
ছবি: সংগৃহীত।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সংস্কার ও বিচার ছাড়াই নির্বাচনকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পুনর্বাসনের জন্য নানা ধরনের পায়তারা চলছে।
আজ বুধবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ বলেন, 'মহান মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদদের আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা একটা স্বাধীনতা পেয়েছি। এই বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য, অধিকারের জন্য। সেই দেশবিরোধী সংগ্রাম থেকে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং এর ধারাবাহিকতায় আমাদের ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান। আমরা মনে করি, আমাদের যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে এবং বার বার যেটা বেহাত হয়েছে, বার বার রক্ত দিতে হয়েছে জনগণকে। সামনের দিনগুলোতে যাতে আমাদের জনগণকে আর রক্ত দিতে না হয় আজকের দিনে এমনটাই প্রত্যাশা।'
'আমরা যে গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করেছি যুগ যুগ ধরে এবং ২০২৪ সালেও আমাদের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে লড়াই করতে হয়েছে, গণঅভ্যুত্থান করতে হয়েছে। আমরা চাই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা বিনির্মাণের মাধ্যমে সেগুলো আবার সংস্কারের মাধ্যমে পুনর্গঠন করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে। যেখানে মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে এবং মানুষকে বার বার রক্ত দিতে নামতে হবে না', বলেন তিনি।
বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নাহিদ ইসলাম বলেন, 'আমরা মনে করি ৭১ এবং ২৪ আলাদা কিছু নয়। বরং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই ৭১-এর যে স্পিরিট সেটা পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। সেটা ৫৪ বছরে অর্জিত হতে পারেনি বিধায় একটা ফ্যাসিজম ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে চেপে বসেছিল। ফলে ৭১-এ যে সাম্যের কথা বলা হয়েছিল ২৪-এ কিন্তু আমরা সেই বৈষম্যহীন সমাজের কথাই বলছি। ফলে যারা এটাকে পরস্পরবিরোধী বা মুখোমুখি করে দাঁড় করাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য অসৎ এবং আমরা মনে করি ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে, ছাত্রজনতার বিজয়কে প্রকৃতভাবে উপলব্ধি করতে পারেনি। নতুন তরুণরা যারা নেমে এসেছে, নতুন সময়ের এই বার্তা তারা ধারণ করতে পারছে না।'
'আমাদের জাতীয় নাগরিক পার্টির যে দাবি, বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচন। আমরা মনে করি সেই পথে গেলেই জাতির একটি উত্তরণ ঘটবে গণতন্ত্রের পথে। সংস্কার এবং বিচারবিহীন যদি নির্বাচন দেওয়া হয় এবং কোনো একটি দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্যই নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া হয় নির্বাচন ছাড়া, তাহলে তা অবশ্যই মেনে নেওয়া হবে না। আমরা দেখতে পাচ্ছি পুরনো সংবিধান, বন্দোবস্ত এবং ব্যবস্থাকে আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১-এর যে সংগ্রাম এবং ৪৭-এর যে আজাদির লড়াই এই সবকিছুর মধ্য দিয়ে আমরা যে স্বাধীন, সার্বভৌম, মানবিক মর্যাদা সম্পন্ন রাষ্ট্র পেতে চেয়েছিলাম তার একটি সুযোগ ও সম্ভাবনা আমাদের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছে', বলেন তিনি।
নুসরাত