
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর বলেছেন, “আর হয়তো এক বছর যদি ফ্যাসিস্ট সরকার থাকতো, আমাকে হয়তো ঝুলিয়ে দিত। এটা ধারণা অনেকেই করেন।"
শুক্রবার (২৮ মার্চ) জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
লুৎফুজ্জামান বাবর বলেন, “আন্দোলনে ছাত্রদের ভূমিকা অসাধারণ ছিল। ওদের ভূমিকার জন্য পুরো জনগণ নেমে এসছে। বাংলাদেশের সকলেই এসেছে। এবং সেটাকে কাউকে খাটো করা কারো উচিত না।”
তিনি আরো বলেন, “এই যে স্যাক্রিফাইস আমাদের ছাত্র জনতার বিপ্লবের সময় হয়েছে, যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। পাশাপাশি যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসা দেওয়া এবং তাদেরকে একটা যোগ্য প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মস্থলে নিয়ে যাওয়া, এটা আমাদের পুরো দেশবাসীর দায়িত্ব।”
লুৎফুজ্জামান বাবর আরও বলেন, “আমাদের তো বিএনপির তো দায়িত্ব আছে, দেশবাসীর দায়িত্ব। বর্তমান সরকারের কাজ করছেন। আমি জানি না উনি কতদূর কি করছেন। কিন্তু আমরা আমাদের তাগিদ থেকে এসেছি। আজকে সাড়ে সতেরো বছর জেল খাটার পরে আমি যেখানে আসছি, সেটা তো আমি আসল সত্যিকার অর্থে কল্পনা করতে পারিনি।”
তিনি বলেন, “আর হয়তো এক বছর যদি ফ্যাসিস্ট সরকার থাকতো, আমাকে হয়তো ঝুলিয়ে দিত। এটা ধারণা অনেকেই করেন। সেটা আল্লাহ মালিক, আল্লাহ ভালো জানেন।”
বাবর আরও বলেন, “কিন্তু আমি তো একটা মুক্ত অবস্থায় আছি। সেজন্য আমি মনে করি আমার একটা দায়িত্ব আছে, আমার দলের দায়িত্ব, আমার দলও আমার সাথে আছে, কথা হয়েছে।”
তিনি যোগ করেন, “আমার নেতার সাথে কথা হয়েছে। উনার আন্তরিকতার কোনো কমতি নেই। আপনারা দেখবেন, একটু ধৈর্য ধরতে হবে আমাদের সকলকে। আশা করি ইনশাআল্লাহ তালা, আমাদের যারা ছোট ভাই-বোনরা যারা আহত হয়েছেন, সকলের প্রতি আমাদের অনেক দায়িত্ব আছে।”
বাবর বলেন, “আমাদের দায়িত্ব এখন, আমরা পঙ্গু হাসপাতালে যাব। এর তাগিদটা হচ্ছে, কী, তাদের এই ঈদের একটা আমাদের উৎসব। এই উৎসবে তাদেরকে আমি ঈদের শুভেচ্ছা দেওয়ার। আর ছোটখাটোভাবে দেখা করা, এটাই বড় জিনিস। এটার জন্য এসেছি।”
তিনি বলেন, “সরকারের আমি আসলে ডিটেইল জানি না। কিন্তু কথা অনুযায়ী তো বুঝা যাচ্ছে বৈষম্য শিকার হচ্ছে। এখন এটাকে সরকার যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ আছেন, তাদেরকে এটা দেখতে হবে এবং দেখে, তারা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে কারা কারা আহত আছে, সেই লিস্টটা করতে হবে। এবং তাদের জন্য প্রয়োজন ব্যবস্থা করার দায়িত্ব বর্তমান সরকারের।”
লুৎফুজ্জামান বাবর বলেন, “এবং সরকারের সেটা করা উচিত বলে আমি সরকারকে আহ্বান জানাবো।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা দ্রুত যে কথা আসছে, এখানে সেই কথাটিকে আপনার নজর দিবেন, দেখবেন এবং এটার সুব্যবস্থা করবেন, যাতে এই সমস্ত জিনিসের কোনো কথা যাতে না আসে। এটা তো তারা এমনিতে জীবন দিয়েছে, তারা আহত হয়েছে, তো সুতরাং তাদের প্রতি তো আমাদের সকলের একটা দায়িত্ব আছে। আর আপনারা সরকারে থাকার কারণে, আপনার দায়িত্বটা সবচেয়ে বেশি।”
তিনি বলেন, “সরকারে যারা আছেন, আপনার দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি।”
বাবর আরও বলেন, “সুতরাং, আপনারা এটা করেন, আমরা আমাদের তরফ থেকে করব, আপনাদের সাহায্য সহযোগিতা করব। এবং আপনারা আপনার দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করবেন।”
তিনি বলেন, “আন্দোলন তো সর্বসাধারণের। আপনি যদি বলেন এটা একক আন্দোলন, এটা ভুল! ১৭ বছর ধারণ করতে করতে আমাদের কত নেতা-কর্মীরা আহত হয়েছে, নিহত হয়েছে, গুম হয়েছে। সেটা তো আপনাকে বুঝতে হবে। আমরা তো একটা মাঠ তৈরি করে রেখেছি। তারপর সব এমন একটা স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয়েছে।”
তিনি বলেন, “সেখানে দেখবেন, সাধারণ জনগণ নেমে এসেছে। আন্দোলনে ছাত্রদের ভূমিকা অসাধারণ ছিল। ওদের ভূমিকার জন্য পুরো জনগণ নেমে এসেছে। বাংলাদেশের সকলেই এসেছে। এবং সেটাকে কাউকে খাটো করা কারো উচিত না।”
বাবর বলেন, “এখানে কৃতিত্ব একক কারো না। সকলের, সবার। জন মানুষের। আমরা সেই স্পিরিটে যদি কথা বলি আর, তাহলে এখানে এই সমস্ত বিভেদ থাকবে না। আমরা কেন একার কৃতিত্ব নিবো? বাচ্চাদের কৃতিত্ব আছে। ওরা তো ছোট মানুষ। ওদেরকে কৃতিত্ব একটু দিব। কিন্তু কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে আমাদের সকলের কৃতিত্ব আছে। আপনাদেরও কৃতিত্ব আছে। মিডিয়ার কৃতিত্ব আছে। সবাই চাইছে ফ্যাসিস্ট সরকার, কর্তৃত্ববাদী সরকার, এই জুলুমকারী সরকারকে আপনারা সকলে মিলে তো পালাতে বাধ্য করছেন। এককভাবে কোনটা সম্ভব না।”
আফরোজা