
ছবি: সংগৃহীত
আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ঐকমত্যের উদাহরণ খুব কম। একটি উদাহরণ আমরা পাই, সেটি হলো স্বাধীনতার পর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিন দলের ঐক্য। পরবর্তীতে আর এ ধরণের উদাহরণ নেই। বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ- আল- মামুন।
তিনি আরো বলেন, সংস্কারের উদাহরণ আছে ১/১১ পরবর্তী সময়ে। সেসময় অধ্যাদেশের ভিত্তিতে বেশ কিছু সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ১৫০ টির মধ্যে ৭২ টি গৃহীত হয়েছিল, বাকী গুলো বাদ পড়েছিল।
আমাদের ঐকমত্যের ইতিহাস কম, আবার সংস্কারেও অনীহা আছে। সাংবিধানিক সংস্কার ও অধ্যাদেশ ভিত্তিক সংস্করণ যেগুলো হয়েছে, তা হয়েছে কোনো একটি দল বা গোষ্ঠী কেন্দ্রীক।
তিনি বলেন, বর্তমানে আশার যে বিষয়টি তা হলো স্বল্পমেয়াদী সংস্কারের বিষয়টি এবং এখানে কমন বিষয়গুলো কী। এখানে, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবনা গুলোর মাঝে ৪০-৫০% একটা ঐক্যমতের জায়গা আছে। স্বল্প পরিসরে যে সংস্কারের প্রস্তাব তা এই অবস্থায় আছে। এটিকে কেন্দ্র করেই পরবর্তী নির্বাচন হবে কি না সে বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে।
ড. আব্দুল্লাহ বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ইউনুস স্যারের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, এর ন্যারেটিভ দাঁড় করানো টা ঠিক হয়নি যেটা বর্তমানে বেশ কিছু সমস্যার সৃষ্টি করছে।
তিনি আরো বলেন, সংস্কারের উদ্যোগ টা যেভাবে নেওয়া হয়েছে, একজন শিক্ষক হিসেবে আমি এখানে বেশকিছু কাঠামোগত ভুল আমি দেখতে পাই। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বসল না, আবার অনেকগুলো উত্তরকে ছয়টি উত্তরে ফেলে একটি কাঠামো দাঁড় করানো হলো। এখানে, সরকারের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বসতে ভয় কোথায় সেটি একটি আলোচনার বিষয়।
তিনি জানান, রাজনীতি বা সমাজবিজ্ঞান অনুযায়ী, আলোচনা বা মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যা দূর করা যায়। সরকারের এ ধরণের মিথস্ক্রিয়ার সংখ্যা খুব কম না। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার যে প্রক্রিয়া, যে ভাষায় আলোচনা হচ্ছে তাতে দ্বিধা থেকে যাচ্ছে।
এখানে ঐকমত্যের প্রয়োজন যেমন আছে, তেমনই এদের কোনো একটি দলই পরবর্তীতে সংস্কারটি বাস্তবায়ন করবে। কাজেই, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বসতে যে অনীহা বা ভয় সেটি না থাকলে তিনটি বিষয় ঘটতো - অস্থিতিশীলতার কারণ জানতে সহজ হতো, সংস্কারের আলোচনাটি আগাতো, এতো মানুষের জীবন ও ক্ষয়ক্ষতির সংস্কার একটি বাস্তব রুপ পেতো।
মায়মুনা