
ছবি: সংগৃহীত
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উর্দু ভাষায় হওয়া এক আলাপচারিতার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিএনপি ও হেফাজতে ইসলামের নেতাদের নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে ধর্মীয় বক্তা কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ এবং হেফাজত নেতা মামুনুল হকসহ কয়েকজনকে ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনা নিয়ে উর্দুতে কথা বলতে দেখা যায়।
জানা গেছে, ভিডিওটি গত ১২ মার্চ ঢাকার বারিধারায় হেফাজতে ইসলামের এক ইফতার মাহফিলের পর ধারণ করা হয়। তবে সংশ্লিষ্ট নেতারা দাবি করেছেন, এটি ছিল এক হালকা মেজাজের ঘরোয়া আলোচনা।
বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, "ওখানে সবাই বাংলাতেই কথা বলছিলেন। মাত্র এক-দুই মিনিট হয়তো উর্দুতে কথা হয়েছে, যা স্বাভাবিক আলাপের অংশ ছিল।"
তিনি আরও বলেন, "আমি দীর্ঘদিন ভারতে ছিলাম, যেখানে উর্দু ও হিন্দি প্রচলিত, তাই এ ভাষা জানা অস্বাভাবিক কিছু নয়।"
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকও একে সামাজিক আলোচনা হিসেবে ব্যাখ্যা করে বলেন, "এটি নিয়ে এত আলোচনার কিছু নেই। আলেমরা পারস্পরিকভাবে মতবিনিময় করেছেন মাত্র।"
তবে সামাজিক মাধ্যমে এই ব্যাখ্যায় অনেকেই সন্তুষ্ট নন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, উর্দু ভাষায় আলাপচারিতা দেশের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের পরিপন্থী।
কেউ কেউ ভিডিওটি শেয়ার করে কটাক্ষ করে লিখেছেন, "এরা কোন ভাষায় কথা বলছে— উর্দু, হিন্দি, নাকি ফার্সি?" আবার কেউ বলেছেন, "কবে যে উর্দু আবার রাষ্ট্রভাষা হয়ে যায়, মা'বুদ জানে!"
তবে কিছু ব্যবহারকারী এর পক্ষে মত দিয়ে বলেছেন, "ইংরেজিতে কথা বললে সমস্যা নেই, কিন্তু উর্দু হলেই সমালোচনা কেন?"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুতফা মনে করেন, বাংলাকে চাপিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ইতিহাসের কারণে জনগণের মধ্যে এ নিয়ে সংবেদনশীলতা রয়েছে। তিনি বলেন, "এটি যদি উর্দু না হয়ে অন্য কোনো ভাষা হতো, তাহলে এত সমালোচনা হতো না।"
যদিও সংশ্লিষ্ট নেতারা বিষয়টিকে শুধুমাত্র একটি অনানুষ্ঠানিক আলাপচারিতা হিসেবে দেখছেন এবং এর কোনো রাজনৈতিক তাৎপর্য নেই বলে দাবি করছেন, তবুও সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থামেনি।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/Wqwa1ed1obo?si=KlYb8ooKiCGVfLgi
এম.কে.