
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি এক সাক্ষাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি চীন সফরকে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, "আমি সফরটিকে খুবই ইতিবাচকভাবে দেখি। ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় চীনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা আজ অত্যন্ত জরুরি।"
তিনি জানান, বিএনপির নীতি হচ্ছে 'ফ্রেন্ড টু অল'—সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা। "আমরা চাই চীন, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, পাকিস্তানসহ সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে। কারণ আমরা একটি ছোট দেশ, আমাদের সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেই হবে,"—বলেন ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, চীন সফরের সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক, যা একটি বিরল সুযোগ। সেখানে যেসব সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর হয়েছে, সেগুলোও ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অনেক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আটকে গেছে। "সৌদি আরবের মতো দেশ বাংলাদেশে বারবার বিনিয়োগ করতে চেয়েছে, কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি,"—বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। "ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের কারণে চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহী। এই সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে,"—তিনি যোগ করেন।
তিনি বলেন, “চীনের রাজনৈতিক কৌশল সবসময় বাস্তবভিত্তিক। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা আমাদের জাতীয় স্বার্থেই জরুরি। অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চীনের সঙ্গে অন্য রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক ছিল না, কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত একটি নির্বাচিত সরকারই দেশের জন্য সর্বোত্তম। নির্বাচনের বিষয়ে আগে বলা হয়েছিল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে, কিন্তু এখন তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক।”
বিএনপির জনপ্রিয়তা নিয়েও তিনি মন্তব্য করেন: "বিএনপি আজ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, কিন্তু সত্যি হলো—জনগণ আমাদের সংস্কার চায়, গণতন্ত্র চায়। সেই লক্ষ্যে আমরা আগেই রোডম্যাপ দিয়েছি এবং মূল্যও দিয়েছি।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের রাজনীতিতে বাস্তবতা স্বীকার করতেই হবে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় পরিবারের সদস্যরা রাজনীতি করলে দোষ হয় না, বাংলাদেশে হলেই দোষ হয়—এটা দ্বিচারিতা।"
সূত্র : https://www.facebook.com/channel24live/videos/1031393205521073
রাজু