
ছবি : জনকণ্ঠ
কিংস পার্টি কথাটা একটা ভুল তথ্য। যে সমস্ত দল সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবীতে, আপনি যদি রাজনৈতিক ইতিহাস চর্চা করেন, সবজায়গায় সরকারের কোনো না কোনোভাবে, ডাইরেক্ট অথবা ইনডাইরেক্ট প্রভাব থাকে।
দেখুন, সেনাবাহিনী খুব ভালো কাজ করছে। একটি যুগান্তকারী দায়িত্ব পালন করছে। চীফ অব আর্মি স্টাফ, ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে দুইভাবে। বাংলাদেশে একটি রক্তগঙ্গা সে রোহিত করেছে। দুই নম্বর হচ্ছে, যখন জনগণের ভেতর থেকে স্লোগান ছিল, এই মুহূর্তে দরকার, সেনাবাহিনী সরকার। ক্ষমতা নেওয়ার সমস্ত সুযোগ তার ছিল, তিনি ক্ষমতা নেননি।
এখন, সেনাবাহিনীকে দিয়ে পুলিশের কাজ করানো যাবে না। ম্যাজিস্ট্রেটি পাওয়ার আছে, কিন্তু তারা পুলিশিং করতে পারবে না। কারণ তাদেরকে পুলিশিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না। তারা ইন এইড অব সিভিল পাওয়ার আছে, সো, পুলিশ কেন ইনক্টিভ, ওইখানে যেতে হবে। ইনক্টিভ এই কারণে, কারণ পুলিশিং ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে, যে পুলিশের ৮০ থেকে ৯০% এখনও স্বৈরাচারের দোসর, কাউকে সরানো হয় নাই। আজকে যে স্বৈরতান্ত্রিকতা সৃষ্টি করা হয়েছে, তার বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে, ২০১৪, ১৮ এবং ২৪ এ যারা ডিসি এবং এসপি ছিলো, সেই এসপি এবং ডিসি যারা এখন অনেক উচুঁ পদে গেছে।
প্রশ্নকর্তা জানতে চান, আমরা কিন্তু এর আগেও দেখেছি, ১/১১ এর সময়, যেটি ২০০৬ থেকে ২০০৮ পযর্ন্ত তখনও সেনাবাহিনী ছিল, তখন পরিস্থিতিটা বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিটা অনেকটাই উন্নতি ছিল, আমরা সে সময় দেখেছি।
জবাবে ব্যারিস্টার এম সরোয়ার বলেন, তখন মইন উদ্দিন আহমেদ এটাকে এক ধরনের ছদ্মবেশী সেনাশাসন ছিল। এবার সেটা নয়। এবারের আর্মি ডেপ্লোয়েডটা কম্পিলিটলি ইন এইড অব সিভিল পাওয়ার।
আমি যতটুকু বুঝি, এই বাংলাদেশ, বর্তমান সেনাপ্রধান, তার ক্ষমতা নেওয়ার কোনো আকাঙ্ক্ষা নাই। তিনি ইউনূস সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাবেন। অতএব, এ রোলটা ডিফারেন্ট।
প্রশ্নকর্তা জানতে চান, মানুষ তো এতকিছু দেখতে চায় না। মানুষ দেখতে চায় যে, তার দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে কিনা, সে নিরাপত্তায় আছে কিনা, কে সরকারে থাকলো এসব তো দেখার বিষয় না।
জবাবে তিনি বলেন, এখন যে ডেবিল হান্ট শুরু হয়েছে, সেখানে তো হাজার হাজার সন্ত্রাসী ধরা পড়ছে, এটা তো আর্মি সহযোগিতা করছে। বাট ম্যাজিস্ট্রেটি পাওয়ারের একটা ডিমান্ড থাকে, আমরা একটা ম্যাজিস্ট্রেটি পাওয়ার এক্সাসাইজ করতে দেখিনি, কারণ দে আর নট মেড ফর দেট। দে আর নট ট্রেনড ফর দেট। এখানে সিআরপিসির ব্যাপার থাকে, সিপিসির ব্যাপার থাকে, এখানে অনেক প্রসিডিউরের ব্যাপার থাকে।
প্রশ্নকর্তা আরো জানতে চান, আমরা নিশ্চয়ই জানি যে, প্রায়ই ৪০০টি থানা লুট হয়েছে, সেখানে অস্ত্রও ছিল। সে অস্ত্রগুলো এখনও উদ্ধার হয়নি। সেই ডেভিল হান্ট করে আসলে কতটুকু লাভ হলো?
জবাবে ব্যারিস্টার এম সরোয়ার বলেন, সেটাই, অনেক অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এই ডেভিল হান্ট তো শুরু করা হয়েছে ১ মাসের ভেতরে, অনেক দেরি হয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীরা রেজিটেন্স গ্রো করেছে। বুঝছেন, অ্যান্টিবায়োটিকের মতো। প্রথমে যে একটু ভর্য়াত পরিবেশ সুষ্টি হয়েছিলো, কি জানি কি হয়, না না হয়। কিন্তু দেখলো যে, একটা গান্ধী টাইপ সরকার পরিচালিত হচ্ছে। অতএব, এখানে ওই যে, ইন্টারন্যাশনাল টেরোরিজম থিওরিতে, অল ওর্য়াপস অর্থাৎ সমস্ত সন্ত্রাসীরা এখন বের হয়ে গেছে। যার জন্য, সন্ত্রাসীরা তো সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাবেই এবং ভারতের নামে একটা দেশ আছে, যারা সমস্তরকম মাফিয়াদের বড় অংশ জায়গা দিচ্ছে।
এবার প্রশ্নকর্তা জানতে চান, আমরা দেখছিলাম কয়েকদিন থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে যারা নিয়ন্ত্রণ করছেন, মাঠে আছেন, সবপক্ষেই দাবি করছেন যে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। নাগরিক হিসেবে আপনি সন্তুষ্ট কিনা?
জবাবে তিনি বলেন, তেমন উন্নতি হয়নি। এই স্টেটমেন্টকে আসলে ডিফার করার সুযোগ রয়েছে। ঘুষ একটুও কমেনি। মন্জুর ভাই যেটা বলছিলো, যারা ঘুষ নেন, তাদের বের করেন দেন। আপনি একটি প্রোক্লেমেশন দিয়ে শর্ট ট্রায়াল করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তার বিচার করেন, দেখান দুইটা বিচার কইরা। ভয়টা আসবে কয় থেকে! ভয় তো আসে না। চায়নাতে দুধের সাথে মেলামাইন মিক্স করেছিলো, তিনমাসের ভেতরে বিচার করে থাকে ফাঁসি দিয়েছিলো। তো যখন এই জঙ্গল সিচুয়েশন, এটা তো একধরনের স্ট্রিম রুলিং দরকার হয়, লিমিটেড পিরিয়ডে। সেটা তো কোনো কিছুই হচ্ছে না। যার জন্য হয় কি, সন্ত্রাসীদের ভেতরে ভয়ের কোনো আবহ সৃষ্টি হয়নাই।
যে নতুন রাজনৈতিক সর্ম্পকে বলা হলো না, দুইটা জিনিস বলি। একজিস্টিং দল আছে ৪৪ টা, আরো ১০/১২টা নতুন দল আসছে, কারণ কি জানেন? একজিস্টিং যে বড় দলগুলো আছে, তারা জনআকাঙ্ক্ষাকে পরিপূর্ণভাবে ধারণ করতে পারে না বলে, এই নতুন দলের উদ্যোগ আসছে।
কিংস পার্টি কথাটা একটা ভুল তথ্য। পৃথিবীতে যে সমস্ত দল সৃষ্টি হয়েছে, আপনি যদি রাজনৈতিক ইতিহাস চর্চা করেন, সবজায়গায় সরকারের কোনো না কোনোভাবে, ডাইরেক্ট অথবা ইনডাইরেক্ট প্রভাব থাকে।
থার্ড ওয়াল্ড কান্ট্রি, কান্ট্রি লাইক বাংলাদেশ, যেখানে সরকারের প্রশ্রয় ছাড়া কোনো দল করা সম্ভব নয়, সেখানে কিংস পার্টি বলেন, আর যাই বলেন, এটা অনিবার্য আউটকাম। কারণ আপনি, বিরোধীদলকে আপনাকে রাজনীতি করতেই দিবে না। একদিকে হইলো, যারা রাজনৈতিক বড় দল করছে, তারা মানুষকে ধারণ করতে পারছে না। মানুষের একটা অংশ মনে করে, এখনো রাজনৈতিক নতুন উদ্যোগ দরকার।
তথ্যসূত্র:https://web.facebook.com/watch/v=652087673916999&rdid=GMXKSukvkr0uLlpP
মো. মহিউদ্দিন