
ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলাম অতীতে তাদের ভূমিকা স্বীকার না করে বরং ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করছে। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে জামায়াতের ভূমিকা ও তাদের নেতাদের যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি বারবার প্রমাণিত হলেও তারা কখনো ভুল স্বীকার করেনি।
ফজলুর রহমান বলেন, আমি নিজে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আমাদের সময়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিশোরগঞ্জে আমি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। সে সময় জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে এবং পাকিস্তানি সেনাদের সহায়তা করেছে। কিন্তু আজও তারা সেই অতীতকে অস্বীকার করে এবং নিজেদের অবস্থানকে বৈধতা দিতে চায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি, মুক্তিযুদ্ধের পরে যখন জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছিল, তখনো তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছিল। অথচ তারা প্রকাশ্যে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল এবং পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে একত্রিত হয়ে বাঙালি হত্যায় সহায়তা করেছিল। এমনকি এখনো তারা একই পথ অনুসরণ করছে, নিজেদের অপরাধ স্বীকার না করে বরং ইতিহাস বিকৃত করছে।
ফজলুর রহমান আরও বলেন, জামায়াত কৌশলী দল। তারা রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য চালাকি করে, কিন্তু চালাকি আর বুদ্ধিমত্তার মধ্যে পার্থক্য আছে। তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য যদি দেশের বিচার ব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ করত, তাহলে তাদের অস্তিত্বই টিকে থাকত না। তারা শুধু মুক্তিযুদ্ধের সময় অপরাধ করেনি, বরং এখনো নতুন প্রজন্মের সামনে বিকৃত ইতিহাস উপস্থাপন করছে।
তিনি উল্লেখ করেন, জামায়াতের নেতারা আজ পর্যন্ত কখনো বলেনি যে ১৯৭১ সালে তারা ভুল করেছিল। বরং তারা এখনো দাবি করে যে তারা কিছুটা হলেও মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করেছিল, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। গণজাগরণ মঞ্চ যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করল, তখনই তারা আবার তাদের প্রকৃত চেহারা দেখিয়েছে।
ফজলুর রহমান বলেন, বর্তমানে দেশে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের মধ্যে একটি স্পষ্ট বিভাজন তৈরি করেছে। এই বিভাজন আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।
তিনি আরও বলেন, কিছু ব্যক্তি এমন দাবি করছে যে, রাজাকার শব্দ উচ্চারণ করলেই জেল হওয়া উচিত। এটি শুধু হাস্যকর নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীও বটে। ইতিহাস কখনো মুছে ফেলা যায় না, সত্য একদিন প্রকাশ পাবেই।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/NcYm_9yT3FI?si=4luO4HSCmoMP3T_0
এম.কে.