ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্য ভারতের সীমান্ত উন্মুক্ত, সুসম্পর্ক হয় না এভাবে: রাশেদ খান

প্রকাশিত: ০০:১৮, ২১ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০০:২৬, ২১ মার্চ ২০২৫

আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্য ভারতের সীমান্ত উন্মুক্ত, সুসম্পর্ক হয় না এভাবে: রাশেদ খান

ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি যমুনা টিভি আয়োজিত টকশো ‘রাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।

তার কাছে প্রশ্ন ছিল, আজকের প্রেস ব্রিফিং এ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো আছে। বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের এই সাত মাসে ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আরো বেড়েছে। আমাদের সম্পর্ক ভালো, তবে ভিসার বিষয়ে কিছু জটিলতা আছে, সে বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। কিন্তু আমরা ভারতের সাথে সুসম্পর্ক চাই, অবশ্যই সেটা ন্যায্যতা, সমতা এবং মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্ক হতে হবে। ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক আপনার চোখে কেমন ধরা দেয়?

জবাবে রাশেদ খান বলেন, ‘আমরা তো শুরু থেকে আসলে বলে আসছি যে, ভারতের সাথে অবশ্যই আমাদের সম্পর্কের দরকার আছে। কিন্তু ভারত আসলে আমাদের সাথে কেমন সম্পর্ক চায়, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবসময় বাংলাদেশের জনগণ বলেছি যে, ভারতের সাথে আমাদের মর্যাদার সম্পর্ক থাকতে হবে। কিন্তু ভারত সবসময় দাদাগিরির সম্পর্ক, তারা আমাদের সাথে রাখার চেষ্টা করেছে এবং আওয়ামী লীগের আমলে যেটি হয়েছে যে, আমরা ভারতের উপর আসলে বেশি নির্ভরশীল হয়ে গিয়েছিলাম’।

তিনি বলেন, ‘যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের বিভিন্ন উপদেষ্টারা বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিচ্ছে। আজকে প্রেস সচিব যেটি বলেছেন, সেটি আবার আমাদের মাহফুজ আলম সাহেবের বক্তব্য কিনা, সেটি আবার আমাদের ভেবে দেখতে হবে। কারণ তিনি কিন্তু আবার ভারতের ভূমি দখল করতে চান। সে ধরনের বক্তব্য বা লেখালেখি তিনি কিন্তু করেছেন অর্থাৎ সরকারের এক একজন উপদেষ্টা বলেন, সরকারের কর্মকর্তারা, তারা বিভিন্ন জন বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিচ্ছে, আসলে কার বক্তব্য আমরা গ্রহণ করব! আমাদের প্রেস সচিবের বক্তব্য গ্রহণ করব নাকি আসলে মাহফুজ আলমের বক্তব্য গ্রহণ করব, সেটি নিয়ে আমরা আসলে দ্বিধান্বিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘তবে আমরা মনে করি, ভারত সাথে অবশ্যই আমাদের সম্পর্কের দরকার আছে। যেটি চীনের সাথে যে ধরনের সম্পর্ক, কূটনৈতিক সম্পর্ক, আমেরিকার সাথে, ইউরোপের সাথে, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সাথে যে ধরনের সম্পর্ক, ভারতের সাথেও একই ধরনের সম্পর্ক আমাদের রাখা দরকার। অন্যথায় কিন্তু আমরা যেহেতু আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র, তারা কিন্তু নানান ভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে পারে।’

রাশেদ খান বলেন, ‘আমরা চাই, ভারতের সাথে কখনোই আমাদের যুদ্ধ না বাধুক। কিন্তু ভারতের সাথে আমাদের সীমান্তের যে সমস্যাটা আছে, সেটা অবশ্যই ভারতকে মেটাতে হবে। একই সাথে আমাদের তিস্তা নিয়ে সমস্যা-সংকট সেটিও কিন্তু আমাদের, ভারতের উচিত হবে সেই সংকটগুলো আসলে সমাধান করা। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে আসলে বাংলাদেশের সাথে যে ধরনের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যাশা করে, এখনো পর্যন্ত আমরা সেটি লক্ষ্য করছি না।’

তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে, যে এখনো পর্যন্ত আমরা দেখছি যে শেখ হাসিনাকে তারা, মানে যেভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার চিঠি দিয়েছে কিন্তু সেই চিঠির কোন প্রতিউত্তর বা তাকে ফেরত দেওয়া এবং এরপরে আমরা দেখেছি, ওবায়দুল কাদের পালিয়ে গেছে, আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতারা ভারতে পালিয়ে গেছে। আমরা যতদূর শুনছি, সেটি হলো যে ভারত মানে এক ধরনের বর্ডার আসলে আওয়ামী লীগের নেতাদের জন্য ওপেন করে দিয়েছে। যে আওয়ামী লীগের নেতা বা ওই পরিচয় বা ওই কার্ড দেখাতে পারলে, তারা ভারতে সবাই ওপেনলি আসলে ঢুকতে পারবে। এভাবে তো আসলে সুসম্পর্ক হয় না।’

প্রশ্নকর্তা আরো জানতে চান, প্রেস সচিব যেমন বলেছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো আছে, সেইটা আপনি ঠিক বিশ্বাস-অবিশ্বাস কোনটা করবেন ঠিক করতে পারছেন না?

জবাবে রাশেদ খান বলেন, ‘আমার কাছে আসলে মনে হচ্ছে না যে ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক যথাযথ আছে। আমাদের সম্পর্কের উন্নয়ন জরুরী এবং একই সাথে ভারত যে দাদাগিরি বা ভারত আমাদের সাথে যে ধরনের মাতাসুলভ আচরণ করছে বা আমাদের অভিভাবক হওয়ার চেষ্টা করে, এগুলো যদি ভারত বন্ধ না করে, কখনোই আসলে ভারতের সাথে আমাদের স্বাভাবিক সম্পর্ক হবে বলে আমরা মনে করছি না। আমরা ভারতের সাথে অবশ্যই সম্পর্ক রাখতে চাই, কিন্তু আমার মনে হয় না যে সেই সম্পর্ক এখনো পর্যন্ত স্থাপন হয়েছে।’

মো. মহিউদ্দিন

আরো পড়ুন  

×