘেরাও করা হবে। খুনি হাসিনার সহযোগীরা মিলে বালু মহালের নামে অবৈধভাবে বালু তুলতে তুলতে সেই ব্রিজটি এখন ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
তিনি বলেন- খুনি হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর চুনারুঘাট উপজেলার সন্তান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান যখন দায়িত্ব পান আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম, তিনি অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করবেন। কিন্তু হয়নি। অবিলম্বে চুনারুঘাটে যতগুলো অবৈধ বালু মহাল আছে সবগুলো বন্ধ করতে হবে। আগামীদিনে প্রশাসন যদি ব্যবস্থা না নেয়, এই গণজোয়ার নিয়ে জনগণের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিলাম। আলীনগর ঐক্য যুব সংঘের সভাপতি মোঃ রাজন মিয়ার সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন- আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সালাউদ্দিন বাবরু, শিক্ষক সুষেন ভট্টাচার্য, আমার দেশ পত্রিকার চুনারুঘাট প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম, সাংবাদিক বেনু সুত্রধর, নর্থইস্ট মেডিকেলের সেক্রেটারি আব্দুল আউয়াল বাবুল, রাজার বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর ইসলাম তালুকদার, ইউপি সদস্য দুলাল মিয়া, তুষার মিয়া, কাজী শাহিদুল ইসলাম রিমন, সৈয়দ রেজু আহমেদ, খন্দকার শামীমুল হক, হাজী আঃ জাহির, জাহিরুল ইসলাম মামুন, কাজী রাসেল, কাজী আঃ করিম, আরীফে রাব্বানী, রেমা চাবাগানের চা কন্যা পুস্প, বাসুল্লা বাজার কমিটির সভাপতি মো: দরবেশ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আঃ মন্নান কামাল আহম্মদ, ভরসা যুব সংঘের সভাপতি রিয়াজ মিয়া, সেক্রেটারি মেহেদী হাসান শুভ, আশরাফুল ইসলাম উজ্জ্বল, রিপন মিয়া, ফরিদ মিয়া, যুবদল নেতা শেখ সাব্বির মিয়া, শেখ রাসেল তরিকুল ইসলাম তারেক, ফয়সাল আহমেদ তুহিন প্রমুখ। পাঁচ শতাধিক লোক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনের সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন- রাজার বাজার ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের ওপর দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ভারী ওজনের বালুর গাড়ী চলাচল করছে। ফলে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। কর্তৃপক্ষ ৩ টনের বেশি ভারী ওজনের গাড়ী চলাচলে নিষেধ ও ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ব্রিজের মুখে সাইনবোর্ড লাগানোর পরও চলে ভারী বালুবাহী যানবাহন। শুধু তাই নয়, চলাচল করছে ডাম্প ট্রাকও। এমনকি ব্রিজের পাশ থেকে বালু উত্তোলন করায় নদীর গভীরতা বাড়ছে।
ব্রিজের পশ্চিমদিকে মাটি সরে গেছে। এতে করে ব্রিজটি যে কোন সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ব্রিজ ভেঙে গেলে- আলিনগর ও বাসুল্লাসহ পূর্বাঞ্চলের অর্ধক্ষাধিক মানুষ বেকায়দায় পরবেন। এ কারণে স্থানীয়রা ব্রিজ রক্ষায় বালুবাহী ট্রাক বন্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। সেই সঙ্গে ব্রিজের ভাঙা অংশটুকু সংস্কারের দাবি জানান। অন্যথায় তারা বৃহৎ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
আসিফ