
বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ছবি: সংগৃহীত
জুলাই অভ্যুত্থানে পালিয়ে গিয়ে ভারতে অবস্থানকারী শেখ হাসিনা রাইফেল দিয়ে ইতিহাস পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এদিকে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে রিজভী জানান, দলের অঙ্গ সংগঠন ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, ছাত্ররা প্রকৃত ইতিহাস জেনে জুলাই অভ্যুত্থানে ঝাপিয়ে পড়েছিল। তাই দেশে স্বৈরাচার টিকে থাকতে পারেনি। এই আন্দোলনের সময় দূরে থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃত্বের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কাজ করেছেন। কিন্তু শেখ হাসিনা জোর করে, রায় দিয়ে, রাইফেল দিয়ে ইতিহাস পরিবর্তন করতে চেয়ে পারেনি।
রিজভী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফরে যাবেন, এটা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছে গুজবের মাধ্যমে। সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কিছু জিনিসের দাম কমলেও নিত্যপণ্যের মধ্যে চাল, ডাল ও মুরগির দাম হু হু করে বাড়ছে। এ বিষয়ে লাগাম টেনে ধরা দরকার।
দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি তুলে ধরে রিজভী বলেন, যুগের পর যুগ ধরে ছিনতাইকারীরা রাজত্ব করে যাবে কেন? তাহলে পুলিশ প্রশাসন আছে কেন? সঠিক সময়ে সঠিক কাজ না করতে পারলে জনগণ তো মুখ ফিরিয়ে নেবে।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে ব্যক্তিগত সম্পদ মনে করতো। স্বাধীনতার পর থেকে তারা শুরু করে লুটপাট ও অপকর্ম। যে কারণে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল মানুষের জীবন। স্বাধীন বাংলাদেশকে অপশাসনের কবজায় নিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। জিয়াউর রহমানের সময় মানুষ ঘরের দরজা খুলে ঘুমাতো। তবে এখনকার মতো বিদেশি কিছু এজেন্ট চক্রান্ত করত।
রিজভী বলেন, পত্রিকার পাতায় দেখলাম, ইফতার পার্টির নাম করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গোপন বৈঠক করেছে, কী উদ্দেশ্যে, কেন করেছে? যাদের হাতে আইন শৃংখলা রক্ষার দায়িত্ব তারাই যদি গোপন বৈঠক করে তবে এটা ভয়াবহ ব্যাপার।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, জলবায়ু বিষয়ক সহ-সম্পাদক বেলায়েত আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহিদ হাসান, মৎসজীবী দলের সাবেক সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।
ড্যাবের কমিটি বিলুপ্ত: জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠানের জন্য সম্মেলন প্রস্তুতি ও কাউন্সিল পরিচালনা কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সোমবার বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিএনপির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশীদ এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুস সালামের নেতৃত্বাধীন ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর বিদ্যমান কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ২৬ মে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে অধ্যাপক হারুন আল রশীদ সভাপতি এবং ডা. মো. আব্দুস সালাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের ২৫ মে এই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়।ড্যাবের সম্মেলন প্রস্তুতি ও কাউন্সিল পরিচালনা কমিটিকে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পন্ন করতে হবে বলে প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
১২ সদস্যের ড্যাবের সম্মেলন প্রস্তুতি ও কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা হলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিজন কান্তি সরকার, অধ্যাপক মামুন আহমেদ, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য লুৎফর রহমান, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এসএম রফিকুল ইসলাম, পারভেজ রেজা কাকন, সদ্য বিলুপ্ত কমিটির নেতা শাহ মোহাম্মদ আমান উল্লাহ, এরফান আহমেদ সোহেল ও মোস্তফা আজিজ সুমন।
শরীফ/শহীদ