
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেছেন, দেশের মানুষ অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য লড়াই করছে বছরের পর বছর। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তাদের লড়াইকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
তিনি বলেন, “মানুষ কাজ করে, শ্রম দেয়, কিন্তু যে মজুরি পায় তা দিয়ে জীবন নির্বাহ করা সম্ভব হয় না। আমাদের দেশে দিন দিন কাজ করেও গরিব মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এটাই ‘ওয়ার্কিং পুয়র’-এর বাস্তবতা।”
রাজেকুজ্জামান রতন বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে বলেন, “আমরা ভাবছি মানুষ ভালো আছে, কারণ তারা চিৎকার করছে না। কিন্তু বাস্তবে মানুষ সহ্য করছে, অপেক্ষা করছে। সরকার অন্তর্বর্তীকালীন, তাই এখন দাবি জানিয়ে লাভ নেই— এমন ভাবনা থেকেই মানুষ মুখ বুজে সহ্য করছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছে না, বাজারও থেমে নেই।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ফাল্গুন মাসের শেষ ও চৈত্র মাসের শুরুতে সাধারণত সবজির দাম কম থাকে, কিন্তু তেলের দাম, চিনির দাম, ডালের দাম, চালের দাম কোনো কিছুই কমেনি। রোজার সময় কিছু পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়, সেটাও ব্যবসায়ীরা জানেন এবং সেই অনুযায়ী দাম বাড়িয়ে দেন।
তিনি বলেন, “মানুষের আয় বাড়ছে না, কিন্তু ব্যয় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সরকার স্বীকার করছে যে মুদ্রাস্ফীতি এখনো দুই অঙ্কের নিচে নামেনি, অথচ মানুষের আয় সরকারি হিসেবেই মাত্র ৫-৬ শতাংশ বেড়েছে। নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হয়নি, বরং অনেক ক্ষেত্র সংকুচিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “টিসিবির ট্রাক যেখানে যায়, সেখানকার বিশাল লাইনই প্রমাণ করে বাজার মানুষকে স্বস্তি দেয়নি, বরং শাস্তি দিচ্ছে।”
ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে উল্লেখ করে রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, “৩১ তারিখে ঈদ হতে পারে। শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এদিকে বাস ভাড়া বাড়তে শুরু করেছে, কিন্তু মানুষের আয় তো বাড়েনি। তাহলে কীভাবে মানুষ স্বস্তিতে আছে?”
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের কী কী কাজ করবে তা মানুষ দেখার অপেক্ষায় আছে। কিন্তু প্রতিদিন সংসার চালাতে গিয়ে যে ভোগান্তি, সেটার সমাধান দরকার। সরকার যদি সাধারণ মানুষকে একটু স্বস্তি দিতে পারে, তাহলে অন্তত এই বড় পরিবর্তনের পর মানুষ বলতে পারবে যে কিছুটা হলেও তাদের জীবনে স্বস্তি এসেছে।”
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/Zf0fkBdAHKY?si=qxhzGVMgU-xpzPi_
এম.কে.