ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

শাহবাগীরা দিল্লি থেকে ফান্ডিং পেয়ে আন্দোলন করছে: নাগরিক পার্টির নেতা শিশির

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ১২ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০০:১৩, ১৩ মার্চ ২০২৫

শাহবাগীরা দিল্লি থেকে ফান্ডিং পেয়ে আন্দোলন করছে: নাগরিক পার্টির নেতা শিশির

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, শাহবাগীরা দিল্লির ফান্ডিং পেয়ে আন্দোলন করেছে। ২০১৩ সালে যারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল, যারা শাহবাগ আন্দোলনের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিয়েছিল, তারা আবারও সক্রিয় হয়েছে। তারা রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক ব্যানারে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়।

আজ বুধবার (১২ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, "আমরা তরুণ প্রজন্ম এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলতে চাই—২০১৩ সালে যারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পক্ষে আন্দোলন করেছিল, শাপলা চত্বরে গণহত্যা সংঘটিত করেছিল, তাদের বিচার আমরা করবো। যদি তারা আবারও বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, তবে আমরা রাজপথে তাদের মোকাবেলা করব।"

শিশির বলেন, "কিছু লোক দিল্লি থেকে ফান্ডিং পেয়েছে। শেখ হাসিনা এবং তার কিছু দোসর দিল্লিতে বসে বসে বাংলাদেশে আন্দোলন গড়ে তুলছে। আমি মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের অনুরোধ করব, আপনারা চোখ-কান খোলা রাখবেন এবং সত্য তুলে ধরবেন। আপনাদের অনুসন্ধানী রিপোর্টিং বাংলাদেশের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং দেশকে দিল্লির দোসর মুক্ত করবে।"

তিনি আরও বলেন, "আজকে যে বিষয়ে আমাদের এ আয়োজন  মূলত তা মূলত মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের অবদান শীর্ষক। আমি যদি একটু ব্যাখ্যা করে বলি, এই আন্দোলনটা মূলত গড়ে উঠেছে মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতার মাধ্যমেই, মাল্টিমিডিয়ার সাংবাদিকদের অবদানের কারণে। দুনিয়া কাঁপানো যে জুলাই বিপ্লব এবং দুনিয়াবাসীকে যে বিপ্লবের সম্পর্কে তথ্য দেওয়া এটা সবার আগে করেছে আমার মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক ভাইরাই এবং এই বিপ্লবের যদি বলা হয় গণমাধ্যম এর অবদান এর ৯৫% অবদান বলতে হবে মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের।।"

তিনি বলেন, "দায়িত্বশীল মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের শীর্ষ নেতা থেকে বলা হয়েছে তাদের স্বীকৃতির ব্যাপারে। যে মাল্টি মিডিয়ার সাংবাদিকদের অবদানের স্বীকৃতি আসলে আমি এখানে যাদেরকে দেখছি সবাই আমার সহযোদ্ধা। যাদেরকে আমি মাঠে দেখেছি। আন্দোলনে যারা গুলির মুখে দাঁড়িয়েছে, টিয়ারশেল খেয়েও রিপোর্ট করেছে, লাইভ দিয়েছে। আমার কাছে মনে হয় না তার স্বীকৃতির আর কোন দরকার আছে। সারা পৃথিবীতে এই যে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা এবং যে প্রকাশ তারাই সারা পৃথিবী কে এই আন্দোলনের স্বীকৃতি দিয়েছে এবং তাদের স্বীকৃতির জন্যই তারা নিজেরাই যথেষ্ট আমি মনে করি। ।"

তিনি আরও বলেন, "অন্তবর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম ভাই উনি বরাবরই সাংবাদিকবান্ধব। উনি সবসময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, আমি তার কাছে আবেদন করবো, মাল্টিমিডিয়ার সাংবাদিকদের যে ছোট ছোট যে আবদার, খুব বেশি আবদার আমি দেখিনি এখন পর্যন্ত, একদম ন্যূনতম আবদার এখানে এসেছে সেগুলো আমার মনে হয় শফিক ভাইয়ের পক্ষে মেনে নেওয়া খুবই সহজ এবং এগুলো বাস্তবায়ন করে দেওয়া খুব একটা কঠিন কাজ নয়।

মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের জন্য কোনও অফিস নেই বলে শুনেছি। আমি সরকার ও সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে বলব, এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ও অন্যান্য সংগঠন চাইলে তাদের জন্য একটি বসার ব্যবস্থা সহজেই করতে পারে।"

শিশির বলেন, "গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের গণমাধ্যম কখনোই দেশের জন্য কাজ করেনি। কিছু গণমাধ্যম এমন ব্যক্তিদের হাতে চলে গিয়েছিল যারা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেছে এবং দিল্লির স্বার্থ রক্ষা করেছে। এই দোসর গোষ্ঠী এখনও সক্রিয়।"

তিনি দাবি করেন, "মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকরা এই প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল। তারা যা দেখেছেন, তা প্রকাশ করেছেন। দিল্লির প্রভাব তাদের ওপর ছিল না। এজন্যই আমি মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের একমাত্র পক্ষপাতহীন ও নিরপেক্ষ সাংবাদিক মনে করি।"

তিনি উল্লেখ করেন, "যদি আমরা ইতিহাসের দিকে তাকাই, তবে দেখব, ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন পর্যন্ত কলকাতা ও দিল্লির প্রভাব ছিল স্পষ্ট। এখনো দিল্লি থেকে কিছু গোষ্ঠী বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।"

তিনি তার বক্তৃতায় স্মরণ করেন তার সহযোদ্ধাদের, যারা জুলাই বিপ্লবের শহীদ হয়েছেন। বিশেষভাবে স্মরণ করেন পাঁচজন সাংবাদিক ভাইকে এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। 

সায়মা ইসলাম

×