
ছবি: সংগৃহীত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত নৃশংসতার দলিল সংরক্ষণ করবেন বর্তমান সরকার। এমনটি বলেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূস।
এটি কি বিচার প্রক্রিয়ার জন্য করা হবে নাকি জাতির জন্য ভবিষ্যৎ সময়ে জাতি যেন দেখতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে চ্যানেল আইয়ের টক শো 'টু দ্য পয়েন্ট' এ আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান, সাবেক সচিব বলেন, "একটা বিচার প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ কেননা বিচার তো হতে হবে কেউ যদি কোন নৃশংসতা করে নিষ্ঠুরতা করে, গুম, খুন অনেক বিষয় আছে যেগুলো নিয়ে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে, যারাই এগুলোর সাথে জড়িত আছেন। সেটা শেখ হাসিনা হন বা অন্য যেকোনো রাজনৈতিক নেতা হন অথবা প্রশাসনের লোকজন থাকতে পারে পুলিশের থাকতে পারে বা অন্য কোন এজেন্সির লোকজন থাকতে পারে। সুতরাং তাদের ব্যাপারে এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করা, লিপিবদ্ধ করা এটা বিচার কাজে সহায়ক হবে। আরেকটা হলো যে এগুলো লিপিবদ্ধ করতে হবে। আমাদের জাতির ইতিহাসে আমরা খুব বেশি যে ডকুমেন্টেশন করি এবং লিপিবদ্ধ করি এরকমটার প্রমাণ নাই। আছে কিছু লিপিবদ্ধ হয় এবং সেটা নিয়ে অনেক কথা হয় বিতর্ক হয়।"
জাতিসংঘ একটি অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জুলাই-আগস্টে যে আন্দোলনের সময় গণহত্যাগুলো হয়েছে বা সামগ্রিক বিষয়বস্তু নিয়ে সেই প্রতিবেদনটি সম্পর্কে বলেন, "প্রাথমিক প্রতিবেদন কোন চূড়ান্ত প্রতিবেদন না এবং এই প্রাথমিক প্রতিবেদনে অনেক তথ্য আছে যে তথ্যগুলোকে আবার মেলাতে হবে এবং তার জন্য আরো তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং সেই প্রাথমিক প্রতিবেদনে কিন্তু শুধু জুলাই ৩৬ দিনের কথা বলা নেই ১৫ই আগস্ট পর্যন্ত বলা আছে। সুতরাং আমি মনে করি যে এই প্রাথমিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যতগুলো হত্যা হয়েছে তিনি যেই হন বা যারা শহীদ হয়েছেন, যারা নিহত হয়েছেন শিশু, সাধারণ মানুষ, ছাত্র, এমনকি পুলিশ যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের এই ব্যাপারে গভীর তদন্ত করা উচিত এবং তদন্ত করে আপনাকে এটা নিয়ে আসতে হবে সামনে এবং এটা ডকুমেন্টেশন হতে হবে এবং এটার একটা বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।"
শেখ হাসিনার যে নৃশংসতা বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের কথাই সেখানে বলা হয়েছে এবং বিগত ১৫-১৬ বছরের এই নৃশংসতার দলিলের গুরুত্ব কতটুকু সেই ব্যাপারে সাংবাদিক এহসান মাহমুদ বলেন, "যেকোনো দলিলের তো একটা দালিলিক এবং ঐতিহাসিক একটা ভিত্তি আছে এবং একটা গুরুত্ব থাকে। সেটা সভ্যতার একটা ধারাক্রমে একশ বছর আগে আপনি কাউকে নৃশংস হিসেবে অভিহিত করবে, কিংবা কোনটাকে আমরা মহানুভব কিংবা দয়ালু ঘটনা হিসেবে ইতিহাসে আমরা এখন বিচার করি। যেমন চেঙ্গিস খানের ঘটনা, হালাকু খানের ঘটনা আমরা এখন যেমন ইতিহাসে যেমন আমরা আনি। হিটলারের ঘটনা, জার্মানির নাতসিদের ঘটনা, পাকিস্তানিদের ঘটনা একাত্তরের নয় মাসে। তেমনি একইভাবে জুলাই আগস্টে যেটা হয়েছে সেই পাশাপাশি আওয়ামী লীগের গত বিগত প্রায় দেড় দশকে গুমের ঘটনাগুলোতে গুম নিয়ে একটা তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং এই ঘটনাগুলোর দলিল এ জন্য থাকা জরুরি যাতে কোন ঘটনা আমরা চাই না যে কোন কিছুই পুনরাবৃত্তি ঘটুক। এরকম নৃশংস আরেকজন ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার বাংলাদেশে আবার যাতে জন্ম না হতে পারে এবং পাশাপাশি এই ঘটনাগুলো কতটা ঘৃণিত ছিল, মানব ইতিহাসেও যে ঘৃণিত, শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসেও না। এই ঘটনাগুলোর দালিলিক একটা প্রমাণ দরকার। সেজন্য এই বিষয়গুলো অবশ্যই ডকুমেন্টেশন হওয়া জরুরী।"
আবীর