
ছবি সংগৃহীত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের দেশে শিক্ষার কোনো নৈতিক মান নেই। যার কারণে আমরা বিশ্বের কোথাও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি না।
বুধবার বিকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিল আয়োজিত ‘মাহে রমাদানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল’ এর প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দুনিয়াতে বহু পেশা আছে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, অধ্যাপক, সাংবাদিক কিন্তু কারো নামের আগে বিজ্ঞ শব্দ ব্যবহার করা হয় না। শুধু আইনজীবীদের নামের পূর্বেই বিজ্ঞ শব্দ ব্যবহার করা হয়। বার ও বেঞ্চ নিয়েই বিচার কার্যক্রম। আইনজীবীগণ বিচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আইজীবীদেরকে পলিটিক্যালি মোটিভেটেড না হয়ে মানবতার কল্যাণে কাজ করতে হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষের মাঝে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দিয়েছেন। মানবজীবনের জন্য দুটো গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক দিক রয়েছে। একটি আদালত আরেকটি চিকিৎসা। এ দুটো জায়গা ঠিক হয়ে গেলে সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে অর্থাৎ সমাজ ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের দেশে এই দুটোই করুন অবস্থায় রয়েছে। বলতে গেলে ন্যায়বিচার আজ নির্বাসনে। আর স্বাস্থ্যখাতে চলছে চরম অনিয়ম।
জামায়াত আমির বলেন, আমাদের দেশে শিক্ষা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত হলে দেশের নাগরিকগণ গর্বিত হতে পারত। কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষার কোনো নৈতিক মান নেই। যার কারণে আমরা বিশ্বের কোথাও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি না। বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো র্যাংক নেই বললেই চলে। আমাদেরকে এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যে শিক্ষা মানুষকে মানুষ হতে শেখায়, মানুষকে সম্মান দিতে শেখায় সে শিক্ষা না থাকায় সমাজে নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
আমিরে জামায়াত বলেন, আমাদের দেশে বৃটিশ ল’কে মাদার ল’ বলা হয়। কিন্তু প্রকৃত মাদার ল’ হচ্ছে কুরআনের আইন। ইসলামের আইনকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য আজ পর্যন্ত কোনো আইন তৈরি হয়নি। অনেক আইন আছে যা এসেছে কুরআন থেকে। যার কারণে বিদ্যমান অনেক আইন কুরআনের সাথে খুব বেশি সাংঘর্ষিক নয়। ক্রুআনের আইনের ভিত্তিতে এক মানবিক সমাজ গঠনে সকলকে আন্তরিক হতে হবে।
তিনি বলেন, আইনজীবীগণ বিচারকার্যে বিচারকদের সহায়তা করে থাকেন। এমন এক দিন আসবে যেই দিনটিকে শেষ বিচারের দিন বলা হয়। সেইদিন কেউ কাউকে সহায়তা করতে পারবে না। সেই দিন বাদী, আসামী, আইনজীবী, সাক্ষী, বিচারক সকলকে এক কাতারে থাকতে হবে। সেইদিন বিচারকের আসনে থাকবেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। সেইদিন নেক কাজের ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। সেইদিন যে কামিয়াব হবে সেই হবে প্রকৃত সফল। সেইদিনের সফলতার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আল্লাহ তা'আলা চাইলে তার বান্দাদের জন্য রিজেকের ব্যবস্থা করেন। কাজেই আমাদেরকে আল্লাহর ওপরই ভরসা করতে হবে। রোজার শেষ প্রান্তে আমরা উপনীত হয়েছি। এই শেষ ১০ দিন হচ্ছে জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তি পাওয়ার দিন। আমাদের সবাইকে এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
এড. জসীম উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল এড. মতিউর রহমান আকন্দ, এডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং এডভোকেট মশিউল আলম, এড. ড. মোহাম্মাদ হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
আশিক