
ছবি : সংগৃহীত
সময় টিভি আয়োজিত টকশো ‘নতুন রাজনৈতিক শক্তির অভ্যুদয়’ এ উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রসঙ্গ, ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন, তাদের দলের অর্থের উৎস, আগামী পরিকল্পনা সর্ম্পকে জানতে চাওয়া হয়।
উপস্থাপক জানতে চান, আপনাদের এই দলে তো সাবেক শিবির আছে, বাম ঘরানার লোকজন আছে, বিভিন্ন মতের লোক আছে। তো বিভিন্ন মতপথের লোক এই দলে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন বা হবেন, তাদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখাটা, আপনাদের কাছে চ্যালেঞ্জ মনে হয় কিনা?
জবাবে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “জি, এক নম্বর কথা হচ্ছে, আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির পর্যায় থেকে বলি, আপনি দেখবেন যে আমাদের ১৮৭ জন কেন্দ্রীয় সদস্য এবং প্রত্যেকেই কোনো না কোন প্রফেশনে আছে, ছাত্র সংগঠন না। এবং আমাদের একটা এটা নিয়ম যে, মাসিক আপনাকে ১০০০ টাকা নূন্যতম দিতে হবে। অনেকে পাঁচ-ছয় হাজার টাকা করেও দেয়। এটা আমাদের একটা আয়ের সোর্স, রেগুলার। যেটা আমাদের অফিস খরচ এবং অফিসে প্রতিদিন কিছু টুকরা খরচ আছে এবং চলে যায়। আর এর বাইরে আমাদের একটা নিয়ম আছে যে, আপনি যদি টকশো এটেন্ড করেন, তাহলে আপনাকে ওই টকশো সম্মানের অর্ধেক টাকা দিতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমাদের এই থেকে মাসে ৮০০০০ থেকে এক লাখ টাকার মতো হয় কারণ আমাদের অনেকে অনেক টকশোতে যাই। আমি প্রচুর যাই এবং আমরা এটা মিটিং এ রেজুলেশন। এগুলো দিয়ে আমাদের এই পর্যায় পর্যন্ত চলে গেছে। এর বাইরে আমরা কিছু ইভেন্ট করেছি। আমরা কিন্তু জাতীয় নাগরিক কমিটির পর্যায়ে খুব যে বড় খুব ইভেন্ট করেছি সেরকম না, দুই থেকে তিনটা ইভেন্ট বড় ছিল। সেগুলোর টাকা আমরা আমাদের কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী, তারা ব্যক্তি হিসেবে কোন গ্রুপ এরকম না, ব্যক্তি হিসেবে তাদের একটু সচ্ছল মানুষ, তারা কেউ ১০০০০, কেউ ২০০০০, এরকম করে আমরা টাকা তুলেছি। আর এই যে আজকের প্রোগ্রাম কিংবা এর আগে আমরা এরকম আরেকটা ৩১ মার্চের প্রোগ্রাম করেছিলাম, এগুলো প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে এটা মিক্সড হয়, মানে একটা হচ্ছে আমরা এখান থেকে যেমন টাকা তুলি, আরেকটা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় ধরা যায়, একটা অঞ্চল থেকে ২০ টা বাস আসবে, সেখান থেকে তারা হয়তো ১০ টা বাসের দায়িত্ব ওই এলাকার লোকজন নিচ্ছে। এবং তারাও ওখান থেকে এভাবেই টাকাটা তুলতে কোন কোন অর্গানাইজার সচ্ছল, উনি নিজে টাকা দিচ্ছেন, ব্যবসা করেন, টাকা দিচ্ছেন, নিজেই করছেন।”
সারোয়ার তুষার বলেন, “এরকম করে এগুলোর আমরা যেটা প্ল্যান করেছি, জাতীয় নাগরিক কমিটির তো একটা পর্বে শেষ, আমি আহ্বান জানাচ্ছি অন রেকর্ড, যে জাতীয় নাগরিক কমিটির যে ১৮৭ জন মেম্বার, নাহিদ ইসলাম তো তার একটা হিসাব দিয়েছেন এবং সেটা প্রশংসিত হয়েছে যথার্থই।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যদের একটা আপনি দুদককে বলেন যে, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যদের সম্পদের পাঁচ মাস আগের এবং পরের সম্পদের একটা হিসাব যেন তারা করে। কারো কি অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধি হয়েছে কিনা, অর্থসম্পদ বেড়েছে কিনা, এটা একটা হিসাব হতে পারে। আমি এটা ওপেনলি বলতেছি এবং আহ্বান জানাচ্ছি, এটা করা উচিত।”
তিনি আরো বলেন, “এবং রাজনৈতিক এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির পাঁচ ছয় মাসের যে ফাইনান্স, এটা আমরা ইতিমধ্যে আমাদের এটা গৃহীত সিদ্ধান্ত। যেহেতু আমাদের আহবায়ক, তিনি আরো ১৫ দিন আহবায়ক থাকতে পারবেন, কারণ তিনি তো নতুন রাজনৈতিক দলে গেছেন। আমরা এটা মিটিং এর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তিনি আরো ১৫ দিন যেহেতু এটা আবার একটু পুনর্গঠন করতে হবে। তিনি সহ তার বাকি তিনজন তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে থাকবেন এবং ইন দা মিন টাইম, আমরা আসলে গত পাঁচ মাসে আমাদের ফাইনান্স, আয়-ব্যয়ের হিসাব, এটা আমরা একটা সংবাদ সম্মেলন করে সবার সামনে হাজির করব।”
দলের আর্থিক উৎসের হিসাবের যে প্রসঙ্গটা মাসুদ ভাই তুলেছেন এবং উনি আগেও এগুলো বলেছেন এর জবাবে সারোয়ার তুষার বলেন, “আমরা এগুলোতে মনে করি যে এই চাপগুলো, আমাদের কাছে এই দাবিগুলো থাকা উচিত। এবং এটা আমরা গত পরশুদিনের মিটিং এর সর্বশেষ, যে সাধারণ সভা ছিল সেখানে নেয়া এটা গৃহীত সিদ্ধান্ত যে, আমরা এটা রোজার মধ্যেই এই কাজটা করে ফেলবো।
আর পরবর্তী যে রাজনৈতিক দল তার আর্থিক লেনদেন কিভাবে হবে, সেটার ক্ষেত্রে একটা ফাইনান্স পলিসি ইতিমধ্যেই এই সংগঠনে প্রস্তাবিত হয়েছে। আমরা ওয়েবসাইটের মধ্য দিয়ে এই কাজটা করতে চাই, যে আয়-ব্যয়টা স্বচ্ছতা যেন থাকে।
আম আদমির কথা ভাই বলেছেন, আমরা মূলত ক্রাউড ফান্ডিং টাকেই প্রধানত মডেল হিসেবে ভাবছি এবং প্রবাসীদের কাছ থেকে টাকা মানে যারা একেবারেই টাকা পাঠালে আপনি দেখবেন, যে টাকাটা কোন চ্যানেলে ঢুকলো এবং কোন খাতে খরচ হচ্ছে। এই একটা মডেল আমরা ডেভেলপ করার চেষ্টা করছি। এভাবে আমরা এখন পর্যন্ত চলছি। এর বাইরে এখনো পর্যন্ত আমাদের খুব বড় কোন মানে অনেক কোটি কোটি টাকার দরকার পড়ে নাই। হয়তো সামনে পড়বে, তখন সেটা নেয়ার কথা আমাদেরকে ভাবতে হবে। আমার কাছে একটা মডেল আছে যেমন, মুসলিম লীগের ক্ষেত্রে হাসিম সাহেব একটা কাজ করেছিলেন, উনি ওই আমলে ১০ লক্ষ টাকা, ১০ লক্ষ মেম্বার উনি জোগাড় করেছেন, যারা নিয়মিত টাকা দিত, চার আনা হলেও দিত আর কি।”
মো. মহিউদ্দিন