
ছবি : সংগৃহীত
রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া) ক্লাবের চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক বলেন, পথ একটা, সত্যের পথ, আল্লাহর পথ। আল্লাহর পথ, সত্যের পথ একটা। আরেকটা হলো শয়তানের পথ। ইন বিটুইন কোন পথ নাই। আপনারা কোনটা বেছে নিবেন, সেটার চয়েস আল্লাহ আপনাকে দিয়েছেন, আপনাদের সেই স্বাধীনতা দিয়েছেন যে, আপনারা সত্যের পথে থাকবেন! জাহান্নামের পথ যাবেন, না জান্নাতের পথে যাবেন!
যেই নির্বাচনে দাঁড়াক না কেন, আপনারা সৎ লোকটিকে বেছে নেবেন। আপনারা দুর্নীতিবাজকে বেছে নেবেন না। যারা সরকারিভাবেও যোগ্য, তারা কি সৎ, সে বলতে পারবে! আপনারা সত্য কথা বলুন। যারা দুর্নীতিবাজ, তারা কি আপনাকে বলতে পারবে, উপদেশ দিতে পারবে, আপনারা মিথ্যা কথা বলতে পারবেন না, দুর্নীতি করতে পারবেন না, চাঁদাবাজি করতে পারবেন না।
যারা এই কথাগুলো বলতে পারবে, তারাই হতে পারে আপনাদের নেতা। আপনাদেরকে শোষণ করে আমি বাড়ি বানাবো, গাড়ি বানাবো, বিদেশে বাড়ি করব, বিদেশে ছেলেমেয়েদেরকে লেখাপড়া করাবো, আমি উচ্চ শিক্ষিত করব। সেই হারামের টাকা দিয়ে দেশের কিংবা সমাজের কোন শান্তি হতে পারে না, পারে না, পারে না।
তিনি বলেন, আমি কারো বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে আসিনি, আমি কারো সাথে প্রতিদ্বন্দীতা করার জন্য এখানে আসিনি, আমি কারো সাথে যুদ্ধ করার জন্য এখানে আসিনি। যুদ্ধ করে কেউ বিজয় লাভ করলে, সে কখনো শান্তিতেও থাকতে পারে না।
বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন, এমন একটি নির্বাচন হবে, সেখানে কোন টাকার খেলা হবে না, সেখানে কোন চাঁদাবাজদের স্থান হবে না। ভালো লোকগুলো পার্লামেন্টে যাবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত হবে, এই কথা নিশ্চিত করে আমি বলতে পারি। আপনাদেরকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। আপনাদেরকে বাড়িতে নিয়ে ডেকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এটা কি কোন রাজনীতিবিদ পারে না! গণতন্ত্র কি এই কথা বলে!
সুতরাং যে করছে, যারা করছে, তারা অবৈধ অর্থের মালিক এবং অবৈধ অর্থ বিলিয়ে এই সমস্ত কাজগুলো করছে। যদি একজন সৎ লোক হয়, তার বুকের পাটা অনেক শক্তিশালী থাকে, সে কখনো হুমকি-ধমকি দিয়ে মানুষকে শাসন করতে চায় না, মানুষের ভোট আদায় করতে চায় না, মানুষের সমর্থন আদায় করতে পারে না, পারে না, পারে না।
তিনি আরো বলেন, আমি রাজনীতি করতে এখানে আসিনি। আমি আমার জন্মস্থানে রাজনীতি না করলেও, আমি আমার জন্মস্থানের সেবা করা আমার জন্য একটা বিশাল দায়িত্ব, এটা ফরজ। প্রত্যেকটি মানুষের তার নিজ ঘরে, নিজ পরিবারে, নিজ এলাকায়, তার সামর্থ্য অনুযায়ী, তার কাজ করার দায়িত্ব বর্তায় তার উপর।
আমি হাসিনা ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি, কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার কেরানীগঞ্জে, সারা বাংলাদেশেও চাঁদাবাজি বন্ধ হলে, আমাদের কেরানীগঞ্জে বন্ধ হয়নি। আপনাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং এবং একই সাথে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ১/১১ এর পর আবার শুরু হলো সেই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আস্ফালন এবং দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর আমরা সেখানে জেল-জুলুম, খুন, গুম, নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
ঘরে ঘরে মামলা-মোকদ্দমা, ঘরে ঘরে অশান্তি, ঘরে ঘরে, পাড়ায় পাড়ায়, গ্রামে গ্রামে, এলাকায় এলাকায়, সেই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অত্যাচার-নিপীড়নে আপনারা অতিষ্ট হয়েছেন। সারা দেশবাসী অতিষ্ট হয়েছে। আমি রাজনীতিবিদ নই, আমি একজন সামরিক অফিসার, দেশে-বিদেশে এমনকি আপনাদের এলাকায়ও, আমার জন্মভূমি এখানে, এখানেও আমি কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। সামরিক বাহিনীতে আপনাদের উপকার ছাড়া কোনদিন অপকার করিনি।
কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক বলেন, আমরা কি ৫ই আগস্টের বিপ্লব করেছিলাম, চাঁদাবাজিকে ঝিয়ে রাখার জন্য! আমরা কি সেই ৫ই আগস্টের বিপ্লব করেছিলাম প্রতারণাতে প্রতারিত হওয়ার জন্য! আমরা কি কেরানীগঞ্জ কিংবা কেরানীগঞ্জের দেশবাসী কি আমাকে লিখে দিয়েছেন যে, কর্নেল হক ছাড়া কেরানীগঞ্জে কিংবা ঢাকার- আসনে কেউ নির্বাচন করতে পারবে না এবং পলিটিক্স করতে পারবে না! এরকম কি আপনারা আমাকে লিখে দিয়েছেন! আমাকে কি আপনারা অথরিটি দিয়েছেন, ঘরে ঘরে থেকে মানুষদেরকে আমার বাসায় নিয়ে এসে তাদেরকে শাসানো! তাদেরকে ভয় দেখানো! যদি তোমরা অমুকের এর কাছে যাও, তাহলে আমি কর্নেল হক তোমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব, তোমাদের কাছ থেকে সেই ওসুল করে নিব, আমি কি সেটা করতে পারি!
পারি না। কোন পলিটিশিয়ান জিরো থেকে পাঁচ বছরে হিরো হতে পারে বাংলাদেশের, আপনি কি মনে করেন, সেটা তাদের হালাল ইনকামের মাধ্যমে হতে পারে! কখনো না। যার টাকা সব জনগণের টাকা। বাংলাদেশের যত অর্থনীতি সব হলো আপনার, আমার ইভেন একজন ভিক্ষুকের, এখানে চাঁদাবাজি, জুলুম-নিপীড়ন, জায়গা দখল, খাস জমি দখল, ঘরে ঘরে হানা দিয়ে চাঁদাবাজি করা, দোকান-মার্কেট তারপরে আপনার ঘাট-মাঠ, সর্বত্র চাঁদাবাজি ,এটা তো জাতীয়তাবাদী দলের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে কাজ।
আবদুল হক বলেন, আমাদের মহান নেতা জিয়াউর রহমান, তিনি এমন আদর্শ রেখে গেছেন আমাদের সামনে, তিনি এই ধরনের সকল অপরাধ থেকে তার দলকে মুক্ত রেখেছেন। এবং একইভাবে জনাব তারেক রহমানও সেই কাজটি করছেন, তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, কোন চাঁদাবাদ, দুর্নীতিবাদ, ফ্যাসিস্ট এমন কোন লোক বিএনপিতে রাজনীতি করার কোন অধিকার নাই। এটা আপনারা সবাই জানেন।
ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন খোলামোড়া মডেল টাউন এলাকায় কেরানীগঞ্জ বিনির্মানে ৯০ দশকের বিএনপি এবং সহযোগী ছাত্রবৃন্দের উদ্যোগে সংসদীয় আসন ঢাকা-২ এর ত্রিয়োদশ নির্বাচনী মতবিনিময় সভায় কেরানীগঞ্জ মডেল বিএনপির শ্রম ও অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আজিজ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অবসর প্রাপ্ত বিডিআর সদস্যদের ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, ঢাকা জেলা যুবদল নেতা সুজন তালুকদার, এমিলি, কেরানীগঞ্জ যুবদল নেতা মুহাম্মদ শাহজাহান সম্রাট, দিল ইসলাম কামরাঙ্গীর চর ৫৫নং ওয়ার্ড যুগ্ম আহ্বায়ক প্রমুখ।
মো. মহিউদ্দিন