
ছবি:সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেছেন, "রাজনীতির মাঠে রাজনীতি গড়তে দিন। ক্যান্টনমেন্ট থেকে রাজনীতিতে নাক গলাবেন না, অযাচিত হস্তক্ষেপ করবেন না। রাজনীতিবিদদেরকেও আমরা সতর্ক করে বলতে চাই, এবারের লড়াই হবে জনগণের লড়াই।
এবারের লড়াই কোন ক্যান্টনমেন্টের লড়াই হবে না, কিংবা পিছনের দরজা দিয়ে কোন লড়াই হবে না। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা আহ্বান জানাবো, আপনারা জানেন বাংলাদেশে আমরা একটি ডেমোক্রেটিক প্রক্রিয়ার মধ্যে যাওয়ার জন্যই সংগ্রাম করছি। আমরা এই গণঅভ্যুত্থানের পরে জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠন করেছি। যদি সাহস থাকে, ইলেকশনের কথা বলেন। আসুন, বাংলাদেশে এখনো যে লোকাল গভর্নমেন্ট ইলেকশন রয়েছে, মেম্বার-চেয়ারম্যান এখনো আওয়ামী লীগের এস্টাবলিশমেন্টের অধীনেই রয়েছে। তাহলে আসুন, লোকাল গভর্নমেন্ট ইলেকশনে আপনারা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হন। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাতে চাই, বাংলাদেশকে যদি ইলেকশনের জন্য একটি মাঠ প্রস্তুত করতে হয়, তাহলে প্রথমেই তৃণমূল থেকে এই কাজটি শুরু করতে হবে। এইজন্য যাত্রাবাড়ি থেকে শুরু করে সারা বাংলাদেশে যারা এই বিপ্লবের অগ্নিগর্ভে জন্ম নিয়েছেন, আপনাদেরকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, আগামী জাতীয় ইলেকশনের আগে লোকাল গভর্নমেন্টের ইলেকশনের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
সরকারকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, তৃণমূলের মধ্য দিয়ে আগে আওয়ামী লীগের বিচার হোক। তৃণমূলের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে বিদায় করুন। যারা এই তৃণমূল ইলেকশন চায় না, তারাই বিনিয়ে যেকোন মূল্যে সামাজিকভাবে আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এজন্য যারা রাজনৈতিকবৃন্দ ও সামাজিক পক্ষগোষ্ঠী রয়েছেন, আপনাদেরকে বলে দিতে চাই, বিপ্লব পরবর্তী আমাদের একমাত্র শত্রু হলো আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ এবং যারা আওয়ামী লীগকে নতুন করে এস্টাবলিশমেন্টের জায়গায় নিয়ে আসতে চায়, জামাত, বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা একই জায়গায় ঐক্যবদ্ধ দেখতে চাই। আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য কেউ অপচেষ্টা চালাবেন না। আমরা একসাথে মাঠে ছিলাম, লড়াই করেছিলাম এবং সে লড়াইয়ে জয়ী হয়েছি। কিন্তু আমাদের লড়াইটা এখনো অসমাপ্ত। আমাদের অসমাপ্ত লড়াইয়ের মধ্যে দুটি বিষয় জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি হলো সংস্কার প্রক্রিয়া, যা যদি আমরা সমাপ্ত করতে না পারি, তাহলে আগামীতে আমরা সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েও আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ প্রক্রিয়ায় যেতে পারব না। যারা এই সংস্কার প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে, তারাও আওয়ামী লীগকে নিয়ে নতুন করে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য আমরা সরকারকে সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে আরো দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
দ্রুতগতিতে মানুষের সাথে কনসাল্টেশনের ভিত্তিতে সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যান। জাতীয় নাগরিক পার্টি ইতিমধ্যেই আপনাদের সাথে পরামর্শ করে জনতার অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক রায়ের ভিত্তিতে সংস্কার প্রক্রিয়া সাবমিট করেছে। সেখানে জনগণের কথা আমরা সেভাবেই রাখার চেষ্টা করেছি। দ্বিতীয় বিষয় হলো, এখন আমাদের সামনে আওয়ামী লীগ প্রশ্ন এসেছে। আওয়ামী লীগ কি নিষিদ্ধ হবে নাকি হবে না?
পুরো বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে আপনারা যেভাবে গণঅভ্যুত্থানে যাত্রাবাড়ি থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, নতুনভাবে আওয়ামীলীকরণের প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। আবার সেই নতুন গণঅভ্যুত্থানের শুরুটা যাত্রাবাড়ি থেকেই শুরু হোক। যাত্রাবাড়ির মানুষ অতীতেও বাংলাদেশের মানুষকে পথ দেখিয়েছিল, ভবিষ্যতেও দেখাবে। আমাদের কথা ক্লিয়ার, আমরা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে চাই না। এটা রিফাইন বোতলে নিয়ে আসেন, যেই বোতলে নিয়ে আসেন, আমরা বাংলাদেশে নতুন করে আর আওয়ামী লীগকে চাই না।"
সূত্র: https://youtu.be/y7RURQZ4U7Q?si=qmSkuhDvtTAV8Ght
আঁখি