ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জামায়াতের দায়িত্ব এবং ভূমিকা বিতর্কিত: হারুন অর রশিদ

প্রকাশিত: ০৩:০০, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জামায়াতের দায়িত্ব এবং ভূমিকা বিতর্কিত: হারুন অর রশিদ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াত ইসলামী বরাবরই একটি বিতর্কিত দল হিসেবে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের ভূমিকা থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক মঞ্চে তাদের অবস্থান সবসময় আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।

জামায়াতে ইসলামী প্রথম থেকেই পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তারা পাকিস্তানের রাজনৈতিক কাঠামোর অংশ হয়ে যায় এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দলটির সদস্যরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিল এবং বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিল।

যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে, আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে। তবে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ পরবর্তী সময় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য পথ উন্মুক্ত করেন, যার ফলে জামায়াতে ইসলামী পুনরায় রাজনীতিতে ফিরে আসে।

বিএনপি-জামায়াত সম্পর্ক ও বাস্তবতা
গত ৪০ বছরে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক সম্পর্ক নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত ইসলামী জোটবদ্ধভাবে অংশ নিয়েছে।

তবে, জামায়াত ইসলামী যখন বিএনপি থেকে রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়েছে, তখন দেখা গেছে তারা নির্বাচনের মাঠে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জনগণের সমর্থন আদায়ে তারা ব্যর্থ হয়েছে। এর মূল কারণ হলো, বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ জামায়াতের অতীতের ভূমিকার কথা এখনো ভুলতে পারেনি।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির সংগ্রাম
বিএনপি সবসময় বিশ্বাস করে যে, গণতন্ত্রের প্রকৃত চর্চা নিশ্চিত করতে সব দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার স্বাধীনতা থাকা উচিত। ১৯৮৬ সালে বিএনপি যখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নামে, তখন আওয়ামী লীগ ও জামায়াত ইসলামী ভিন্ন অবস্থান নেয়।

১৯৯১ সালে বিএনপি যখন গণতান্ত্রিকভাবে সরকার গঠন করে, তখন জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক থাকলেও এটি কৌশলগতভাবে একটি নির্বাচনী ঐক্যের বেশি কিছু ছিল না। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারও জামায়াতের সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ে রাজনৈতিক সমঝোতায় গেছে এবং ক্ষমতায় ভাগাভাগি করেছে।

বর্তমান পরিস্থিতি ও বিএনপির অবস্থান
বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল, তারা জনগণের আস্থার জায়গা হারিয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে জামায়াত ক্রমাগত কোণঠাসা হয়ে পড়েছে, এবং বিএনপিও এই বাস্তবতা মেনে নিয়েছে। বিএনপি সবসময় জনগণের স্বার্থে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিল এবং থাকবে।

বিএনপির দৃষ্টিকোণ থেকে, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জনগণের ঐক্যই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দলমত নির্বিশেষে সকল শক্তিকে একত্র হয়ে বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের পতনের জন্য কাজ করতে হবে।

সূত্রঃ https://www.facebook.com/watch/?v=648209727683562&rdid=saukvgh2AqCd0LqG 

 

রাজু

×