
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম ‘ফেব্রুয়ারি গণহত্যা, ২০১৩’ শিরোনামের একটি ফেসবুক পোস্ট করেছেন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে। সেখানে তিনি ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার দিনের স্মৃতিচারণ করেছেন।
সাদিক কায়েম লিখেছেন-
বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কিত দিন ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। কথিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নামে তৎকালীন এক রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মঞ্চে আন্তর্জাতিক আইন-কানুন ও ন্যায়বিচারের সমস্ত মানদণ্ডকে উপেক্ষা করে প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার।
এই অন্যায্য রায় ঘোষণার পরই প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে গোটা দেশ। গায়ে সাদা কাফনের কাপড় জড়িয়ে রাজপথে নেমে আসে ছাত্র-জনতা, শ্রমিক, পেশাজীবী, সাধারণ জনগণ— হাতে হাত রেখে উচ্চকণ্ঠে প্রতিবাদ জানায় স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। বুক চিতিয়ে দেয় শাহাদাতকে আলিঙ্গন করার জন্য। তাদের বুক-পিঠে লেখা ছিল, ‘সাঈদীকে নয়, আমাকে মার!’
কিন্তু গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগ সরকার বরাবরের মতোই জনতার ন্যায়সঙ্গত ক্ষোভ ও প্রতিবাদ দমন করতে গণহত্যার পথ বেছে নেয়।
একের পর এক শহর, গ্রাম, মফস্বলে নামিয়ে দেয় রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র বাহিনী ও তাদের দলীয় সন্ত্রাসীদের। পাখির মতো গুলি করে প্রায় শত শত ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে তারা।
এই ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ প্রমাণ করে, বিচারের নামে প্রতিশোধ, দেশবাসীর কণ্ঠরোধ, আর সত্যের পক্ষে রাজপথের সৈনিকদের হত্যা করাই ছিলো মূল লক্ষ্য।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ দেশের বিবেকবান মানুষ এই বর্বর হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। আন্তর্জাতিক মহল, মানবাধিকার সংস্থাগুলোও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।
ইতিহাস সাক্ষী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা কোনো স্বর কখনো চিরতরে স্তব্ধ হয় না। ২৮ ফেব্রুয়ারি শুধুমাত্র একটি দিন নয়— এটি অন্যায়, জুলুম ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এক অবিস্মরণীয় প্রতিরোধের প্রতীক। এমন প্রতিবাদ-প্রতিরোধের সকল জমাটবদ্ধ আন্দোলনের চূড়ান্ত ফলাফল হল— জুলাই বিপ্লব।
সত্যের জন্য লড়াই কখনো বৃথা যায় না। ইতিহাস মানুষের সামনে সত্যকে তুলে ধরে, তা লুকিয়ে রাখা যায়না। আজ সবকিছু প্রকাশিত হচ্ছে, কিভাবে জোর করে সাক্ষ্য আদায় করে ইসলাম ও বাংলাদেশপন্থী নেতাদের হত্যা করা হয়েছিল। সবই আজ জাতির সামনে উন্মোচিত হচ্ছে।
অন্ধ, বধির ও মুক লোকেরা ছাড়া সকলেই সত্য উপলব্ধি করতে পারছে। আর, সত্যপন্থীদের বিজয় অবশ্যম্ভাবী।
এমটি