
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারো কালো মেঘ দেখতে পাচ্ছি। দিল্লির আধিপত্যবাদের কালো থাবা আবারো কোন কোন রাজনৈতিক নেতার ওপর ভর করছে। যে কারণে আওয়ামী লীগকে আবার পুনর্বাসনের সুর দিচ্ছেন ওইসব রাজনৈতিক নেতারা’। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদকে বিদায় দিয়ে যখন একটি নতুন বাংলাদেশের যাত্রা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি তখনই নতুনরূপে আধিপত্যবাদ বিস্তারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এমনকি ইসলামী শক্তিকে আলাদা করারও ষড়যন্ত্র চলছে।’
তিনি আরও বলেন, আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধসহ জুলাই আন্দোলনের শহীদরা আমাদেরকে দেখিয়ে গেছে জীবন দিয়ে হলেও এদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কিন্তু কুরআনের আইন ছাড়া ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে আল কুরআনের বিধান কায়েমের জন্য তিনি মাহে রমযানের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
রোববার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম খুলনা জেলা শাখা আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন খুলনা-৬ আসনের সাবেক এমপি অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, জাগপার মহানগর সভাপতি মো. সালাহউদ্দিন মিঠু, মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা গোলাম সরোয়ার ও অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম ফারাজী, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও প্রিন্সিপাল গাওসুল আযম হাদী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ আমিনুল ইসলাম, মাওলানা আমিনুল ইসলাম, শেখ সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক স ম এনামুল হক, অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী, অধ্যাপক আব্দুর রব, অধ্যাপক মোস্তফা আল মুজাহিদ, মাওলানা শারাফাত হোসেন, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ নূর, অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, মোহাম্মদ আশরাফুল আলম, কয়রা উপজেলা আমীর মাওলানা মিজানুর রহমান, ডুমুরিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা মুক্তার হুসাইন, ফুলতলা উপজেলা আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলিম মোল্লা, খানজাহান আলী থানা আমীর সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটো, দিঘলিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা আবুল হাসান, রূপসা উপজেলা আমীর মাওলানা লবিবুল ইসলাম, বটিয়াঘাটা উপজেলা আমীর মাওলানা শেখ আবু ইউসুফ, দাকোপ উপজেলা আমীর মাওলানা আবু সাঈদ, মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবু জার গিফারী, উত্তর জেলা সভাপতি আবু ইউসুফ ফকির, কেসিসি’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা মারুফ রশীদ, খুলনা সিটি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম, বিএল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক মো. আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক আনিস অর রেজা, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সাবেক নির্বাহী সদস্য এইচ এম আলাউদ্দিন, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সভাপতি মো. আনিসুজ্জামান, খুলনা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আহমদ আলী খান, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের খুলনা জেলা সভাপতি এম এ হাসান, সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম কাজল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক পাপ্পু, সাংবাদিক নেতা মুনীর উদ্দনি আহমেদ, এরশাদ আলী, আব্দুল খালেক আজীজী, আব্দুর রাজ্জাক রানা, মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, সোহরাব হোসেন, সাইফুল ইসলাম বাবলু, কামাল হোসেন, সেলিম গাজীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় জীবনে আল্লাহর আইন না থাকলে ব্যক্তি জীবনে আল্লাহর আইন মানা সম্ভব নয়। এ জন্য আগামী দিনের রাষ্ট্র কাঠামো হোক ইসলামের, পবিত্র কুরআনের এমন প্রত্যাশাও করেন তিনি।
পবিত্র কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহ যেহেতু পরিপূর্ণ মুসলমান না হয়ে কবরে না যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সেহেতু সর্বস্তরে কুরআনের আইন থাকতে হবে। তিনি জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে একটি বরকতপূর্ণ দেশ গড়ার জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৩ সালে নগরীর শিববাড়ি মোড়স্থ হোটেল স্কাইভিউতে খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘ এক যুগ পর এবার খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে রোববার জেলা জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিল বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে খুলনাবাসীর এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। এমন একটি অনুষ্ঠানে একে অপরকে কাছে পেয়ে কোলাকুলি করতে দেখা যায়। দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদ আন্দোলনের পর জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় সবাই মহান রবের কাছে শুকরিয়া আদায় করেন। এ সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সাজিদ