ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১

হাসনাত আবদুল্লাহ

আমরা ৫ আগস্টের পরে বলেছি, আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা ও আদর্শ—এই তিনটি হচ্ছে অপ্রাসঙ্গিক

প্রকাশিত: ০১:৩৯, ২২ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০১:৪৪, ২২ মার্চ ২০২৫

আমরা ৫ আগস্টের পরে বলেছি, আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা ও আদর্শ—এই তিনটি হচ্ছে অপ্রাসঙ্গিক

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের আগে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তাকে দল হিসেবে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধ স্বীকার করতে হবে। তারপর অন্য কোন আলোচনা হইলে হইতে পারে। এর আগে কোন ধরনের আলোচনা হইতে পারবে না, ইমপসিবল।’

সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, সেটাকে তাঁরা রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ মনে করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সাথে যে আলোচনাটি হয়েছে সেনাবাহিনীর উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক, আমরা মনে করছি, সেটি হচ্ছে রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা। রাজনীতি রাজনীতিবিদরাই নির্ধারণ করবে। রাজনীতির ঘটনা প্রবাহ বা চলমান যা কিছুই পরবর্তী রাজনীতি কোন দিকে যাবে, সেটি রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত।’

শুক্রবার রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ টাওয়ারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা আরও বলেন, ‘তো সেই জায়গায় আমরা সন্ধিহান বলেই গতকাল আমার স্ট্যান্ডটি নিতে হয়েছে। আর যেটি বলেছেন যে, ৫ই আগস্টের পরে ফরমাল-ইনফরমাল আমাদের সাথে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন প্রোগ্রামে, আমাদের দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে। আর ১১ তারিখের যে মিটিংটি, সেটির প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল। সেখানে অপর প্রান্তে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন এবং সেখানে আমার স্ট্যাটাসেই আমি ডিসক্লোজ করেছি যে ঘটনা। আমি আমার স্ট্যাটাসেই ডিসক্লোজ করেছি, যে ওখানে সবকিছুই হচ্ছে উপস্থাপন করা হয়েছে।’

আপনাকে ডেকে নেয়া হয়েছে নাকি আপনি নিজে থেকেই গিয়েছেন, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে হাসনাত বলেন, ‘আপনারা জানেন যে বর্তমানে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে। ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন (আইনশৃঙ্খল পরিস্থিতি) নিয়ে আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য আমাদের আহ্বান জানানো হয়েছিল।

এবং  কিছুদিন আগে আপনারা সেনাপ্রধানের একটা বক্তব্য দেখেছেন, যেই বক্তব্যকে আমি ব্যক্তিগতভাবে বা আমরা অনেকেই দেশের মধ্যে এটা নিয়ে কথা হয়েছে। যে এটাকে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অসমীচীন হিসেবেই ধরা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানকে যেভাবে এড্রেস করা হয়েছে, যেভাবে ইনক্লুসিভ নির্বাচনের ইঙ্গিত করা হয়েছে আওয়ামী লীগসহ, তো সার্বিক বিষয়ে যখন আলোচনার কথা বলা হয়েছে,  সে জন্য গিয়েছি।

প্রশ্ন ছিল, আপনি কোন নিরাপত্তা ঝুঁকি অনুভব করছেন কিনা!

জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখেন, ৫ই আগস্টের পূর্বে আমরা জনগণকে, ছাত্র-নাগরিককে সাথে নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছি। ফ্যাসিবাদ বিরোধী তখন একটা শক্তি ছিল, এজেন্সি ছিল, রাষ্ট্রপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে ছিল। তো তখন আমাদের লড়াই তো আমরা বারবার বলছি। আমাদের লড়াই এখনো অব্যাহত রয়েছে। সুতরাং এই বিষয়গুলোকে আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত ছাত্র-নাগরিক এবং এই ফ্যাসিবাদ বিরোধী ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলো আমরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কোন নিরাপত্তা ঝুঁকি বা এসব আমি বোধ করছি না।’

তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, আপনি যে পোস্ট লিখেছেন, সে পোস্টের সত্যতা যাচাই করার জন্য, সেক্ষেত্রে আপনার ঠিক কার সাথে কথা হয়েছে, সেটা কি আমাদেরকে জানানো যাবে?

জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তো ওখানে ক্যান্টনমেন্ট উল্লেখ করেছি। তো আপনারা কথা বলতে পারেন এবং আমরা বলেছি যে এক্ষেত্রে দেখেন, ৫ই আগস্টের পরেই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে বারবার আমরা বলছি যে, এই দলটা এখনো পর্যন্ত কোন জায়গায় আপনারা দেখছেন রিগ্রেট ফিল করছে, কোথাও অপরাধের ওই যে একটা গণহত্যা চালাইছে, এটা তো অপরাধই স্বীকার করে নাই। আমরা আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট করতে চাই, আওয়ামী লীগের আগে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তাকে দল হিসেবে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধ স্বীকার করতে হবে। তারপর অন্য কোন আলোচনা হইলে হইতে পারে। এর আগে কোন ধরনের আলোচনা হইতে পারবে না, ইমপসিবল, এটা অসম্ভব।’

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবির বিষয়ে হাসনাত বলেন, ‘আমরা বলেছি যে, ৫ই আগস্টের পরে আওয়ামী লীগের নাম পুনরাবৃত্তি করছি, ৫ই আগস্ট পরে আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা এবং আদর্শ, এ তিনটাই হচ্ছে অপ্রাসঙ্গিক। এখন এটাকে যদি মানে বিদেশী ষড়যন্ত্র অথবা দেশীয় কোন ষড়যন্ত্র বা এজেন্সি থেকে কোন ধরনের এখানে অপচেষ্টা চালানো হয়, সেক্ষেত্রে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে কমিটেড (অঙ্গীকারাবদ্ধ), আমরা ছাত্র-নাগরিকের কাছে কমিটেড, আমরা নির্যাতিত-নিপীড়িত-বঞ্চিত, গুম, খুন, হত্যার শিকার যারা গত দীর্ঘ দেড় দশকের বেশি সময় ধরে হয়েছে, রাজনৈতিকভাবে নির্যাতিত যেই ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলো হয়েছে, আমরা তাদের কাছে কমিটেড। কোন এজেন্সি, কোন বিদেশী কোন কর্তৃপক্ষ, কারো কাছে আমরা কমিটেড না।’

মো. মহিউদ্দিন

×