ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

কোনো ধরনের চাপে নেই কমিশন ॥ আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিল জামায়াত

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২০ মার্চ ২০২৫

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিল জামায়াত

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচন ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণেও মত দিয়ে কিছু লিখিত পরামর্শ তুলে ধরেছে দলটি। এ ছাড়া সংবিধানে মূলনীতিতে আল্লাহর প্রতি অবিচল ঈমান-আস্থা ফিরিয়ে আনতে মত দিয়েছে জামায়াত।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে সহ-সভাপতি আলী রীয়াজের কাছে লিখিত মতামত দেয় জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ।
সংস্কার মতামত প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সরকার, আমাদের রাষ্ট্র, বিভিন্ন অর্গান ও নির্বাচনকে সুন্দর সুসংহত ও গ্রহণযোগ্য কীভাবে করা যায়, সেজন্য অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্টেকহোল্ডারের কাছে সংস্কারের জন্য সুপারিশ চেয়েছেন।

একটি বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল। আমরা প্রথম পর্যায়েও লিখিত সুপারিশমালা পাঠিয়েছিলাম। এর পর তারা যখন সবার মতামত পেলেন। এর পর সব ভিন্ন ভিন্ন মতকে এক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে সরকার। এটার কো-চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। সবার মতামত বিশ্লেষণ করে তাঁরা একটা মতামত তৈরি করেছেন। সেটা আবার তাঁরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতে আমরা আজকে এখানে এসেছি।
গোলাম পরওয়ার বলেন, গত ৫ মার্চ আমাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ৬ সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পাওয়ার পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে একটা বাদে ৫টি কমিশনের সুপারিশের ব্যাপারে জামায়াতের মতামত সবার আগে চাওয়া হয়েছিল।

আমরা আজকে ৫টা কমিশনের সুপারিশের ওপর আমাদের মতামত সুলিখিতভাবে দিয়েছি। তা হলো, ১. সংবিধান ২. জনপ্রশাসন ৩. বিচারবিভাগ ৪. নির্বাচন প্রক্রিয়া ও ৫. দুর্নীতি দমন কমিশন। আমরা সংবিধান ও আইন বিশেষজ্ঞ, টেকনিক্যাল ও আইনজ্ঞরা সুচিন্তিত মতামত তৈরি করেছি। 
জামায়াতের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ব্যাপারে মতামত দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের যারা কর্মকর্তা, রিটার্নিং ও প্রিজাইডিং অফিসার যারা রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকতে পারেন না তাদের এড়াতে বলা হয়েছে। 
নির্বাচনের ব্যাপারে মতামত প্রসঙ্গে গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা বলেছি পিআর বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির কথা। পৃথিবীর গণতান্ত্রিক ৬০টির বেশি দেশে এটা চালু আছে। সংবিধানের অনেক জায়গায় আমরা মতামত দিয়েছি। নতুন নতুন বিষয় আসছে।
সংবিধানের মূলনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবিধানের মূলনীতির বিষয়ে আমরা আল্লাহ তা’য়ালার ওপরে অবিচল ঈমান ও আস্থা রাখার কথা বলেছি। সংবিধানে সাম্য, গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার প্রসঙ্গে আমরা বহাল রেখেছি। তাঁদের সুপারিশে ন্যাশনাল কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিল নামে নতুন প্রসঙ্গ আসছে। সেটার ব্যাপারে আমরা সম্পূর্ণ একমত হইনি। সেখানে আমরা সুনির্দিষ্ট মতামত ও বক্তব্য দিয়েছি।
জনপ্রশাসনে যে বিরাজমান বৈষম্য ও অসন্তোষ বিরাজ করছে, সেখানে আমরা মধ্যম পন্থায় সাউন্ড সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন যেন চলতে পারে, কেউ যেন প্রশাসনকে অস্থির করতে না পারে, অসন্তোষ, বৈষম্য যেন না থাকে সেজন্য আমরা মতামত দিয়েছি। বিচার ব্যবস্থা ও নির্বাচনের ব্যাপারে নতুন প্রপোজাল আসছে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের আইডিয়া আসছে। সেখানে আমরা কিছু মতামত দিয়েছি। আমরা একমত হয়েছি, তবে কিছু কমেন্টস করেছি।
হাইকোর্টকে ডিসেন্ট্রালাইজড করার জন্য ডিভিশনাল বেঞ্চের ব্যাপারে তাঁদের প্রস্তাবনা ছিল। আমরা সেখানেও কিছু সুনির্দিষ্ট মন্তব্য করেছি। তবে পক্ষে মতামত দিয়েছি। কারণ এত এত মামলা পেন্ডিং। মানুষ তো বিচার পাচ্ছে না।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী চায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সেজন্য আমরা সরকারের সংস্কারমূলক কাজে সহযোগিতা করছি। তবে এটা এত কঠিন কাজ যে, সব দলকে একটা মতের ব্যাপারে একমত করা সত্যিই কঠিন কাজ। 
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে কি মতামত দিয়েছেন? জানতে চাইলে জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, আমরা মতামত দিয়েছি। রাখার পক্ষে বলেছি তবে সেখানে ব্যাখ্যাও দিয়েছি। আস্থা ভোট, বাজেট এ সম্পর্কে ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কীভাবে দায়িত্ব পালন করবে সে ব্যাপারে মতামত দিয়েছি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে সংবিধান সংস্কারের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। গণপরিষদ নির্বাচন নিয়ে আপনারা কি মতামত দিয়েছেন? জানতে চাইলে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দুই তিন রকমের মতামত তো আছেই। কোনো দেশে গণপরিষদ নির্বাচনের প্রয়োজন হয় নতুন সংবিধানের প্রয়োজন হলে। কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিল গঠন করা হয়।

সেই কাজটা কখনো পার্লামেন্টেও হতে পারে আবার গণপরিষদও হতে পারে। সবটাই সুযোগ সেখানে আছে। আমাদের তো একটা পার্লামেন্ট বিদ্যমান আছে। একেকটা দল নতুন গঠিত হলে তাদের নতুন কিছু কর্মনীতি কর্মসূচি থাকতেই পারে তা দোষণীয় কিছু নয়। সে ব্যাপারেও মতামত দিয়েছি।
তিনি বলেন, মূল কথা জুলাই আগস্টের যে চেতনা সে অনুযায়ী সংস্কার কার্যক্রমটা হওয়া দরকার। দুই হাজার মানুষের জীবন দান, ত্রিশ হাজার মানুষের আহত হওয়া এসব তো চেতনার ভিত্তিতেই হয়েছে। সেই চেতনা হচ্ছে ফ্যাসিবাদকে বিদায় দেওয়া, কর্তৃত্ববাদী শাসন না হওয়া। লুটপাট, অনাচার, সাংবিধানিক কাঠামোগুলোকে করাপ্ট ও তছনছ করা হয়েছে। এগুলোকে সুন্দর করে সাজানোর জন্য আমাদের জাতীয় ঐকমত্য আছে। সুতরাং কমন বিষয়ে যেন আমরা একমত হতে পারি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচন চাই না। ধর্ম নিরপেক্ষতা প্রসঙ্গে আমরা মতামত দিয়েছি। ধর্ম নিরপেক্ষতা শব্দের যে ব্যাখ্যা ও ব্যবহার তা আমরা পছন্দ করি না।
নির্বাচন সময় নিয়ে বিতর্ক আছে। ছোট প্যাকেজ হলে ডিসেম্বর, বড় প্যাকেজ হলে জুলাই। জামায়াতের পক্ষ থেকে কিছু বলেছেন কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, জামায়াত আগে থেকেই নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে যে অবস্থান সেই অবস্থানেই আছে। আমরা সময় কখনো বেঁধে দেইনি। আমাদের কাছে সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

নির্বাচনটা যদি চৌদ্দ, আঠারো বা চব্বিশের মতো হয় তাহলে তো ছয় মাস, দুবছর ৫ বছর অপেক্ষা করেও লাভ নেই। পনেরো বছর যদি একটা অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা অপেক্ষা করে থাকি তাহলে সেই নির্বাচনের জন্যই মিনিমাম সংস্কার করার প্রয়োজন, সেজন্য যৌক্তিক সময় দিতে আমরা প্রস্তুত। সেটা যেটাই হোক। দুয়েক মাস আগে পিছের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নির্বাচনটা নিরপেক্ষ হওয়া। সে জন্য আমরা কোনো রোডম্যাপ ও ডেডলাইন বলি নাই। নির্বাচনের রোডম্যাপ ও ডেডলাইন দেওয়া উচিত সরকারের।
কোনো ধরনের চাপে নেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ॥ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবের লিখিত কপি গ্রহণ করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, সংস্কার না আগে নির্বাচন প্রশ্নে কোনো ধরনের চাপে নেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আমাদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আমরা তাই করছি। 
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংস্কার প্রস্তাব জমা শেষে রাজনৈতিক কোনো চাপে রয়েছে কি না কমিশন? জানতে চাইলে আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. ইউনূস। 
সুতরাং চাপের কোনো প্রশ্ন আসে না বা দেখতে পাই না। রাজনৈতিক দলগুলো বলবে, তাদের দায়িত্ব সুপারিশ তুলে ধরা। সেটার প্রক্রিয়াই চলছে। আমরা তাদের দেওয়া সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করে সংস্কারের জন্য একটা জায়গায় যেতে চাই। সুতরাং আমরা চাপে নেই।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমরা জাতীয় সংস্কারে মতামত চেয়েছিলাম। আমরা এরই মধ্যে অধিকাংশ দলের কাছ থেকে মতামত পেতে শুরু করেছি, কিছু পেয়েছিও। তার ভিত্তিতে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ ও আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি।

আগামী কয়েকদিন অর্থাৎ বেশ কয়েকদিন ছুটি আছে সামনে। তার আগেই আমরা অন্তত চারটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ করব। ছুটিতেও যোগাযোগ থাকবে। তবে ঈদের পর আলোচনা আবার শুরু হবে।

আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যেসব মতামত আসছে, বক্তব্য শুনেছি সেসব পর্যালোচনা করছি। আমরা আশা করছি যে, বিভিন্ন বিষয়ে আমরা একমতের বিষয়ে আসতে পারব। যেসব মতামত আসছে ও জনসম্মুখে তারা যা বলেছে তাতে আশাবাদী হওয়ার কারণ আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কারের ব্যাপারে কোনো ধরনের সংশয়-দ্বিধা নেই। রাজনৈতিক দলগুলো চায় যে, এখনকার যে পরিস্থিতি তা থেকে বেরিয়ে আসার পথ সংস্কার।
দ্বিতীয়ত, যে রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চায় তারা সহযোগিতা করেছে, করছে, অব্যাহত রেখেছে। আমরা মনে করি সংস্কারের ব্যাপারে আমরা অগ্রসর হব। কতটা সময় লাগবে তা নির্ভর করছে যে, আলোচনাটা কীভাবে অগ্রসর করছি। আমাদের লক্ষ্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সময়সীমা পনোরো জুলাই। আমরা এর মধ্যেই কাজ শেষ করতে চাই।

আমরা আশা করছি এর আগে শেষ হবে। আমরা স্বচ্ছতা অবলম্বন করছি, জানবেন কীভাবে অগ্রসর হচ্ছি। তবে প্রতিদিন আমরা ব্রিফ করব না। যখন একটা পরিস্থিতিতে যাব তখন কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে আমরা জানাব। আপনাদের মাধ্যমে জাতি জানতে পারবে। রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত সুচিন্তিত সুনামের সঙ্গে মতামতগুলো জানাচ্ছে, বলেন তিনি।
বিএনপির পক্ষ থেকে কি মতামত দেওয়া হয়েছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, এখনো মতামত দেয়নি বিএনপি। আগামী দু-একদিনের মধ্যে আশা করি বিএনপি মতামত দেবে। আর আগামী দুই বা তিন দিনের মধ্যে ছাত্রদের সংগঠন এনসিপির পক্ষ থেকে মতামত দেওয়া হচ্ছে না। তাদের মতামত পাওয়া গেলে ঈদের পর থেকে অন্যান্য দলের সঙ্গেও আলোচনা শুরু হবে।
কমিশনের সঙ্গে এলডিপির সংলাপ ॥ সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। কমিশন প্রধান জানিয়েছেন, ঈদের আগে ৪ দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। 
বৃহস্পতিবারের সংলাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান ও  বদিউল আলম মজুমদার।
কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের নেতৃত্বাধীন এলডিপির আট সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, কে কিউ সাকলায়েন, ওমর ফারুক, উপদেষ্টাম-লীর সদস্য মাহবুবুর রহমান ও যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজী।
সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।
সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর বিষয়ে মতামত চেয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। এ পর্যন্ত ১৬টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কমিশন মতামত পেয়েছে।
ঈদের আগে ৪ দলের সঙ্গে সংলাপ ॥ এদিকে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঈদের আগে অন্ততপক্ষে চারটি দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে সংসদ ভবনস্থ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ের সভাকক্ষে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কমফোর্ট ইরোর অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ কথা জানানো হয়।
বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজের অগ্রগতিসহ বিবিধ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক শেষে অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হচ্ছে। ঈদের আগে অন্ততপক্ষে চারটি দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে কমিশন। ঈদ ছুটি শেষে পর্যায়ক্রমে বাকি দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি জানান, বিভিন্ন কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর সুনির্দিষ্ট মতামত জানতে ইতোমধ্যে স্প্রেডশিট আকারে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত ১৬টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কমিশন মতামত পেয়েছে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের এশীয় কর্মসূচির পরিচালক পিয়েরে প্রকাশ এবং প্রতিষ্ঠানটির মিয়ানমার ও বাংলাদেশীয় সিনিয়র কনসালট্যান্ট টমাস কিন।

আরো পড়ুন  

×