
ছবিঃ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ,সংগৃহীত
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের মূল লক্ষ গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা। দেশে যে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে নির্বাচন দিলে তা আর হবেনা। আমরা লড়াই করতে চাই লড়াই করে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। বাংলাদেশের আগামী দিনের কান্ডারী দেশনায়ক তারেক রহমান গনতান্ত্রিক সরকারের জন্য মানুষকে সংগঠিত করে যাচ্ছে। আমরা নির্বাচন দিয়ে আমাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে চাই যারা আমাদের কথা সংসদে বলবে পার্লামেন্টে বলবে।
তিনি সোমবার দুপুরে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ৪৮ ঘন্টার তিস্তা বাঁচাও অবস্থান কর্মসূচীর জনতার সমাবেশে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আপনি নিরপেক্ষ। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নিরপেক্ষ থাকলে হবে না, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে আপনার পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা আমাদের পায়ের উপর দাঁড়াতে চাই আমাদের ন্যায্য হিসাব আমরা বুঝে নিতে চাই। বন্ধুত্ব থাকবে তিস্তার ন্যায্য হিস্যার ক্ষেত্রে কোনো বন্ধুত্ব নেই। এ আন্দোলন মানুষের বেঁচে থাকার আন্দোলন। লড়াই ছাড়া কিছু পাওয়া যায় না আমরা লড়াই করে তিস্তা ন্যায্য হিস্যা বাস্তবায়ন করতে চাই। বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুূুদু, কেন্দ্রীয় ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্ততা জানান হায়দার, বিএনপির চেয়ারম্যান পার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সংগীত শিল্পী বেবী নাজনীন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
'জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ -স্লোগানে অবস্থান কর্মসূচি পালনে দলে নদী পাড়ে দলে দেশের ১২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা নদীর ১১টি পয়েন্টে এক যোগে টানা ৪৮ ঘন্টার ওই অবস্থান কর্মসূচিতে ৫ জেলার কয়েক লাখ মানুষ জমায়েত হয়েছেন।
সোমবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, তিস্তা রেলসেতু ও তিস্তা সড়ক সেতুর মধ্যস্থানে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচীতে নারী পুরুষ দলে দলে এসে অবস্থান নিচ্ছেন। ১১ টি পয়েন্টের তাবু গেড়ে ভেতরে মানুষ বিছানা পেতে অবস্থান নিয়েছে। সেখানে লক্ষাধিক মানুষের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশাল বিশাল প্যান্ডেল ও শতাধিক তাবু টানানো হয়েছে। দুপুর গড়িয়ে জনসমুদ্রে পরিনত হয় তিস্তা নদী পাড়।
অবস্থান কর্মসূচি সফল করতে নিলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার ১২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নদী পাড়ের গুরুত্বপূর্ণ ১১টি স্থানে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। শেষদিন ১৮ ফেব্রুয়ারি এসব মঞ্চে দিনভর থাকবে তিস্তা পাড়ের মানুষের সুখ দুঃখের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, ভাওয়াইয়া গানের আসর, ঘুড়ি উৎসবসহ নানান গ্রামীণ খেলাধুলা। রয়েছে স্থানীয়দের নিজেদের চাল ডাল সহায়তায় খিচুরিসহ প্রয়োজনীয় খাবার ব্যবস্থা। এভাবে টানা ৪৮ ঘণ্টা তিস্তা নদীর তীরেই অবস্থান করবেন রংপুরের ৫টি জেলার কয়েক লাখ মানুষ। ওই অবস্থান কর্মসূচি সফল করতে দীর্ঘ দিন ধরে করা হয়েছে প্রচারাভিযান।
তিস্তা রক্ষা আন্দোলনের প্রধান ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু বক্তব্যে বলেন, আমাদের এ আন্দোলন কোনো দল বা মতের নয়। এটি গোটা রংপুর অঞ্চলের মানুষের গণদাবি। যার মাধ্যমে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়সহ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে। আমরা চাই, তিস্তা মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে অবহেলিত এ অঞ্চলে স্যাটেলাইট ভিলেজ, অর্থনৈতিক অঞ্চল, পর্যটন কেন্দ্র, গড়ে উঠুক কৃষি ও শিল্প বিপ্লব। রংপুর অংঞ্চলের মানুষ দাবি আদায়ে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। যৌক্তিক দাবি পূরন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলতে থাকবে। প্রথম দফায় যে ৪৮ ঘণ্টা টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। দাবি বাস্তবায়ন না হলে পরে কঠোর থেকে কঠোরতম আন্দোলনের ঘোষনা করা হবে।
মাহফুজার /জাফরান