
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘‘ আমরা লক্ষ্য করছি যে, সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির কথা-বার্তায় থেকে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, তারা এবং বিভিন্ন ব্যক্তির আলোচনা থেকেও ফুটে উঠছে যে, তারা(অন্তবর্তীকালীন সরকার) সম্ভবত তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা হলেও বিচ্যুত হচ্ছেন ক্ষেত্রে বিশেষে এবং বিভিন্ন ব্যক্তির বিভিন্ন স্ট্যাটেমেন্ট থেকে বিভিন্ন রকম কনফিউশন তৈরি হচ্ছে, মানুষ বিভিন্নভাবে কনফিউজড হচ্ছে।”
‘‘ খুব স্বাভাবিকভাবে রাজনীতিতে যখন কনফিউশন থাকবে তখন অস্থিরতা দেখা দেবে।আমাদের এই অস্থিরতার কারণে দেশের প্রত্যেকটি মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হবে। কারণ যখনই রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকবে… রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যদি আমরা এনসিউর করতে না পারি তাহলে আমরা যে যত সংস্কারই ঘোষণা করি না কেনো, যে যত নীতি গ্রহন করি না কেনো কোনটাই সাকসেসফুল হবে না।”
তারেক বলেন, ‘‘ দেশের রাজনীতি অস্থির হলে এটি অ্যাফেক্ট করবে অর্থনীতি এবং অর্থনীতি অ্যাফেক্ট করবে সব কিছুতে। এমনকি আপনারা যারা আইন পেশাতে আছেন আপনার পেশাকেও অ্যাফেক্ট করবে খুব স্বাভাবিকভাবে।”
‘‘একজন ক্ষুদ্র মুদির দোকানদার বলি, একজন রিকসা চালক বলি, একজন সিএনজি চালক বলি, একজন মাঝারি ব্যবসায়ী বলি যে কারো কথাই বলি না কেনো প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে অ্যাফেক্ট করবে এবং প্রতিটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে।”
‘সংসদ কার্যকরে বিলম্ব হলে অস্থিরতা বাড়বে’
তারেক রহমান বলেন, ‘‘ এই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত অন্তবর্তীকালীন সরকারসহ প্রতিটি মানুষ মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত অবশ্যই দেশকে আগামীদিনে যত দ্রুত সম্ভব একটি স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসা। আমরা যখন দেশকে স্থিতি অবস্থার মধ্যে নিয়ে আসব সারা পৃথিবীতে যেটি গ্রহনযোগ্য বিষয় যে রাজনৈতিক অস্থিরতা বলুন বা রাজনৈতিক আলোচনা বলুন, রাজনৈতিক তর্ক-বির্তক বলুন সেটিকে সংসদের মধ্যে নিয়ে আসা। সংসদই হচ্ছে সবচেয়ে মূল জায়গা যেখানে আলোচনা সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেনো সেটি সংসদের ভেতরে হয়ে থাকে।”
‘‘ আমরা একটি সংসদকে কার্য্কর করতে দেরি করব এই অস্থিরতা, এই তর্ক-বিতর্ক সবকিছু সংসদের বাইরে চারিদিকে ছড়াতে থাকবে এবং সংসদের বাইরে যত বেশি এটি ছড়াবে তত সব জায়গায় বিভিন্নভাবে অর্থনীতি থেকে শুরু করে, সামাজিক অবস্থা থেকে শুরু করে সকল জায়গায় অস্থিরতা দেখা দেবে যা সামগ্রিকভাবে দেশকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।”
রোববার বিকালে ঢাকা বার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগ ঢাকা বার সমিতির ভবনের মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষনের এই কর্মশালা হয়।
আইনজীবীদের সমাজের দর্পন হিসেবে আখ্যা দিয়ে তারেক রহমান ‘দেশে স্থিতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে আইনজীবীদের ভূমিকা’ চান তারেক।
তিনি বলের, ‘‘ আমরা যত দ্রুত দেশে একটি স্থিতি অবস্থা এটি আগে করব, নাকি ওটি আগে করব, ওটি আগে করব নাকি ওটি আগে করব… এই তর্ক-বিতর্ক যদি চলতে থাকে তাহলে সামগ্রিকভাবে জাতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে আরও বেশি… দেশ তো ক্ষতিগ্রস্থ হবেই এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেবে।”
‘‘ সেজন্য আমরা বিএনপির অবস্থান থেকে মনে করি, রাজনৈতিক দল হিসেবে, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মনে করি দেশে যত দ্রুত সম্ভব একটি স্থিতি অবস্থা আনা সম্ভব হবে তত দ্রুত দেশকে ধবংসের কিনারা থেকে ধীরে ধীরে বের করে, সরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব।”
তারেক বলেন, ‘‘ অনেকে বলেন থাকেন, কোনো কোনো ব্যক্তি বলে থাকেন নির্বাচন হলে কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নির্বাচন হলেই কি সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে সে কথাটি এ্ভাবে না বলে আমরা চিন্তা করতে পারি নির্বাচন হলে দেশে একটি স্থিতি অবস্থা আসবে এবং ধীরে ধীরে রিফর্ম কাজগুলো শুরু হবে, সমস্যাগুলোর তীব্রতা ধীরে ধীরে কমা শুরু করবে।”
‘‘ নির্বাচন হলে সমস্যাগুলোর সমাধান কিভাবে করা যায় এটি দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন বিভিন্ন মানুষ, যখন দায়িত্ব হবেন স্বাভাবিকভাবে তারা বসবেন, আলোচনা করবেন তারা কাজ করবেন। একদিনে কোনো কিছুই হবে না। কিন্তু সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা শুরু হবে।”
তারেক বিভিন্ন ব্যক্তি এবং গণমাধ্যমে বিভিন্ন জনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘ প্রত্যেক জায়গায় দেখছি, একটি অস্থিরতা বিরাজ করছে। এই অস্থিরতা বিরাজ করার হয়ত মূল কারণ হতে পারে যে, স্বাভাবিক এই মুহুর্তে অন্তবর্তীকালীন সরকার আছে… এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের আমরা মনে করি সেটি অর্থা দেশের মানুষ যে সিদ্ধান্ত নিতে চায় সেই সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষন করা্ এবং দেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করা.. রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে তাদেরকে সহযোগিতা করার ব্যবস্থা করা…এটি হওয়া উচিত তাদের(অন্তবর্তীকালীন সরকার) মূল লক্ষ্য।”
‘‘ যারা সংস্কারের কথা বলছেন ও্ইসব সংস্কারের বাস্তবায়নে সংসদের প্রয়োজন হবে।”
একই সঙ্গে দুই বছরের অধিক সময় আগে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো নিয়ে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা প্রনয়ন হওয়ার বিষয়টি আইনজীবীদের সামনে তুলে ধরে এই ৩১ দফার বুকলেট জনগনের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার শাখার আহ্বায়ক অ্যাডভোভেট খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান, বিএনপি মিডিয়া সেলের মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ঢাকা বারের অ্যাডভেকেট খোরশেদ মিয়া, অ্যাডভোকেট সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
সাজিদ