
ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংস্কার আগে-নির্বাচন পরে অথবা নির্বাচন আগে-সংস্কার পরে—এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং সংস্কার ও নির্বাচন দুটোই একসাথে চলতে পারে।
আজ শনিবার (২২ মার্চ) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো একটি সুষ্ঠু, অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো সম্পন্ন করা এবং দ্রুত একটি নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা। নির্বাচিত সরকার জনগণের প্রত্যাশিত সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করবে, কারণ জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে নির্বাচিত সরকারের পক্ষেই সংস্কারগুলো গ্রহণযোগ্যভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
সংস্কার না নির্বাচন—এই প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার আগে-নির্বাচন পরে কিংবা নির্বাচন আগে-সংস্কার পরে এই ধরনের বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই সংস্কার ও নির্বাচন দুটোই একসাথে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সংস্কার সনদ তৈরি হতে পারে, যা নির্বাচিত সরকার পরবর্তীতে বাস্তবায়ন করবে।
তিনি আরও বলেন, কিছু অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকায় জনগণের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। প্রশাসনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়।
ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দলের ফায়দা হাসিলের এজেন্ডা যেন সরকারের পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।
সংস্কার সম্পর্কে তিনি বলেন, সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হলো জনগণের জীবনমানের উন্নতি, তাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এবং জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। সর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।
সংস্কার কমিশন সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রেরিত স্প্রেডশিটে যে অপশনগুলো দেওয়া হয়েছে, সেখানে কিছু বিষয়ের প্রস্তাব না দিয়ে শুধুমাত্র হ্যাঁ বা না উত্তর দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, প্রস্তাবগুলো গণপরিষদ দ্বারা বাস্তবায়ন করা হবে কিনা, কিংবা গণভোট, গণপরিষদ বা নির্বাচিত সংসদ মাধ্যমে প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন হবে কিনা—এগুলো সবই ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ দিয়ে উত্তর দিতে বলা হয়েছে।
নির্বাচন সম্পর্কে ফখরুল বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের পর সংস্কার নিয়ে অনেক প্রস্তাব উঠেছে, যা মূলত বিএনপি কর্তৃক ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় কাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রস্তাবের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে, যা ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অনেক আগে রচনা করা হয়। এখন ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার প্রস্তাবগুলো গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সংস্কারের সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচিত সংসদই একমাত্র উপযুক্ত ফোরাম।
শিহাব