ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১

জুলাই বিপ্লবে ব্যর্থ হলে আমাদের একজনকেও জীবিত রাখা হতো না: মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৯:১৪, ২৮ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৯:১৭, ২৮ মার্চ ২০২৫

জুলাই বিপ্লবে ব্যর্থ হলে আমাদের একজনকেও জীবিত রাখা হতো না: মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন বলেছেন, “জুলাই বিপ্লব না হলে এ দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিতাড়িত করা যেত না। আর এই ফ্যাসিস্ট হাসিনা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন, আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। যারা আহত হয়েছেন, আমি তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।

এই আন্দোলনে পটুয়াখালী জেলায় ১৪ জন শহীদ হয়েছেন, যার মধ্যে ৬ জন আমার বাউফলের সন্তান। বাউফলের মানুষ যে যেখানে ছিলেন, সেখান থেকেই জুলাই বিপ্লবে অংশ নিয়েছেন। আমি তাদের প্রতি নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”

আজ শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকাল ৩টায় বাউফল উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জুলাই বিপ্লবে শহীদ, আহত যোদ্ধা ও সাংবাদিকদের সম্মানে আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথি মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হন। ১৯৮২ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শহীদ হন। এরপর জাতীয় পার্টি নামের আরেকটি দলের জন্ম হয়। এই দলটি সব সময়ই ফ্যাসিস্ট হাসিনার চামচামি করেছে। এখন এই দলটি প্রায় বিলুপ্তির পথে। জনগণের সঙ্গে যারা জুলুম করবে, তাদের পরিণতি হাসিনার মতোই হবে।”

তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা ১০ টাকা কেজি চাল দেওয়ার ওয়াদা করে ক্ষমতায় এসে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। হাসিনা সরকারের লুটপাটের কারণে দেশে অস্থিরতা দেখা দিলে ছাত্রজনতা তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। ছাত্রজনতার প্রতিরোধে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হন। এই বিপ্লব ব্যর্থ হলে আমাদের একজনকেও জীবিত রাখা হতো না।”

তিনি বলেন, “আমাদের জাতীয় নাগরিক পার্টির সব জায়গায় এখনো কমিটি হয়নি। ঈদের পর আমরা বাউফলে একটি সুন্দর কমিটি উপহার দেব।”

সম্প্রতি বাউফলে খুন, লুটপাট ও ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বাউফল থানার ওসিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “অপরাধী যে দলেরই হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। এভাবে চলতে থাকলে বাউফলের শান্তি বিনষ্ট হবে। আমরা এই বাউফলে কোনো তরমুজ লুটেরা ও ধর্ষণকারীকে দেখতে চাই না।”

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “জুলাই বিপ্লবে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের কোনো সদস্যকে কেউ হয়রানি করলে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”

তিনি বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা কোনো দুর্বৃত্তকে দলে আশ্রয় দেবেন না। কারণ, তারা অপকর্ম করলে তার দায় দলকেই বহন করতে হবে।”

অধ্যাপক আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম, শহীদ মেহেদি হাসানের বাবা মোশারেফ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অহিদুজ্জামান সুপন, বাউফল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক জনকণ্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা কামরুজ্জামান বাচ্চু, বাউফল প্রেসক্লাবের সভাপতি জলিলুর রহমান এবং বাউফল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদুল ইসলামের শ্বশুর মোঃ হারুন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মোঃ মিজানুর রহমান।

অনুষ্ঠান শেষে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের মাঝে ঈদের উপহার ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এম.কে.

×