ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১

জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে আ. লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে: রাশেদ খান

প্রকাশিত: ০১:২৭, ২৫ মার্চ ২০২৫

জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে আ. লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে: রাশেদ খান

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সোমবার, যশোর জেলা শাখার আয়োজিত আলোচনা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “জাতীয় সংলাপের আয়োজন করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, "আমরা দেখতে চাই যে, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন কারা চায়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আওয়ামী লীগের ব্যাপারে ইতিমধ্যে জাতীয় ঐক্যমত তৈরি হয়ে রয়েছে। এখন সরকারের দায়িত্ব, সকল দলকে ঢাকার জাতীয় সংলাপ আহ্বান করার মাধ্যমে এবং সেখানে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকারিভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা যদি আগামীকাল জাতীয় সংলাপ ডাকে, তাহলে আগামীকালই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে।"

তিনি অভিযোগ করেন, “প্রধান উপদেষ্টা যদি চাইতেন, তাহলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে, কখনো বিএনপির ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছেন, কখনো অন্য দলের ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছেন।”

রাশেদ খান আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে, আওয়ামী লীগ লবিস্ট নিয়োগ করেছে। দেখবেন, প্রধান উপদেষ্টার সাথে অনেক আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী দেখা করতে আসে এবং তারা এসে একটি প্রশ্ন করে, ‘আপনারা কি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করছেন?’ এই প্রশ্নের কারণ হলো, প্রধান উপদেষ্টা সরাসরি বলতে পারছেন না যে, আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করব।”

তিনি বলেন, “সরকারকে বলব, এই মুহূর্তে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে, এটি দলীয় সিদ্ধান্ত নয়, এটি আমাদের সিদ্ধান্ত। বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদ, জামায়াতে ইসলামআমরা সবাই একতাবদ্ধ, এই দেশ গঠনের ব্যাপারে, গণহত্যার বিচারের বিষয়ে। রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়েও আমরা একতাবদ্ধ। আসুন, আমরা এক থাকি। আমরা এক থাকলে, যেমনিভাবে ভেঙে ফেলেছি, তেমনিভাবে আমরা এই রাষ্ট্র গঠন করতে পারব।”

তিনি আরও বলেন, “প্রত্যেকটা দল একতাবদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের ব্যাপারে। আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে, এই গণহত্যার পরে, এই দল কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। কিন্তু আমাদের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, আমি জানি না, তিনি কোন চাপে, এই মুহূর্তে বলছেন, ‘আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিবে কি নিবে না, এটি আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত।’ কিন্তু, আওয়ামী লীগ গণহত্যা চালিয়েছে। গণহত্যার পরে পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও কোনো দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না।"

তিনি আরও বলেন, “আমাদের স্পষ্ট কথা—আমরা যারা সংগ্রাম করেছি, রক্ত দিয়েছি, আমরা যারা এই ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছি, আমাদের স্পষ্ট কথা, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচন কেন, বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগ নামের কোনো দল আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এই ব্যাপারে জাতীয় ঐক্যমত দরকার। এই জাতীয় ঐক্যমত যদি না থাকে, তাহলে কিন্তু আওয়ামী লীগকে আমরা যদি আশ্রয়-প্রশ্রয় দিই, আওয়ামী লীগ ফিরে এসে আমাদের কাউকে রেহাই দিবে না, রক্ষা করবে না। আওয়ামী লীগ এসে আমাদের সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলাবে।"

এছাড়া, তিনি বলেন, “বিপ্লবী বন্ধুগণ, প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, আসুন, আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত এক থাকি, যতক্ষণ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশকে আমরা সুন্দরভাবে একটি নিরাপদ রাষ্ট্র হিসেবে গঠন করতে পারছি।"

তিনি আরও বলেন, “তরুণ সমাজ, যারা বিপ্লবে ভূমিকা রেখেছে, সেই ছাত্রনেতাদের অনেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ শুনছি। কেউ চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি। কিন্তু শুধু বিপ্লবে যেসব ছাত্রনেতারা ভূমিকা রেখেছেন, তারা নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমি গতকাল চাঁদপুরে গিয়েছিলাম, এবং বলেছিলাম, আমরা কেউ আওয়ামী লীগ হবো না। আমরা যদি আওয়ামী লীগের মত অত্যাচার করি, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের সাথে নিয়োজিত হই, তাহলে এদেশের মানুষ আমাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে।"

তিনি শেষ করেন, “সুতরাং, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আমাদের সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে। বাংলাদেশে কোনো দুর্নীতি থাকবে না, ঘুষ থাকবে না, বাণিজ্য থাকবে না, টেন্ডারবাজি থাকবে না। বাংলাদেশ এমন একটি রাষ্ট্র হবে, যেখানে আমরা সবাই নিরাপদে বসবাস করতে পারবো, ইনশাআল্লাহ। সেই ধরনের রাষ্ট্র গঠনে, আজকে আমাদের সবাইকে—বিএনপি, জামাতে ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ, ইসলামী আন্দোলনসহ সবাইকে—হাতে হাত রেখে কাজ করতে হবে।”

 

 

সূত্র: https://tinyurl.com/yxd3p96m

আফরোজা

×