ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১

জাতীয় নাগরিক পার্টির টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুললেন গোলাম মওলা রনি

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ৩ মার্চ ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টির টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুললেন গোলাম মওলা রনি

ছবি : সংগৃহীত

সদ্য গঠিত ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষক গোলাম মওলা রনি। তিনি দলটির উদ্বোধনী আয়োজনের জাঁকজমকপূর্ণতা এবং ব্যয়ের পরিমাণ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

সম্প্রতি ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউতে অনুষ্ঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ব্যয় নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ বলছেন, শত কোটি টাকা খরচ হয়েছে, আবার কেউ বলছেন, কয়েক কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে অনুষ্ঠানের আয়োজন, মঞ্চের চাকচিক্য এবং সারাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ এই ব্যয়ের পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অনেকের মনে।

গোলাম মওলা রনি বলেন, "এই দলটি যারা গঠন করেছে, তারা কিছুদিন আগেও ছাত্রাবস্থায় ছিলেন। তাদের বেশিরভাগই নিম্নবিত্ত কিংবা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। অথচ মাত্র ছয়-সাত মাসের ব্যবধানে তারা বিলাসবহুল গাড়িতে চলাফেরা করছেন, দামি পোশাক পরছেন, ব্যয়বহুল ঘড়ি ব্যবহার করছেন এবং অনেকেই অভিজাত পরিবারে বিয়ে করেছেন। এত অল্প সময়ে তারা কীভাবে এত আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জন করলেন, সেটাই এখন প্রশ্ন।”

তিনি আরও বলেন, “শোনা যাচ্ছে, ধনবান ব্যক্তিরা তাদের জন্য গাড়ি দিচ্ছেন, বিলাসী জীবনযাপনের সুযোগ দিচ্ছেন। সকালে এক গাড়ি, বিকেলে আরেক গাড়ি, রাতে নতুন গাড়ি ব্যবহার করার মতো বিলাসিতা তারা উপভোগ করছেন। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস কী, সেটাই বড় প্রশ্ন।”

গোলাম মওলা রনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলো সব সময়ই টাকার খেলায় লিপ্ত থাকে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অতীতের সব দলই রাজনীতিতে অর্থের ব্যবহার করেছে। তিনি বলেন, "এরশাদ সেনাপ্রধান থাকাকালে কত টাকা বেতন পেতেন? অথচ তিনি কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতেন। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেন করেছে, যা কারো অজানা নয়।"

তিনি আরও বলেন, “এখন যদি জাতীয় নাগরিক পার্টি কোনো শিল্পগোষ্ঠী, বিদেশি সংস্থা বা দানশীল ব্যক্তি থেকে অর্থ পেয়ে থাকে, তাহলে সেটা বড় কোনো ব্যতিক্রম নয়। চীন, ভারত কিংবা আমেরিকার মতো বড় দেশগুলোরও বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর প্রভাব রয়েছে। এমনকি শোনা যাচ্ছে, বাইডেন প্রশাসন ৫০ মিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছে, যা ছোট ছোট রাজনৈতিক দল এবং এনজিওদের মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে।"

রনি অভিযোগ করেন, অতীতে রাতের ভোট পরিচালনার জন্য বিদেশি শক্তিগুলো বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে। তিনি দাবি করেন, “২০১৮ সালের নির্বাচনে ভারত বিএনপিকে কিছু আসন দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত চীনের হস্তক্ষেপে নির্বাচনের গতিপথ পরিবর্তিত হয়। রাতের বেলায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়া হয়েছিল।”

এ ধরনের রাজনৈতিক অর্থের প্রবাহ নতুন কিছু নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। "শুধু ছাত্রদের টাকা কোথা থেকে এলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অর্থহীন। বরং ভবিষ্যতে তারা যদি বড় কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবং ভালো খাবারের আয়োজন থাকে, তাহলে সেখানে গিয়ে খেয়ে আসাই ভালো,” ব্যঙ্গাত্মকভাবে বলেন তিনি।

গোলাম মওলা রনির এই বক্তব্য নিয়ে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই তার বক্তব্যকে সমর্থন করলেও, অনেকে এটাকে অতিরঞ্জিত বলছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

 

সূত্র:  https://www.youtube.com/watch?v=efdote3O3FQ

মো. মহিউদ্দিন

×