ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে জলঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি

তাহমিন হক ববী, স্টাফরিপোর্টার, নীলফামারী

প্রকাশিত: ১২:৪৫, ১ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৭:৪৪, ১ এপ্রিল ২০২৫

বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে জলঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি

ছবি: সংগৃহীত

উত্তরাঞ্চলের নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা জারি করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন।

এদিকে এ ঘটনায় জলঢাকা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, সেখানে বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমন কি দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

০৫.৪৭.৭৩৩৬.০০০.০১.০৬৬.২৫- ৪৩৭ নম্বর পত্রে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করা হয় যেহেতু, ০১/০৪/২০২৫ খ্রি. তারিখে জলঢাকা পৌরসভার আওতাধীন জলঢাকা পেট্রোল পাম্প ও জলঢাকা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ (থানা মোড় সংলগ্ন) এলাকায় একাধিক পক্ষ হতে একাধিক স্থানে এবং ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সভা-সমাবেশ আহবান করা হয়েছে এবং উক্ত সমাবেশ ঘিরে বর্ণিত এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং এর ফলে আইন শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি সহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সমূহ সম্ভাবনা বিদ্যমান রয়েছে মর্মে অফিসার ইনচার্জ, জলঢাকা থানা নিম্নস্বারকারীকে অবহিত করেছেন।সেহেতু, সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে  মোঃ জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার, অর্পিত মতাবলে বর্ণিত এলাকায় ০১/০৪/২০২৫ খ্রি. তারিখ সকাল ৯:০০ ঘটিকা হতে সন্ধ্যা ৬:০০ ঘটিকা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা জারি করা হলো বলে ওই পত্রে বলা হয়।

এই সময়ে উক্ত এলাকায় সকল প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন, লাঠি যা দেশীয় কোন অস্ত্র বহন বা প্রদর্শন, যে কোন ধরনের মাইকিং বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার, ০৫ (পাঁচ) বা অধিক সংখ্যক ব্যক্তির একত্রে চলাফেরা, সভা সমাবেশ, মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ থাকবে বলে পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি ভাবে জলঢাকায় মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে।

একাধিক সুত্র জানায়, জলঢাকা উপজেলা বিএনপির পক্ষে রোজার শেষ দিন জলঢাকা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইফতার মহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই মাঠে ঈদের দিন বিকাল থেকে তিন দিনের জন্য মেলার আয়োজন করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল।

অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মইনুল ইসলাম ও তার পক্ষের লোকজন মেলা কমিটির আহবায়ক জলঢাকা উপজেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন ও জলঢাকা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক আবু সাঈদ শাকিল সহ মেলা কমিটির অন্যান্য সদস্যদের উপর সন্ত্রাসী হামলা করে মেলা প্রাঙ্গণ ভাংচুর করে।

এ ঘটনায় প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) জলঢাকায় উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে তারা। অপর দিকে পাল্টা কর্মসূচি হিসাবে উপজেলা ও পৌর বিএনপির পক্ষে অপর গ্রুপের বিরুদ্ধে মেলার নামে চাঁদাবাজি ও মেলা বন্ধের ডাক দেয়। এতে ঈদের দিন বিকাল হতে জলঢাকা শহর জুড়ে টানটান উত্তেজনা দেখা দেয়। তারই আলোকে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেন।
এ ব্যাপারে বিএনপির উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জলঢাকা থানা ওসি আরজু মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, ১৪৪ ধারা জারি করেছেন ইউএনও। কোন পক্ষ যাতে কোনো কর্মসূচি করতে না পারে সেজন্য জলঢাকা শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

মায়মুনা

আরো পড়ুন  

×