ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

জামায়াতে ইসলামী মানবিক বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে: ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২৩:১৬, ১৬ মার্চ ২০২৫

জামায়াতে ইসলামী মানবিক বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে: ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ

ছবি: জনকণ্ঠ

জামায়াতে ইসলামী মানবিক বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, মানবিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য প্রথমে মানবিক মানুষ তৈরি করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানুষ তৈরির কাজ করছে। সেজন্যই জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে রয়েছে অসংখ্য নৈতিক ও মানবিক নেতৃত্ব।

তিনি বলেন, নৈতিকতার অভাবে মানুষ অপকর্মে লিপ্ত হয়, ফলে সমাজে অশান্তি বিরাজ করে। যার কারণেই আজ শিশু, কিশোরী ও বয়োবৃদ্ধ নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে মিষ্টি বিতরণ করার পরও আওয়ামী লীগ সরকার সেই বিচার না করায় সারাদেশে ধর্ষণের মতো ব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ ধর্ষণের বিচার না করে ধর্ষণকে সমর্থন করছে— এটি তারই দৃষ্টান্ত।

আজ রবিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে বাউফল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ইফতার মাহফিল পূর্ববর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতা "উই ওয়ান্ট জাস্টিস" (ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার) দাবিতে জীবন ও রক্ত দিয়েছে। তাদের জীবন ও রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। বিগত ৫৪ বছরে মানুষের তৈরি আইনে বাংলাদেশ পরিচালিত হওয়ায় সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি, বৈষম্য দূর হয়নি। বরং বৈষম্য সৃষ্টি করে ক্ষমতাসীনরা দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, লুটপাট ও বিদেশে অর্থ পাচারে লিপ্ত ছিল। স্বজনপ্রীতি ও দলীয় বিবেচনায় কোনো অপরাধীর বিচার হয়নি। এতে স্পষ্ট যে, মানুষের তৈরি আইনে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি এবং হবেও না।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ উপস্থিত বাউফলবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, বিগত সময়ে বাউফল ছিল এক নেতা ও এক দলের মুষ্টিতে বন্দী, কারণ মানুষের তৈরি আইনে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়েছে। আগামীতেও যদি মানুষের তৈরি আইনের পক্ষে ভোট দেওয়া হয়, তবে জনগণ এক নেতা ও এক দলের মুষ্টিতে বন্দী থাকবে এবং শোষিত হবে— যা আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে পারে। এরই প্রতিচ্ছবি ইতোমধ্যে সারাদেশে দেখা যাচ্ছে। তাই নতুন বাংলাদেশ কুরআনের আইনে পরিচালিত হলে মানুষ তার অধিকার ও মর্যাদা ফিরে পাবে।

তিনি বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে ‘কাঙ্ক্ষিত বাউফল, প্রত্যাশিত নেতৃত্ব’ স্লোগানে বাউফলের প্রতিটি মানুষ এলাকার উন্নয়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে পারবে। রাষ্ট্র পরিচালনায় বাউফলের সাড়ে চার লাখ জনসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। কোনো একক নেতৃত্ব বাউফলে প্রতিষ্ঠিত হতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

নুরে মোহাম্মদীয় (সা.) হাফিজিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ লোকমান হাকিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও মুফাসসিরে কুরআন মাওলানা শায়খ জামাল উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক ডিআইজি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে বাউফল ফাউন্ডেশনের সদস্যরা ছাড়াও দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও বাউফলের আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

এম.কে.

×