
ছবি : সংগৃহীত
প্রত্যেকটা এলাকায় আবারো চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী সামান্তা শারমিন বলেন, কাঠামোগত যে পরিবর্তন প্রয়োজন, সেটার জন্য আমরা বলেছি ফ্যাসিবাদী কাঠামোর বিলোপটা হতে হবে। কারণ এখানে একটা ফ্যাসিস্টকে আমরা শুধু দূর করতে পেরেছি, কিন্তু তার যে কাঠামো, সেই কাঠামোটা এখনো রয়ে গেছে এবং এই কাঠামো দিয়ে, সামনের দিনে আবার আমাদেরকে শোষণ এবং নিপীড়ন করা হবে। সেই প্রক্রিয়া আপনারা চলমান দেখছেন।
প্রত্যেকটা এলাকায় এলাকায় আবারো চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। প্রত্যেকটা এলাকায় এলাকায় আবারো সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব শুরু হয়েছে। গতকাল কুয়েটে কি হয়েছে আপনারা সবাই জানেন। অভ্যুত্থানের ছয়টা মাস পার হয়নি। আমাদের মায়েদের কান্না, শহীদের মায়েদের কান্না এখনো শুকায়নি।
কালকেও ভিআইবিতে একটা প্রোগ্রামে আমাদের শহীদের একজন মা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। এই কান্নাকাটির মধ্যে এবং এই আহত অবস্থার মধ্যে আমাদের পুরো জাতিগত যে আহত অবস্থা, এর মধ্যেও আমরা দেখছি কিছু মানুষ, কিছু দল, তাদের যে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় এখনো সজাগ। তারা তাদের যে ১৫ বছরের ক্ষুধা মিটানোর জন্য মাঠে উঠে পড়ে লেগেছেন। এবং এই যে ঘাট, প্রত্যেকটা ঘাটে তারা চাঁদাবাজি করছেন। মানুষের ভাতার কার্ড নিয়ে তারা চাঁদাবাজি করছেন।
তিনি আরো বলেন, মানুষের রেশন নিয়ে তারা ছিনিমিনি খেলছেন এবং এরকম না জানা অসংখ্য জায়গায়, তারা তাদের দখল বসিয়ে রেখেছেন। আমাদের এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। আজীবনের জন্য বন্ধ করতে হবে। আমাদের দেশে যে ২০০০ মানুষ জীবন দিয়েছেন, এই প্রক্রিয়া যদি চালু থাকে তাহলে এই ২০০০ মানুষের জীবন মৃত। এই ২০০০ মানুষকে আমরা কি করে জবাব দিব, আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এই ঐক্যবদ্ধতার একটা রূপ আমরা দেখেছি অভ্যুত্থানের সময়। অভ্যুত্থানের সময় আমাদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। আমাদের কোন ধর্মীয় পরিচয় ছিল না। আমাদের কোন লিঙ্গীয় পরিচয় ছিল না। সেই সাথে ছিল না আমরা কে কোন মতে বিশ্বাস করি। সেটাও আমাদের কোন প্রায়োরিটি ছিল না।
কিন্তু আজকে অভ্যুত্থানে ছয় মাস পরেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, এখানে রাজনৈতিক দলের পরিচয় মুখ্য হয়ে উঠছে। এখানে কার লিঙ্গীয় পরিচয় সেটা মুখ্য হয়ে উঠছে। কার নাম কি, কার ধর্ম কি, কার বর্ণ কি, এগুলো মুখ্য হয়ে উঠছে।
আমি পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, আমাদেরকে বিভাজিত করার এই চক্রান্ত আমরা রুখে দেব। আপনারা কেউ কখনো বিভাজিত হবেন না। বাংলাদেশের প্রশ্নে খুবই ক্লিয়ার, বাংলাদেশের প্রশ্ন তাই যেখানে কাঠামোগত পরিবর্তনের কথা বলা হবে।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার ও পুনর্গঠনের লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। রোববার বিকালে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এক সমাবেশের মধ্যদিয়ে এ কমিটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। কমিটিতে ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নেতা নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীকে আহ্বায়ক ও ঢাকসুর সাবেক সমাজসেবাবিষয়ক সম্পদক আক্তার হোসেনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়াও নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী সামান্তা শারমিনকে মুখপাত্র হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=U0fFnmKdoVI
মো. মহিউদ্দিন