ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১

আসিফ আদনান

আওয়ামী জাহেলিয়াত ২.০’র নমুনা: পিলখানা, শাপলা, আয়নাঘর, ২০২৪-এ গণহত্যা

তিনি বলেন, অথচ এতসব কিছুর পরও আওয়ামী লীগের তেমন কোনো পরিণতি হয়নি।

প্রকাশিত: ০০:৩০, ২২ মার্চ ২০২৫

আওয়ামী জাহেলিয়াত ২.০’র নমুনা: পিলখানা, শাপলা, আয়নাঘর, ২০২৪-এ গণহত্যা

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছেন লেখক ও বিশ্লেষক আসিফ আদনান। শুক্রবার (২১ মার্চ) নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করে দাবি করেন যে, দলটি রাষ্ট্র ও জাতির জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে এবং এর রাজনৈতিক অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করা জরুরি।

আসিফ আদনান তার স্ট্যাটাসে দাবি করেন, ‘ডারত নানাভাবে বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করে। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন অক্ষে সাবভারসিভ কার্যক্রম চালায়। রাজনৈতিক অক্ষে বাংলাদেশের ডারতের সবচেয়ে বড় এবং পুরনো ফ্রন্ট হল আওয়ামী লীগ।’

আসিফ আদনান আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এই দলটি বারবার ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত করেছে: পিলখানার হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর ম্যাসাকার, প্রহসনের ট্রাইব্যুনাল, আয়নাঘর তৈরি, মোদি-বিরোধী আন্দোলনে নির্যাতন, লক্ষ কোটি টাকা পাচার, এবং সর্বশেষ জুলাই ২০২৪-এ সংঘটিত রাষ্ট্রীয় গণহত্যা—এগুলো আওয়ামী জাহেলিয়াত ২.০-এর নমুনা। ৭২ থেকে ৭৫-এর ফিরিস্তি দিতে গেলে লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে। অথচ এতসব কিছুর পরও আওয়ামী লীগের তেমন কোনো পরিণতি হয়নি।’

আসিফ আদনান অভিযোগ করেন, ‘দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বড় অংশ বহাল তবিয়তে দেশ ছেড়েছেন। প্রশাসন, মিডিয়া, বাহিনী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এখনও আওয়ামীপন্থীরা সক্রিয়। তাদের অলিগার্কদের কেউ কেউ ‘নয়া বন্দোবস্ত’-এর পেছনে টাকা ঢালছে। এই দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে এখনো অনুশোচনা কিংবা আত্মোপলব্ধির ছাপ নেই।’

২০২৪ সালের জুলাইয়ে সংঘটিত গণহত্যার বিচার কার্যক্রম থমকে থাকার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আদনান লেখেন, ‘জুলাই গণহত্যার বিচার এখনও অগ্রগতিহীন। অপরাধে জড়িত অফিসারদের বড় অংশ ধরাছোঁয়ার বাইরে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার তো দূরের কথা—বরং তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে।’

তিনি স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেন, ‘একটা বিষয় স্পষ্টভাবে বোঝা দরকার: জুলাই হয়েছিল আওয়ামী জাহেলিয়াত এবং ডারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার অর্থই হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কবর দেওয়া।’

আসিফ আদনান বলেন, ‘এই অবস্থা চলতে থাকলে তা কওম ও যমীনের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনবে। তাই দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিলুপ্ত করা আবশ্যক। এই গণহত্যাকারী দলটির রাজনৈতিক অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরা নিয়ে তিনি লিখেন, ‘তবে যারা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অনুসারী ছিলেন কিন্তু সুনির্দিষ্ট অপরাধের সাথে জড়িত নন—তারা চাইলে ভবিষ্যতে রাজনীতি করতে পারবেন, কিন্তু তা অবশ্যই বিচারের পরে, এবং অবশ্যই ভিন্ন নামে নামে, নতুন কাঠামোতে। এর জন্য তাদের প্রকাশ্যে আওয়ামী জাহেলিয়াতের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দিতে হবে।’

স্ট্যাটাসের শেষ অংশে আদনান কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, ‘ইন শা আল্লাহ, বাংলাদেশ আর কখনোই জুলাই ২০২৪-এর আগের অবস্থায় ফিরে যাবে না। আওয়ামী লীগের বিচার না করা কিংবা তাদের পুনর্বাসনের যেকোনো প্রচেষ্টা হবে জাতির সঙ্গে, এই কুরবানির সঙ্গে গাদ্দারী। যারা এ চেষ্টায় লিপ্ত হবে, তারা গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে। জাতি ও ইতিহাস তাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে—sooner or later।’

মো. মহিউদ্দিন

×