
ছবি: সংগৃহীত
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, "আল্লাহর হাবিব বলেছেন তোমরা যাকাত এমন ভাবে মানুষকে দাও যাতে ওই নিচের হাতটা আর দ্বিতীয়বার নিচের হাত না থাকে। পরবর্তী পর্যায়ে ওটা যেন উপরের হাত হয়ে যায়।"
তিনি আরও বলেন, "হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা:) এর সময় একবার এক ভদ্র লোক তিনি যাকাতের মাল নিয়ে বন্টন করার জন্য ঘর থেকে বের হয়েছেন। দীর্ঘ সফরের পরেও তিনি এটা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না। রাষ্ট্র তাকে এডভাইস করেছিল যাও তুমি ঐ রকম কোন গরীব মানুষ দেখে তাকে দিয়ে দাও। তিনি দীর্ঘদিন পথ মেড়ে সফর করে একটা গাছের নিচে সামান্য ছায়াতে আশ্রয় নিয়েছেন। ঘুম লেগে গেছে। যাকাতের অর্থের পোটলা তার মাথার নিচে বালিশ। তিনি উঠে দেখেন যে একজন ধুলা মলিন মানুষ একেবারেই কাপড়চোপড় ময়লা। তিনিও এরকম একটা কিছুর উপরে মাথা দিয়ে ঘুমাচ্ছেন। তার মনটা খুশি উদ্বেলিত হয়ে উঠলো যে আল্লাহ মনে হয় আমার জন্য এখন বোঝা হ্রাস করা সেই ফেরেশতা পাঠিয়েছে। নিশ্চয়ই এই লোক অভাবী হবে, তার চেহারা দেখে বুঝা যাচ্ছে। তিনি বসে বসে পাহারা দিচ্ছেন। এই লোক যখন ঘুম ভেঙ্গে উঠলো গলায় জড়াইয়া বললেন ভাই তুমি ফেরেশতা আমার জন্য। বুঝলাম না আপনিও ঘুমাইলেন আমিও ঘুমাইলাম, আমিও মানুষ আপনিও মানুষ। তো আপনার মত আমি ফেরেশতা না আমিও তো মানুষ, ফেরেশতা হইলাম কিভাবে। ভদ্র লোক বললো, ভাই আমি এই বোঝাটা বয়ে বেড়াচ্ছি। এটা কাউকে দেওয়ার পাচ্ছি না। আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে যে আপনি আমাকে এটা গ্রহণ করে সাহায্য করতে পারবেন। তিনি এটা বললেন না যে আপনাকে গরীব মনে হচ্ছে এবং খুব বিনয়ের সাথে। ওই লোক হাসতে হাসতে বলল ভাই একই দশা আমার। ওই যে দেখছেন আমার এই বালিশটা, ওটা বালিশ না, ওইটা একই জিনিস। আমিও এই এক দশার উপরে আছি। আল্লাহতালা চাইলে এইভাবে সমাজকে নিয়ামত দিয়ে ইউনিফর্মলি পরিপূর্ণ করে দিতে পারেন। আল্লাহর রাসূল কঠোর ভাবে বলেছেন যে নিজে পেট পুড়ে খায় আর তার প্রতিবেশী না খেয়ে থাকে তার দিকে নজর দেয় না, সে আমার উম্মত নয়, সে আমার উম্মত হওয়ার দাবি করতে পারে না। রসূলের সাহাবীরা জিজ্ঞেস করছেন যদি এই প্রতিবেশী ইহুদি হয়! আল্লাহর রাসূল পাল্টা প্রশ্ন করেছেন সে কি মানুষ নয়? ইহুদি না মুসলিম এটা তোমার দেখার বিষয় নয়, তোমার দেখার বিষয় সে তোমার প্রতিবেশী আর সে অভুক্ত।"
এছাড়া তিনি বলেন, "প্রিয় চিকিৎসক বন্ধুগণ, আপনাদের কপাল খুবই সুপ্রসন্ন, প্রশস্ত করেছেন। আল্লাহ হাসরের দিন কিছু মানুষকে বলবেন আরে আমি অসুস্থ ছিলাম তুমি আমাকে সেবা-শুশ্রুষা করো নাই। যদি পরে আসতে আজকে আমার জান্নাত তোমাকে আলতো করে তোমার হাতে তুলে দিতাম। আল্লাহর বান্দা জিজ্ঞেস করবে হে আল্লাহ, আপনি আবার অন্যের সাহায্যের মুখাপেক্ষী হন কিভাবে? আপনি অসুস্থ হন কিভাবে? আপনি তো দারুস শিফার মালিক। আল্লাহ তায়ালা বলবেন আমি না আমার বান্দা অসুস্থ হয়ে তোমার কাছে গিয়েছিল। তুমি মন ভরে আমাকে খুশি করার জন্য তাকে সেবাটা দাওনি। কাজেই আজকে আমার কাছে তোমার জন্য কোন ভালো পাওনা নেই। উল্টা দিকে যে দিবেন এটাকে তার রিজিকের উসিলা মনে না করে আল্লাহর পক্ষ থেকে নেক আমলের একটা উপহার মনে করে তিনি কবুল করবেন এবং তার রোগীকে তিনি সেই ভাবে কাউন্সিলিং করবেন। তাকে সময় দিবেন, তার জন্য দোয়া করবেন, তাকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেবেন এবং সে যদি স্বাবলম্বী না হয় কিছু সহযোগিতা করে পাঠাবেন।"
আবীর