
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অবিচল এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যেকোনো ধরনের বাঁধা সৃষ্টি করলে বিএনপি তা মানবে না, জনগণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, নির্বাচনী হাওয়া বইছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর মেহেদীবাগের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন-গণতন্ত্রের পথে বাধা বিএনপি মেনে নেবে না
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন,"কোন শক্তি বাংলাদেশে যদি এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার যে ট্রানজিশনে কেউ বাধা সৃষ্টি করে, সেটা বিএনপি গ্রহণ করবে না। বিএনপির সংগ্রাম হচ্ছে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ, সরকার। যারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে, যারা জনগণের চাহিদা, আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা, ভাবনার পরিপূরণ করে-এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিএনপির কোনো রাজনীতি নাই।"
ক্ষমতা দখলের রাজনীতি মানবে না বিএনপি উল্লেখ করে তিনি বলেন-"শেখ হাসিনা একভাবে ক্ষমতা দখল করেছে, আর থেকেছে। আর কোন শক্তি যদি অন্য প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় যাওয়ার এবং দখল করার চেষ্টা করে, বিএনপি সেটা গ্রহণ করবে না। বাংলাদেশের মানুষ সেটা গ্রহণ করবে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ সেটা গ্রহণ করবে না।"
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ রুদ্ধ করা যাবে না,নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন-
"সুতরাং সবার বোঝা উচিত। আজকের যে আকাঙ্ক্ষা, এই যে উচ্ছ্বাস জনগণের—এটা কিন্তু ইতিমধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যেটা চালু হয়েছে, এটাকে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার, সংসদ গড়ার যে প্রত্যয়—সেটা এখানে প্রমাণ।"
"নির্বাচনী হাওয়া বইছে কিন্তু। এবং মানুষ কিন্তু নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে নিচ্ছে। কোন বাধা-বিপত্তি এই নির্বাচনী হওয়ার সামনে দাঁড়াতে পারবে না। কোন শক্তি বাংলাদেশকে গণতন্ত্র উত্তরণে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া-কোন শক্তি সেটা বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। কেউ যদি সেটা করে, সেই দায় ও দায়িত্ব তাদেরকেই নিতে হবে।"
"সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ"-এই নীতিতেই চলছে বিএনপি।বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন ও জনগণের প্রতি আস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন-"জনগণের উপর আস্থা রাখা এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব একটা কথাই বলেছেন-‘সকল ক্ষমতার উৎস হচ্ছে জনগণ।’ ওইটাই বিএনপির রাজনীতি। ওইটার উপর ভিত্তি করেই এই দলটি গঠিত হয়েছে। অর্থাৎ জনগণের, বাংলাদেশের মানুষ যারা জনগণ, তাদের উপর আস্থা রেখে, তাদের সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি।"
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিএনপির ভূমিকা ব্যাখ্যা করে আমীর খসরু বলেন-"গণতন্ত্রের সংগ্রামে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র করেছেন। বেগম খালেদা জিয়া এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে একক ব্যক্তি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যিনি আন্দোলন করে গেছেন। স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ আন্দোলন করেছেন স্বৈরশাসক হাসিনার বিরুদ্ধে।"
"দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে আন্দোলন করে গেছেন আমাদের সকলকে নিয়ে। তারেক রহমান সাহেব সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে সফলভাবে এই স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছেন। বিএনপির সংগ্রাম গণতন্ত্রের জন্য অব্যাহত আছে।"
বিএনপির নেতা-কর্মীদের প্রতিও আশার বার্তা দিয়ে তিনি বলেন-"এই মানুষগুলো আজকে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। তারাই আজকে এসেছে, তারাই আগামী দিনের গণতন্ত্রের লড়াইয়ে সবাই আমরা একসাথে নামবো, ইনশাআল্লাহ।"
আফরোজা