ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১

ব্যক্তির দায় দল নিবে না : বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৮ মার্চ ২০২৫

ব্যক্তির দায় দল নিবে না : বিএনপি

ছবিঃ সংগৃহীত

সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের দায় দল নিবে না বলে জানিয়েছেন বরিশালের বিএনপির নেতৃবৃন্দরা।

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত দুই সাংবাদিককে দেখতে গিয়ে এসব কথা বলেছেন  বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহিন। এসময় বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু, নুরুল আমিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি নেতৃবৃন্দরা হামলায় আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নিয়ে বলেন, সাংবাদিকরা কোন দলের হলে তাদের পাশে এসে আমরা দাঁড়াতাম না। আমরা আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে যেকোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার রয়েছি। কারও ব্যক্তিগত ঝামেলার দায় দল কখনই নিবে না। আর দলের নাম ভাঙিয়ে যদি কেউ কোনো অন্যায় করে, তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তারা আরও বলেন, বরিশালের ঘটনা ইতোমধ্যে কেন্দ্র অবগত হয়েছেন, তারাই এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তবে আপনারা (সাংবাদিকরা) গোটা দলকে দোষী করবেন না, এটা আমাদের প্রত্যাশা। কারণ বিএনপি কখনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দিবে না।

এছাড়া ঘটনার পরপরই বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ বিকেলে) বরিশাল মহানগর বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আফরোজা খানম নাসরিন আহতদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন। সেইসাথে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

অপরদিকে আদালত প্রাঙ্গন ও তার সামনে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে নাশকতা সৃষ্টির ঘটনায় চরম উদ্বেগ জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। 

বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন বলেন, সাংবাদিকরা কর্মক্ষেত্রে গিয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মূখীন হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আদালত প্রাঙ্গনে ও তার সামনে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা সত্যিই উদ্বেগজনক। দিনের বেলা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে বরিশালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবণতির বিষয়টি দেখিয়ে দিয়েছে ছাত্রদলের ওইসব নেতারা। পাশাপাশি আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সেইসাথে পুলিশের সামনে এ ঘটনা ঘটিয়ে সন্ত্রাসের জানান দিয়েছে হামলাকারীরা। পুলিশ এর দায় এড়াতে পারে না।  হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি যে সকল পুলিশ সদস্যর সামনে এমন নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

উল্লেখ্য, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বরিশাল জজ কোর্ট চত্বরে দুই সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ২৭ মার্চ দুপুরে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ীর নেতৃত্বে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

হামলায় আহত সাংবাদিক নুরুল আমিন রাসেল জানিয়েছেন, মুলাদীর একটি মামলায় মো. আব্বাস নামের এক আসামির  জামিন শুনানি ছিলো বৃহস্পতিবার। খবর পেয়ে সোহেল রাঢ়ীসহ ছাত্র ও যুবদলের নেতারা আব্বাসকে মারধরের জন্য আদালত চত্বরে যায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ খবর পেয়ে দুপুরে সংবাদ সংগ্রহের জন্য স্থানীয় সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম ও তিনি (রাসেল) আদালতের প্রধান গেটের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। 

একপর্যায়ে আব্বাস হোসেনের ওপর হামলার প্রস্তুতিকালে তারা দুই সাংবাদিক ক্যামেরা বের করার সাথে সাথেই ছাত্রদল নেতা ও তার সহযোগিরা অতর্কিতভাবে দুই সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। তারা ক্যামেরা ভাঙচুরের পর দুই সাংবাদিককে মারধর করে। একপর্যায়ে সাংবাদিক রাসেলের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়।

মুমু

×