
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ এক টকশোতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে তার মতামত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, "যদি স্থানীয় প্রশাসন নির্বাচন করা যায়, তবে জাতীয় নির্বাচনকে ফ্রি এবং ফেয়ার করার জন্য এটি সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে।"
উপস্থাপকের প্রশ্ন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দিলে কি দেশের মধ্যে গৃহযুদ্ধের মত পরিস্থিতি তৈরি হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, "প্রথম কথা হলো, যারা নির্বাচন চাচ্ছে না, বড় বড় দল হিসেবে বিএনপির বক্তব্য যেটা বারবার আসছে, তার যুক্তিটা কি? তারা মনে করছে যে নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের প্রশাসন, পুলিশদের উপর যে কর্তৃত্ব তৈরি হওয়া দরকার, তা এখনো তৈরি হয়নি।"
তিনি আরও বলেন, "নিউজের হেডলাইনে বলা হয়েছে যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক নাজুক হয়ে গেছে। এই অবস্থায় নির্বাচন করতে গেলে সারাদেশে যে প্রস্তুতি দরকার ভোটারদের জন্য, তারিখ অনুযায়ী হাল নাগাদ করার জন্য নির্বাচন কমিশন বলছে, ‘আমাদের অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।’ তাহলে এই সময়ে কতগুলো নির্বাচন সম্ভব? দ্বিতীয়ত, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো নয়, অর্থনীতি স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে, তবে সেই অবস্থায় এই মুহূর্তে অতিরিক্ত খরচ নেয়া কি ঠিক হবে?"
তিনি আরও বলেন, "রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতা, সংঘাত এবং অন্তর্ঘাতী সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এগুলো রক্তপাতের দিকে চলে যেতে পারে, যেটা পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর মধ্যে আমরা দেখতে পাচ্ছি। আপাতত মুখে স্লাইটলি সংঘর্ষের দিকে যাচ্ছে, তবে স্থানীয় প্রশাসনের দিকে গেলে এটা পূর্ণমাত্রায় রাজনৈতিক সহিংসতার দিকে চলে যেতে পারে। তারা মনে করছে, দলের নেতাকর্মীদেরও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।"
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, "এই বাস্তবতায়, আমি কনভিন্স না যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে দেশে কোন ধরনের ক্ষতি হবে। যেখানে যুক্তি দেয়া হচ্ছে যে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত নয়, সেই যুক্তিগুলো জাতীয় নির্বাচনেও প্রযোজ্য। যেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্থানীয় প্রশাসন নির্বাচনের সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারবে না, সে জাতীয় নির্বাচনে কি পারবে?"
তিনি আরও বলেন, "যেই নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে পারবে না, সে জাতীয় নির্বাচনেও পারবে না। যে নির্বাচন কমিশন সারা দেশে একই দিনে নির্বাচন করতে পারে, সেই কমিশন কি জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে তেমন সক্ষম হবে?"
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, "বিএনপি যদি স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেয়, তবে তাদের আশঙ্কার কোন জায়গা আমি দেখি না। স্থানীয় প্রশাসন নির্বাচন যদি করা হয়, তবে সেখানে অধিকাংশ বিএনপির প্রার্থী জয়ী হবে। বিএনপি আসলে কেন নির্বাচনে অংশ নিতে চাইছে না, তা আমি বুঝতে পারছি না।"
ফুয়াদ বলেছেন, "বটম লাইন কি? দিন শেষে জিতবে কারা এখানে? অধিকাংশ স্থানীয় প্রশাসন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জিতবে। অতএব, সেইখানে বিএনপির আশঙ্কার কোন জায়গা তো আসলে আমি জেনুইনলি দেখতে পাচ্ছি না।তার যে পপুলার ভোট, বিএনপি কে চ্যালেঞ্জ করার মত কোন পলিটিক্যাল পার্টি তো নাই।"
তিনি আরও বলেন, "ফুয়াদ বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আরো মন্তব্য করে বলেন, ঠিক যে কারণে নাগরিক কমিটি, সরকার সম্পর্ক কিংস পার্টি, এই যে আলোচনাটা হচ্ছে, ধারণা করা হচ্ছে বিএনপি, পার্টিকুলারলি তার যেহেতু একটা ওয়ান ইলেভেন এর ট্রমা আছে, সে বোধ করছে যে আমি আবার একটা ওয়ান ইলেভেনের ট্র্যাপে পড়তে যাচ্ছি কিনা?
তিনি উল্লেখ করেন, "স্থানীয় সরকার নির্বাচন ফেইজ আউট করতে করতে, দেখা যাবে জাতীয় নির্বাচনটা আরো পিছিয়ে যাবে, হয়তো নেক্সট ইয়ার ডিসেম্বরে চলে যাবে।"
এই প্রেক্ষিতে ফুয়াদ বলেন, বিএনপির নির্বাচনী ট্রমাকে সম্মান করা উচিত এবং "অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি স্থানীয় প্রশাসন নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয়, সেখানে বিএনপিকে অনবোর্ড রেখে বিএনপিকে কনভিন্স করা উচিত।"
তিনি সতর্ক করে বলেন, "অন্যথায়, আমাদের গণতন্ত্রের যাত্রাটা কালেক্টিভলি আবার হোচট খাবে।"
সূত্র:https://tinyurl.com/59ba4tb8
আফরোজা