ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

নারী স্বাধীনতার নামে উলঙ্গপনা ও বেহায়াপনা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে: শিবির সেক্রেটারি

প্রকাশিত: ২১:০২, ১৫ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২১:০২, ১৫ মার্চ ২০২৫

নারী স্বাধীনতার নামে উলঙ্গপনা ও বেহায়াপনা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে: শিবির সেক্রেটারি

ছ‌বি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে নারীর নিরাপত্তা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিবির সেক্রেটারি। তিনি বলেছেন, "স্বাধীনতার ৫৩-৫৪ বছর পরেও আমরা আমাদের দেশের নারীদের জন্য নিরাপদ সমাজ তৈরি করতে পারিনি। এটি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য চরম লজ্জাজনক ও দুঃখজনক বিষয়।"

তিনি আরও বলেন, "মুক্তিযুদ্ধের সময় ঘোষণাপত্রে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরও আমরা তা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। দেশে দুর্নীতি ও নারী নির্যাতন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।"

উল্লেখযোগ্য তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, "২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনায় ২৬,৬৯৫টি মামলা হয়েছে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে শুধুমাত্র রেকর্ডভুক্ত ধর্ষণের ঘটনা ৬,৪৯২টি। এর মধ্যে ৩,৪৭১টি ঘটনায় ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুরা ধর্ষণের শিকার হয়েছে।" তিনি দাবি করেন, "প্রকৃত সংখ্যাটি আরও অনেক বেশি, কারণ লজ্জা ও সামাজিক কারণে অনেক ঘটনা প্রকাশ্যে আসে না।"

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তিনি বলেন, "প্রতি পাঁচ বছরে গড়ে ৩০ থেকে ৩২ হাজার মামলা দায়ের হয়। কিন্তু মাত্র ৪-৫ শতাংশ মামলার বিচার সম্পন্ন হয়। ফলে অপরাধীরা ধরা পড়লেও শাস্তি এড়াতে সক্ষম হচ্ছে, যা বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে আরও সুসংহত করছে।"

তিনি আরও অভিযোগ করেন, "নারী স্বাধীনতার নামে উলঙ্গপনা ও বেহায়াপনা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে নারীদের ভোগ্যপণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, আর শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিক মূল্যবোধের জায়গায় শুধুমাত্র বস্তুবাদী চিন্তাভাবনার প্রচলন করা হচ্ছে।"

সমস্যার মূল কারণ বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, "শুধু অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দিলেই সমাধান হবে না। এটি একটি জটিল সামাজিক ও কাঠামোগত সমস্যা। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিক মূল্যবোধের পুনঃস্থাপন এবং সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করাই হতে পারে এর দীর্ঘমেয়াদী সমাধান।"

নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা করতে হলে এখনই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।"

আবীর

×