ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১

২৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবে কোটি টাকার লেনদেনের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ

প্রকাশিত: ২০:০১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

২৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবে কোটি টাকার লেনদেনের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ

ছবি: সংগৃহিত

দেশের ২৪ জন সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবে এক হাজার ২৬৮ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে এক হাজার ২৩৮ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে, আর বর্তমানে এসব হিসাবে ৩০ কোটি টাকা জমা রয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের ২৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক হাজার ৪২ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে দৈনিক কালবেলার সম্পাদক ও প্রকাশক সন্তোষ শর্মার অ্যাকাউন্টে, যেখানে ৫৮ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর তথ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে ২৮ জন সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়। সম্প্রতি বিএফআইইউ ২৪ সাংবাদিকের হিসাবের তথ্য সরবরাহ করেছে, যা দুদকের তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

শ্যামল দত্তের ২৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১,০৪২.৫২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১,০২১.৪০ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে, আর বর্তমানে ২১.১১ কোটি টাকা জমা রয়েছে। তিনি বর্তমানে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।

সন্তোষ শর্মার ৯টি অ্যাকাউন্টে ৫৮.৪৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যার মধ্যে ৫৭.৯৩ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং ৯০ লাখ টাকা বর্তমান স্থিতি।

এছাড়া সাংবাদিক আলমগীর হোসেন (সমকাল), অশোক চৌধুরী (বৈশাখী টেলিভিশন), সৈয়দ বোরহান কবীর (বাংলা ইনসাইডার), নঈম নিজাম (বাংলাদেশ প্রতিদিন), ফরিদা ইয়াসমিন (নঈম নিজামের স্ত্রী), জায়েদুল হাসান পিন্টু (ডিবিসি নিউজ), ফরাজী আজমল হোসেন (ইত্তেফাক), শ্যামল সরকার (ইত্তেফাক), মধুসূদন মণ্ডল (বাসস), জহিরুল ইসলাম মামুন (এটিএন বাংলা), শেখ মামুনুর রশীদ (যুগান্তর), রফিকুল ইসলাম রতন (স্বদেশ প্রতিদিন), শাবান মাহমুদ (বাংলাদেশ হাইকমিশন, দিল্লি) এবং মির্জা মেহেদী তমাল (বাংলাদেশ প্রতিদিন)-সহ আরও অনেকের ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, "এই লেনদেন অস্বাভাবিক এবং বৈধ আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। গত ১৫ বছরে সাংবাদিকতা পেশা ক্ষমতার স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছে, যার ফলে এটি পেশাগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।"

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আরও অনেক সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিছু তথ্য ইতোমধ্যে প্রকাশিত হলেও, আরও অনেকের তথ্য এখনও প্রকাশ পায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।

ইসরাত জাহান

আরো পড়ুন  

×