ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১

ছাত্রদলকর্মীর ভাইরাল স্ট্যাটাস নিয়ে যা বললেন ফাহাম আব্দুস সালাম!

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ছাত্রদলকর্মীর ভাইরাল স্ট্যাটাস নিয়ে যা বললেন ফাহাম আব্দুস সালাম!

ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল ছাত্রদল কর্মীর সেই স্ট্যাটাস নিয়ে এবার ফেসবুকে নিজের মতামত ব্যক্ত করলেন বিশিষ্ট লেখক, রাজনীতিবীদ ও জনপ্রিয় ইউটিউবার ফাহাম আব্দুস সালাম।

আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে স্ট্যাটাসটি শেয়ার করেন।

পাঠকদের জন্য সেই লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

“ছাত্রদলের একটি ছেলের স্টেটাস দেখলাম "শিবির কোবানো জায়েজ ছিলো, আছে, থাকবে। ইনশাল্লাহ।" সে "কোপানো" লিখছে না কারণ জানে যে "কোপানো" লিখলে ফেইসবুক, স্টেটাস খেয়ে ফেলবে। কিন্তু "জায়েজ" লিখতে তার কোনো আপত্তি নাই। নট ওনলি ছেলেটা একটা ভায়োলেন্ট অপরাধ করার আহবান জানাচ্ছে - সে এই ঘৃণ্য অপরাধকে ইসলাম দিয়ে জাস্টিফাই করার একটা চেষ্টাও করছে। সত্য যে ছেলেটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মী না এবং তার আহবানে কেউ সাড়াও দেবে না। কিন্তু এই মানসিকতা আমাকে হতভম্ভ করে। আপনারা কি গত ১৫ বছর দেখেন নাই এই দেশে কী হয়েছিলো ? আপনাদের মধ্যে কি বিন্দুমাত্র কৃতজ্ঞতাবোধ নাই যে খোদাতালা কোন জাহেলিয়া থেকে আমাদের মুক্তি দিয়েছেন? সেই জাহেলিয়াতেই আপনারা ফিরে যেতে চান?
 
আপনারা কি উন্মাদ হয়ে গেছেন?
 
এটা ইমম্যাটেরিয়াল যে খুঁজে বের করা - দোষ কার? এই ধরনের বাংলাদেশী মারপিটে কখনোই এক পক্ষ দায়ী হয় না। তর্কের খাতিরে স্বীকার করে নিচ্ছি যে কুয়েটে শিবির/বৈষম্যবিরোধীরা ছাত্রদলকে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড করতে দেয় নাই। শুরুতে নিঃসন্দেহে তাদের দোষ ছিল। তাই বলে কি আপনারা সশস্ত্র হয়ে মারপিট করবেন? এই ভয়ের সংস্কৃতি তৈরী করেছিলো আওয়ামী লীগ। আপনারা কি এই দেশের মানুষকে, আপনার প্রিয় প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সেই জাহেলিয়ায় ফিরে নিয়ে যেতে চান?
 
আল্লাহর ওয়াস্তে আপনাদের এই মানসিক বিকারের চিকিৎসা করুন। ভায়োলেন্স কোনো সমস্যার সমাধান না। সিভিলাইজড মানুষ কথা বলে, গুডউইল দিয়ে নিজেদের সমস্যা সমাধান করে। আপনারাও সেটা শিখুন। এটা পড়াশোনার চাইতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, রাজনীতির চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ। কেন আপনাদের এতো রাগ যে মারপিট করে নিবৃত্ত হতে হয় - কখনো ভেবেছেন? এই মানসিক বিকার আপনাদের জীবনের প্রতিটা পর্বকে ধ্বংস করবে। মারপিট করে হেডাম দেখানো অসভ্য মানুষের কাজ। কথা বলে, কনফ্লিক্টের মধ্যে সভ্যভাবে বসবাস করার হেডাম আমরা দেখতে চাই।
 
গত ১৫ বছর ছাত্রদল ও বিএনপির হাজার হাজার কর্মী মানবেতর জীবন যাপন করেছে, অকল্পনীয় অত্যাচারের ভেতর দিয়ে গেছে। কবর গিয়েছিলো বেড়ে আর ঘর গিয়েছিলো কমে। আপনাদের জাহিল আচরণ এই দলের নেতাকর্মীদের সব আত্মত্যাগকে মাটি বানিয়ে ফেলে। আপনাদের অসংখ্য বড় ভাই, বাপ-চাচা গত ১৫ বছর জীবনের একটা বড় সময় ব্যয় করেছে আওয়ামী জাহেলিয়া ফাইট করতে। কারো গিয়েছে সংসার, কারো ঘর, কারো যৌবন আর কারো জীবন। তাদের মধ্যে শুধু বিএনপি ছিলো না। হেফাজত, দেশের সাধারণ মানুষ, বাম, জামায়াত - বহু মানুষ জীবনের একটা লম্বা সময় এই অত্যাচার সহ্য করেছে এবং ফাইট করেছে। বহু মানুষ অসময়ে চলে গেছে - আমাদের ছেড়ে। আপনাদের কি অন্তত কোনো রেস্পেক্টও নাই? সেই মাইরপিট-কোপাকুপিতেই আমরা ফেরত যাবো?
 
এই দখলদারিত্বের মানসিকতা থেকে আমরা উত্তরণ করতে চাই। কোনো সরকার, কোনো প্রধানমন্ত্রী আপনার এই অসুখ সারাতে পারবে না। আল্লাহর ওয়াস্তে বোঝার চেষ্টা করুন যে কোপাকুপি এবং মারপিট দিয়ে আপনার নিজের এবং আপনাদের দলের বিন্দুমাত্র লাভ হয় না।
 
এইসব weak men দের কাজ থেকে নিজেদের মুক্তি দেন।”

শিহাব

×