
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রিয়াজের কাছে সালাহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে সংস্কার সংক্রান্ত মতামত জমা দেয় বিএনপি
স্বাধীনার ঘোষণাপত্রকে বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান দাবি করে বর্তমান সংবিধানকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রবিবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে নিজেদের দলের মতামত জমা দিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। তিনি বলেন, সাধারণত ধারণা হচ্ছে যে, আমাদের দেশের বর্তমান সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত। কিন্তু এটা সঠিক ধারণা নয়।
সঠিক ধারণা হচ্ছে যে, আমাদের প্রথম সংবিধান ছিল মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্র। পরবর্তীতে তারা (আওয়ামী লীগ) একটি অনির্বাচিত গণপরিষদ গঠন করে। পরবর্তীতে তারা সেই গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধানে এমন কিছু জিনিস নিয়ে আসে যেটা তাদের দলীয় মূলনীতি।
সারোয়ার তুষার বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় ৪টা মূলনীতি ৭২-এর সংবিধানে জায়গা করে নেয়। একারণে আমরা বলছি ’৭২-এর সংবিধানটা আসলে দাঁড়িয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রের বিরুদ্ধে। আমাদের মতে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রটাই আমাদের দেশের প্রথম সংবিধান, আর ’৭২-এর সংবিধানটা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে একটা সাংবিধানিক ক্যু।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জানিয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১১৩টি প্রস্তাবে তারা পুরোপুরি একমত হয়েছে। সরোয়ার তুষার জানান, কমিশনের স্প্রেডশিটে থাকা ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে আমরা ১১৩টিতে পুরোপুরি একমত। এ ছাড়া ২৯টি প্রস্তাবে আংশিক একমত হয়েছি, আর ২২টি প্রস্তাবে আমাদের মতের অমিল রয়েছে। তুষার আরও জানান, কিছু গুরুত্বপূর্ণ কমিশনের রিপোর্ট তারা এখনো পাননি। এর মধ্যে রয়েছে পুলিশ সংস্কার কমিশন ও স্থানীয় সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন। এসব রিপোর্ট দেখতে না পাওয়ায় কমিশনের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চেয়েছে।
এনসিপি দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদদের বিষয়ে একমত পোষণ করেছে। তবে তারা বলেছে, নির্বাচনের আগেই উচ্চকক্ষের প্রার্থী কারা, তা দলগুলোকে ঘোষণা করতে হবে। কারণ, নির্বাচনে একজন ভোটার একটি দেবেন। সে ক্ষেত্রে তার জানার অধিকার আছে উচ্চকক্ষে কারা যাচ্ছেন। এনসিপি বলেছে, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে পারেন।
তবে তা বাধ্যতামূলক না করার প্রস্তাব তারা দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার হতে হবে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের মেয়াদ ৭০ থেকে ৭৫ দিন হতে পারে। একটা পর্যায়ে গিয়ে এই সরকারের প্রয়োজন হবে না। সংবিধানে যে সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, সেই কাউন্সিলে এই দায়িত্ব নিতে পারে।
এ সময় দলটির সংস্কার সমন্বয় কমিটির সদস্য মুনিরা শারমিন, জাবেদ রাশিম, আরমান হোসাইন ও সালেউদ্দিন সিফাত উপস্থিত ছিলেন।