![আয়নাঘরের সেই চেয়ারের বর্ণনা দিলেন মুফতী আমির হামজা আয়নাঘরের সেই চেয়ারের বর্ণনা দিলেন মুফতী আমির হামজা](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/170316_bangladesh_pratidin_amirhamza-2024-2502150622.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
আয়নাঘর নিয়ে চলছে তোলপাড়। একের পর এক রোমহর্ষক কাহিনি বেরিয়ে আসছে, যেগুলি সবার হৃদয় কাঁপাচ্ছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের সময় বিরোধিতাকারীদের ধরিয়ে এনে ছোট্ট এক ঘরে আটকে রাখা হতো। এমনই এক লোমহর্ষক কাহিনীর বর্ণনা দিয়েছেন আলোচিত বক্তা মুফতি আমির হামজা।
তিনি এক ওয়াজ মাহফিলে তার সাথে ঘটে যাওয়া আয়নাঘরের বর্বর ঘটনার বর্ণনা দেন। আমির হামজা বলেন, "একটা চেয়ারের সাথে আমাকে বসিয়ে ফিতা দিয়ে হাত, পা এবং মাজার সাথে বেল্ট লাগিয়ে দেওয়া হতো। তারপর কারেন্টের সুইচ দিতো, মনে হতো মিনিটে কয়েক হাজার বার ঘুরে যেত। চোখে-মুখে অন্ধকার দেখতে থাকতাম। ওই ১০ দিন আমি মাটির নিচে রিমান্ডে ছিলাম, তখন বুঝতে পেরেছিলাম রিমান্ড কী।"
তিনি আরও বলেন, "তবে আমাকে সেভাবে কিছু করা হয়নি। যাদের করা হয়েছিল, তারা আমার পাশের রুমে ছিল। আমাকে শুধু তাদের কিছু জিনিস দেখানো হয়েছিল। শুনেছিলাম, তাদের হাতের নখ তুলে নেয়, কিন্তু যাদের নখ তুলেছে, তাদের রুমে গিয়ে দেখলাম তাদের হাতে কোনো নখ নেই, সব তুলে ফেলা হয়েছে। মাঝে মাঝে আমাকে রাতের বেলা নিয়ে আসতো, বলতো, 'এইগুলো দিয়ে আমরা নখ তুলি'। দেখেই আমার ভয় লাগতো, কিন্তু কিছুই করার ছিল না। যখন নখ তুলতো, তখন ভিতর থেকে চিৎকার শুনতাম, 'বাবারে, চিৎকার দিচ্ছে, কিন্তু কিছুই করার নেই।'"
তিনি বলেন, "এভাবে আমাকে চেয়ারের সাথে বসিয়ে রাখা হতো। একমাত্র কারেন্টের সুইচ দিয়ে অন্ধকার দেখানো হতো। সেই অন্ধকারে আমি কী দেখেছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।"
আমির হামজা আরও বলেন, "তাদের পক্ষ থেকে আমাকে ১১ বা ১২টি পয়েন্ট লিখে দেওয়া হয়েছিল, যেখানে আমাকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গিয়ে এসব বলার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। বলেছিল, 'এগুলো বললে, কালকেই তোমাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।' কিন্তু আমি জানতাম, এসব মিথ্যা কথা আমি বলবো না। আমাকে বলা হয়েছিল যে, 'অ্যাকিস গ্রুপের বিরুদ্ধে, জামাত ইসলামের বিরুদ্ধে, শিবিরের বিরুদ্ধে এসব কথা বলো।'"
"এমনকি ওই ঘরের ভেতরে নামাজ পড়ার সময়ও জানতাম না। যোহরের নামাজ, আসরের নামাজ, মাগরিবের নামাজ কিংবা এশার নামাজ কখন হয়েছে, তা জানতাম না। শুধু এশার নামাজ পড়েছিলাম। নামাজ পড়ার কথা বললে গালি দেওয়া হতো। তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি নামাজ পড়ত এবং আল্লাহর ভুল ধরে বলতো, 'এই কাজটা আল্লাহর ঠিক হয়নি।'"
তিনি বলেন, "তবে আমি এক কথা বুঝিয়েছি—জাহান্নামের ভয় দেখানো হলেও, আল্লাহর হুকুমে আমি জানি, আমার আসল জায়গা কোথায়।"
সূত্র:https://www.youtube.com/watch?v=koFOxxKRgQ0&ab_channel=TafsirMahfilMedia
নুসরাত