ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১

যদি ফ্যাসিজমের উত্থান হয় একুশের চেতনাই তা রুখবে: রিজভী 

স্টাফ রিপোর্টার:

প্রকাশিত: ১১:১৪, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

যদি ফ্যাসিজমের উত্থান হয় একুশের চেতনাই তা রুখবে: রিজভী 

ছবি: জনকন্ঠ

‘আবার যদি দেশে ফ্যাসিজমের উত্থানে হয় একুশের চেতনাই তা রুখবে’ বলে দৃঢ় প্রত্যায় ব্যক্ত করেছেন রুহুল কবির রিজভী।শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয়শহীদ মিনারের বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পনের পর সাংবাদিকদের কাছে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিব এই প্রত্যায় ব্যক্ত করেন।তিনি বলেন, ‘‘ একুশে ফেব্রুয়ারিরচেতনা অম্লান চেতনা, এই চেতনা কোনদিন ম্লান হবে না। যদি আবারো কোনো ফ্যাসিজমের উত্থানঘটে, কোনো ধরনের ডিক্টেটরের উত্থান ঘটে একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের দামাল ছেলেদের, এদেশেরজনগনকে আবারো রাজপথে লড়াইয়ে নামতে উদ্ধুদ্ধ করবেন।’’‘

‘ আমরা মনে করি যে, ৫২‘একুশে ফেব্রুয়ারি যুগ যুগ ধরে আমাদের কা্ছে এমন একটি চেতনা এমন একটি বৈপ্লবিক আদর্শযা আমাদেরকে উদ্ধুদ্ধ করে যেটাকে কখনোই ধবংস করা যায় না, যেটিকে কখনোই ম্লান করা যায়না। একুশে ফেব্রুয়ারি যুগ যুগ ধরে অনাধিকাল ধরে যতদিন পৃথিবী মানুষ এবং আমাদের সমাজ-সংসারথাকবে ততদিন একুশ আমাদেরকে সাহস যোগাবে এবং লড়াই করতে উদ্ধুব্ধ করবে।”রিজভী বলেন, ‘‘ একুশ মানেঅধিকারের সংগ্রাম, একুশ মানে সাংস্কৃতিক সংগ্রামও। এটা ছিলো জাতীয় স্বাধীনতার প্রথমসোপান, এই ভাষা আন্দোলনের সোপান পেরিয়ে আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে গেছি স্বাধীনতার যুদ্ধেরদিকে… আমাদের মহা অর্জন আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি।”

‘‘ যখনই আমরা স্বৈরাচারেরকবলের মধ্যে পড়েছি, যখন দেশে গণতন্ত্রহারা মানুষ বন্দিশালার মধ্যে বাস করেছে তখন ৫২‘আমাদের উদ্ধুব্ধ করেছে, আমাদের প্রেরণা জাগরিত করেছে কিভাবে আমরা এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে,অত্যাচারির বিরুদ্ধে লড়াই করব। একুশের প্রেরণাতে আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি,অনেক নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে, ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে.. তাদের রক্তাক্ত পথপেরিয়ে চূড়ান্ত যে আন্দোলন ছাত্র-জনতা যে বিপ্লব তার মধ্য দিয়ে সেই ভয়ংকর উপীড়ক এবংরক্তপিপাসু স্বৈরাচার, ভয়ংকর দুর্নীতিবাজ সরকার তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

এর আগে ভোর সাড়ে ছয়টায়নিউ মার্কেটের কাছে বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিশালপ্রভাব ফেরি আজীমপুর কবরাস্থানে যায় রিজভীর নেতৃত্বে। সেখানে ভাষা শহীদের কবরে পুস্পমাল্যঅর্পন এবং ফাতেহা পাঠ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসে বিএনপির প্রভাত ফেরি। নেতা-কর্মীরাকালো ব্যাজ ধারণ করে।রিজভীর নেতৃত্বে শহীদ মিনারেরবেদীতে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে পুস্পস্তবক অর্পন করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এদের মধ্যেছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম,যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিনআলম, মীর সরাফত আলী সপু, আমিনুল হক,  ইশরাক হোসেন, মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়নসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ‘এই সরকারের দায়িত্ব একটা নির্বাচন’তিনি বলেন, ‘‘ এখন একটিঅন্তবর্তীকালীন সরকার… এই সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে একটি অবাধ নির্বাচন করা এবং তার সাথেআরও কিছু আনুসাঙ্গিক কাজ আছে, বিভিন্ন সংস্কার আছে… যেটা প্রয়োজনীয় সংস্কার যেটা যেসময় আছে সেই সময় করা সম্ভব।”‘‘ কিন্তু জনগনকে আশ্বস্তকরতে হবে.. যে দেশের জনগন এবং তরুণ প্রজন্ম আজকে যাদের ১৮ বছর বয়স, যাদের একুশ বছরবয়স তারা কেউ ভোট দিতে পারেনি… ভোট কি তারা জানে না। কারণ ১৭ বছর ভোট হয়েছে আপনার চতুস্পদজন্তু দিয়ে ভোট কেন্দ্রে…দিনের ভোট রাত্রে করেছে। গণতন্ত্রকে ধবংস করার জন্য নির্বাচনকমিশন ধবংস করেছে, ভোট ধবংস করেছে। এগুলো থেকে উত্তরণে ঘটিয়ে জনগনের মধ্যে আস্থা তৈরিকরার জন্যই একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন, সবার কাছে গ্রহনযোগ্য নির্বাচন …এটা নিশ্চিতকরতে হবে। এটা সরকারের দায়িত্ব।”‘সংসদ নির্বাচনই আগে দরকার’রিজভী বলেন, ‘‘আগে স্থানীয়সরকার না পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন… এই বির্তকে আমার মনে হয়, অন্তর্বতীকালীন সরকারেরঅংশ গ্রহন করা উচিত নয়। বরং এই সরকারকে প্রথমেই জনগনের ক্ষমতা জনগনকে ফিরিয়ে দিতে হবে।”‘‘ জনগন তাদের নিরপেক্ষভোটের মাধ্যমে যে সরকার গঠন করবে তারাই নির্ধারণ করবে যে,স্থানীয় সরকার নির্বাচন নাঅন্যান্য নির্বাচন কখন হবে। আপনারা দেখেছেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন চট্টগ্রামসিটি নির্বাচনে মহিউদ্দিন চৌধুরী জিতেছে, সিলেট সিটি নির্বাচনে বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানজিতেছে, ঢাকা সিটি করপোরেশনে মোহাম্মদ হানিফ জিতেছে

বিএনপির সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচননিশ্চিত করায় বিরোধীরা জিতেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সেটা হয়নি।”‘খালেদা-তারেক নিয়ে ফেসবুকে দেয়া তথ্য সঠিক নয়’রিজভী বলেন, ‘‘ আমাদেরকিছু কিছু নেতা বা কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখছেন যে, আগামী নির্বাচনেবিএনপি ক্ষমতায় আসলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতিহবে এটা তার ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে।”‘‘ কিন্তু এটা আমাদের দলবিএনপির অবস্থান নয়। এই কথাটা আপনাদের সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলাম।

রহিম/জাফরান

×