
ডা. শফিকুর রহমান
শহীদের রক্ত নিয়ে অন্যদের মতো জামায়াতে ইসলামী রাজনীতি করে না এবং করবে না উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শহীদের রক্ত নিয়ে যারা রাজনীতি করে করুক, জামায়াতে ইসলামী শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের নিয়ে রাজনীতি করবে না। জামায়াতে ইসলামী শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের জাতীয় সম্পদ হিসেবেই মূল্যায়ন করে এবং করবে।
সোমবার আহত, পঙ্গু, শহীদ পরিবারের সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি শহীদ পরিবারের বেদনা তুলে ধরে বলেন, যেই মা-বাবা সন্তান হারিয়েছে, যে বোন স্বামী হারিয়েছে, যেই সন্তান পিতা-মাতা হারিয়েছে তারা গত বছর রমজানে একত্রে সেহরি ও ইফতার করেছে। এ বছর সেই স্মৃতি মনে করে সেহরি ও ইফতার তৃপ্তিতে করতে পারে না। এই বেদনা সহ্য করার নয়। এসময় তিনি এবারের ঈদ শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের সঙ্গে পালনের ঘোষণা দেন। আমিরে জামায়াত বলেন, শহীদদের নিয়ে প্রকাশিত শহীদ স্মরণিকা ঈদের পরপরই প্রত্যেক শহীদ পরিবারে পৌঁছানো হবে।
ইফতার মাহফিলপূর্ব আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন বলেন, যাদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে এখন পর্যন্ত কারো ভাবনা চোখে পড়েনি। একমাত্র জামায়াতে ইসলামীর আমিরের নির্দেশে প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে ২লাখ টাকা করে এবং আহতদের খুঁজে খুঁজে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছেন।
এর সাক্ষী উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারী ভাই-বোন। এছাড়াও আমিরে জামায়াত বলেছেন, ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৯০ সহ আমাদের সকল আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস বিকৃত হয়েছে। ২০২৪-এর ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না। এজন্য শহীদদের স্মরণে ১০ খ-ে ২৫০০ পৃষ্ঠার মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। এই বইতে শহীদদের পরিচয়, গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা ও শহীদ হওয়ার ঘটনা এবং স্থান সংরক্ষণ করা হয়েছে।
এই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস মুছে যেতে দেবে না জামায়াতে ইসলামী। তিনি উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের উদ্দেশে বলেন, নতুন বাংলাদেশ আপনাদের। আপনাদেরই গণঅভ্যুত্থানের অর্জন ধরে রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের হাত থেকে জাতিকে মুক্ত করতে গিয়ে আহত-পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তারা ইসলামের দৃষ্টিতে গাজী এবং গণহত্যার শিকার সকলে শহীদ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, বুয়েটের অধ্যাপক প্রকৌশলী ফখরুল ইসলাম, সাবেক সমাজ কল্যাণমন্ত্রী শহীদ আলী আহসান মুজাহিদের ছেলে আলী আহম্মদ তহকীক।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে মুহাম্মদ দেলওয়ার হোসাইন, অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, মোহাম্মদ কামাল হোসাইন ও মো. শামসুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট এসএম কামাল উদ্দিন, অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, আবদুস সালাম, অধ্যাপক মোবারক হোসাইন, শাহীন আহমেদ খান, কামরুল আহসান হাসান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সহকারী সম্পাদক আব্দুস সাত্তার সুম সহ মহানগরীর দক্ষিণের নেতৃবৃন্দ।