ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

স্মরণসভায় ড. মোশাররফ

টালবাহানা না করে দ্রুত সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০৬, ১৯ মার্চ ২০২৫

টালবাহানা না করে দ্রুত সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন

খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আর টালবাহানা না করে অতি দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। তাহলে আপনারা সম্মানের সঙ্গে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারবেন। আর জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র দেশে বাস্তবায়িত হবে না।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে  তিনি এ কথা বলেন। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশন এ স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।
ড. মোশাররফ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেই জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল। আমরা জনগণের অধিকার বলতে ভোটের অধিকারকে বুঝি। তাই আপনারা অতি দ্রুত নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করুন। তাহলে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে। 
ড. মোশাররফ বলেন, গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ যে আন্দোলন করছিল, সেটির চূড়ান্ত ফসল হচ্ছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট। ওই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন ও তার সরকারও পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। এটা গত ১৬ বছরের আন্দোলনের ফসল। দেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে এই দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। স্বৈারাচার পালালেও এখনও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। 
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ১৬ বছর মানুষ ভোটের অধিকার পায়নি, সেটা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ফিরিয়ে দেবে। আজকে নির্বাচনকে নানা পদ্ধতিতে বিলম্ব করার চেষ্টা হচ্ছে। যারা স্বৈরাচারী ছিল তারা পালিয়ে গেছে। কিন্তু তারা এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে এবং নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র এদেশে বাস্তবায়িত হবে না। জনগণই সেই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করবে।
বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে স্মরণ করে  ড. মোশাররফ বলেন, দেলোয়ার হোসেন সাহেব একজন ত্যাগী, জাতীয়তাবাদী ও দেশপ্রেমিক নেতা ছিলেন। তিনি চার বারের মতো ছিলেন চিফ হুইপ। ২০০১ সালে আমরা অনেকেই প্রত্যাশা করেছিলাম, দেলোয়ার হোসেন মন্ত্রী হবেন। কিন্তু তাকে মন্ত্রী করা হয়নি। এতে তিনি সামান্যতম মন খারাপ করেননি। আমরা অনেক ক্লোজলি কাজ করেছি।

আমরা কিন্তু বিষয়টা নিয়ে তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তখন তিনি উল্টো আমাদের বুঝিয়েছেন, রাজনীতি করি দলের আদর্শের জন্য। রাজনীতি করি বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে শক্তিশালী করার জন্য। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য। রাজনীতি কোনো পদ-পদবির জন্য করি না। এই শিক্ষাটা তিনি আমাদের দিয়ে গেছেন।
ড. মোশাররফ বলেন, খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন দলের ক্রান্তিকালে অনেক সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। ওয়ান-ইলেভেনের পরে যখন আমাদের দলকে স্তব্ধ করার জন্য ১১ বছরের যে মহাসচিব ছিলেন, তাকে সংস্কারপন্থি বানিয়ে ফেলে। সেই সময় আমরা কারাগারে ছিলাম। এভাবে যদি দল দুই ভাগ হয়, তাহলে কীভাবে রক্ষা হবে। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে তখন মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে ও খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি আকবর হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ। এ সময় খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের অন্য সন্তানরাও উপস্থিত ছিলেন।

×