![আমরা কি বিদেশীদের আরেকটা কুরুক্ষেত্রে পরিণত হব! আমরা কি বিদেশীদের আরেকটা কুরুক্ষেত্রে পরিণত হব!](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/৪-1-2502071317.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
আমরা কি বিদেশীদের আরেকটা কুরুক্ষেত্রে পরিণত হব! বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে পল্টন কলেজ মাঠে শ্রমিক অধিকার পরিষদের কাউন্সিলে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ধানমন্ডি ৩২ এ যখন, ওইখানে বিক্ষুব্ধ জনতার সেখানে একটা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখেছি। আমরা যখন লক্ষ্য করছি, এটাকে কেন্দ্র করে আরো নৈরাজ্য তৈরি হতে পারে, আরো উস্কানি তৈরি হতে পারে, সেজন্য আমরা বলেছিলাম যে, দায়িত্বশীল নাগরিকের জায়গা থেকে প্রকাশ্যে ভায়োলেন্সকে আমি উৎসাহিত করতে পারি না। প্রকাশ্যে সংঘাতকে আমি সমর্থন করতে পারি না। সহিংসতাকে আমরা সমর্থন করতে পারি না। আজকে এক জায়গায় আগুন লাগবে, সেই আগুন অন্য জায়গায় এসে পড়বে না, সেই আগুনটা যে আমার ঘরেও আসতে পারে সেটা কি সংশয় নাই।
এই যে ধানমন্ডি ৩২ থেকে ঢাকার বাইরে আরো বিভিন্ন জায়গায় চলল এবং এইটা করতে গিয়ে আবার কিছু মানুষ যারা ধরেন, রাগে-ক্ষোভে এই ফ্যাসিবাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশে সেখানে গিয়েছিল, তারা অনেক আহত হয়েছে। দুই এক জায়গায় আবার দেখা যায়, মারামারি লেগে গেছে। তো আমরা ৫ই আগস্টের পূর্বে, যেভাবে সমগ্র জাতি ফ্যাসিবাদের পতনে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, ইস্পাতসম ঐক্য ছিল। ৫ই আগস্টের পরেও যদি এগুলো উড়িয়ে দেওয়া যেত, ধুলিস্বাদ করা যেত, তখন কেন করা হলো না!
তখন তো এগুলোকে প্রটেকশন দিয়েছে, কারা প্রটেকশন দিয়েছে আমরা জানিনা! টাকা নিয়ে, পয়সা নিয়ে প্রটেকশন দিয়েছে। তো এখন কেন ছয় মাস পরে হঠাৎ করে মনে পড়লো, মানে অর্ধেক ঘুমাইয়া মনে পড়ছে যে এখন বাথরুমে যাওয়া দরকার, এরকম অবস্থা।
এই অভ্যুত্থানের চেতনাকে বিক্রি করে কেউ দল করব, কেউ দখলবাজি করব, চাঁদাবাজি করব, ক্ষমতায় যাব, এইটা তো অভ্যুত্থানের আগে জনগণকে আমরা বলি নাই। ছয় মাসে কি সংস্কার হয়েছে? খালি টেলিভিশনের হেডলাইন হচ্ছে, পত্রপত্রিকায় লেখা হচ্ছে, শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে নাকি, ২৮ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। কারা কারা ২৮ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে নাম এসেছে আপনাদের সামনে? কারা কারা ব্যাংক থেকে, এই যে গত কয়েক বছরে ব্যাংক-শেয়ার বাজার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে, দেশের বাইরে নিয়ে গেছে, কয়জনের নাম এসেছে?
নুরুল হক বলেন, যেই বসুন্ধরার মত আপনার এই মাফিয়া, দুর্বিত্ত বাংলাদেশী, সবচেয়ে ভূমিদস্যু শিল্প কারখানা জনগণের রক্তচুষে আজকে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। মরার পরেও শেখ হাসিনার সাথে গিয়ে জান্নাতে থাকতে চেয়েছেন, তারা এখন ব্যবসা-বাণিজ্য করছে দেদারসে। তাদের মত মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অরিয়নের মত এবং আরো যারা এস আলম কিংবা আরো যে সমস্ত গ্রুপ নাবিল গ্রুপ, এই যারা হাজার হাজার কোটি টাকা আপনার ব্যাংক থেকে হাওয়ার মাধ্যমে উড়িয়ে নিল। কয়জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
হত্যার সাথে জড়িত আওয়ামী লীগের কতজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? সাবের হোসেন চৌধুরী কিভাবে জামিন পেল? আনোয়ার হোসেন মঞ্জুরা কিভাবে জেলে না গিয়ে বের হয়ে গেল? প্রশ্ন করেন?
উপদেষ্টাদেরও অনেকের পরিচিত, বিভিন্ন তদবিরে অনেকে ঠিকই শেখ হাসিনার আমলে মাফিয়াগিরি করেছে, দুর্বিত্তায়ন করেছে, তারা এখনো নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য, কার্যক্রম সবকিছু করছে। জনগণের চোখে ধুলা দেওয়া হচ্ছে। বিপ্লবের নামে জনগণকে উস্কানি দিয়ে আরেকটা দেশের নৈরাজ্য তৈরি করার একটা প্রয়াস নিয়ে তারপরে যেন থার্ড পার্টি ক্ষমতার টেকভার করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আবার যেন আমরা ভুক্তভোগী হই, সেই পরিস্থিতির দিকে আমাদেরকে ঠেলে দিচ্ছে। রাজনৈতিক কর্মীদের অবশ্যই সে যেই দলের হোন না কেন, বিএনপির হন, জামায়াতের হন, গণঅধিকার হন, বামপন্থীদের, ডানপন্থীদের, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছাড়া, অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়া উচিত না। মহাবুশকে দিয়ে উৎসাহিত করে একটা নৈরাজ্যের দিকে যদি ঠেলা হয়, সেটা দেশের জন্য, কারো জন্য ভালো হবে না। ছয় মাস কি করেছেন?
৫ই আগস্ট, ৪ই আগস্ট সরকার ছিল না। এই বিপ্লবী ছাত্র জনতার দখল ছিল। তখন কেন মাটির সাথে মিশিয়ে দিলেন না?
এখন এইখানে ঘটনা ঘটছে পাকিস্তান রিএক্ট করছে, ভারত রিএক্ট করছে। আমরা কি বিদেশীদের আরেকটা কুরুক্ষেত্রে পরিণত হব! নির্বাচিত সরকার ছাড়া বিদেশী বিনিয়োগ আসবে না। গার্মেন্টসের অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিতে, নতুন পরিবেশ খুলবে না ব্যবসা-বাণিজ্য।
মো. মহিউদ্দিন